ক্যানবেরাকে দেখে মনে হয়েছিল, উৎসবের নগরী। সৌজন্যে ক্রিকেট।
কিন্তু তারপরও হতাশা বাংলাদেশ দলের সঙ্গী। কারণ, বৃষ্টির যা ধরণ তাতে ম্যাচের আগের দিন মাঠে নেমে প্র্যাকটিস করতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ইনডোর আর জিমে সময় কাটাতে হতে পারে। ক্যানবেরা থেকে জয় নিয়ে হাওয়ায় ভাসতে ভাসতেই ব্রিসবেনে এসেছেন মাশরাফি-মুশফিক-সাকিব-তামিম-বিজয়রা। কিন্তু ব্রিসবেন নদীর পাড়ে নামতেই বৃষ্টি। ব্রিসবেন নদীর পাড়ে কুইন্সল্যান্ডের রাজধানী শহর এখন ‘বৃষ্টি নগরী’! বর্ষাকালের দারুণ আমেজ। আর তাতেই হাওয়া ক্রিকেটীয় আমেজ! তবে এই ম্যাচে যার প্রত্যাবর্তেনর কথা সেই অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক-র চিন্তাটা বাড়িয়ে দিচ্ছে বৃষ্টি। ইনজুরি কাটিয়ে বিশ্বকাপে ফেরার অপেক্ষায় ক্লার্ক। এবং সব কিছু ঠিক থাকলে এ ম্যাচেই তার ফেরার কথা। কিন্তু ফিরতে পাবেন কিনা সেটা তিনি, অস্ট্রেলিয়ান নির্বাচকরা কিংবা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কর্তারা, কেউ জানেন না! কারণ ম্যাচ যদি না হয়, ক্লার্ক ফিরবেন কিভাবে?
অথচ ক্লার্ক-কে ফেরানোর জন্য কতো চেষ্টাই না ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার। তিনি ফিরবেন। এবং ব্রিসবেন থেকে অস্ট্রেলিয়া দল নিয়ে যাবেন অকল্যান্ডে। যেখানে তাসমান সাগরের দুপারের প্রতিদ্বন্দী দুদেশ মুখোমুখি হবে। তার আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে দু’পয়েন্ট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাবে নিউজিল্যান্ড। এবং সেখানেই মুলত: অনেকটা ঠিক হয়ে যাবে কোন দলটা পুল‘এ’-তে শীর্ষে থেকে পরের রাউন্ডে যাবে। কোয়ার্টার ফাইনালটা নিজেদের মাঠে খেলতে দুটো দলই মুখিয়ে ঐ ম্যাচটা জেতার জন্য। অস্ট্রেলিয়াও অনেক ছকটক কষে বসে আছে। কিন্তু বৃষ্টি সব কিছু ওলট-পালট করে দিতে পারে। সেই শঙ্কা এখন অস্ট্রেলিয়া টিমের মধ্যে চোর¯্রােতের মতো বয়ে যাচ্ছে। কারণ, বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ যদি বৃষ্টিতে ভেসে যায়; তাহলে অস্ট্রেলিয়ার গ্রুপের শীর্ষে থাকার স্বপ্ন শেষ হয়ে যেতে পারে। অথচ সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া চাইচ্ছে দ্রুত ফিরুন ক্লার্ক। ক্লার্কের জন্য অস্ট্রেলিয়া দল সবগুলো ফ্লাইট রেখেছে ঠিক দিনের বেলায়। যাতে প্র্যাকটিসে কোন সমস্যা না হয়। আবার এই ম্যাচের পর অস্ট্রেলিয়া দলকে তিনটা ম্যাচ খেলতে উড়তে হবে এগার হাজার কিলোমিটার। ব্রিসবেন থেকে অকল্যান্ড ২হাজার ২শ ৯৮ কিলোমিটার উড়ে যেতে সময় লাগবে ৩ঘন্টা ৫ মিনিট। এরপর অকল্যান্ড থেকে পার্থ, দূরত্ব ৫হাজার ৩শ ৪০কিলোমিটার। লাগবে ৭ ঘন্টা ৩০ মিনিট। সেখান থেকে আবার সিডনি। আরো ৩ হাজার ২শ ৮০ কিলোমিটার। সময় লাগবে ৪ ঘন্টা ১৫ মিনিট। সব মিলিয়ে ক্লার্কের বিমানযাত্রা আগামী বার দিনে ১১ হাজার কিলোমিটারের। সফট টিস্যু ইনজুরিতে ভুগছেন যিনি, তারপক্ষে এরকম ধকল নেয়া সম্ভব হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়েছে, বিমান যাত্রায় সফট টিস্যু ইনজুরি খুব একটা সমস্যায় ফেলবে না ক্লার্ককে। তবে ক্লার্কের জন্য বড় সমস্যা হতে পারে, বাংলাদেশের বিপক্ষে যদি অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটা না হয়। অনেক পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ককে। সেই পরিকল্পনা কতোটা ফলপ্রসু হতে যাচ্ছে সেটা পরখ করে নিতে চায় টিম অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটা দিয়ে। কিন্তু ব্রিসবেনের আকাশ শুধু মুখ গোমড়া করে বসে নেই। রীতিমতো কাঁদছে! অবিরাম কান্না। সেই কান্না দেখে কতোটা অস্বস্তিতে বাংলাদেশ বোঝা যাচ্ছে না। এবং বলাও যাচ্ছে না। তবে একটা কথা বলতেই হচ্ছে; বৃষ্টি বড়ই অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে।
বাংলাদেশ সময় ১২৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৫
** বিবর্তের নাকি বিপ্লবের চিন্তা!
** পলিটিক্যাল হাব-এ ডেমোক্রেসি মিউজিয়াম
** ম্যাচের নায়করা ছিলেন বাইশ গজের বাইরে। । অঘোর মন্ডল, ক্যানবেরা থেকে