ঢাকা: ‘ক্রিকেট পাগল বাঙালি’ শব্দটির সঙ্গে বহু আগেই পরিচয় ঘটেছে বিশ্ববাসীর। ক্রিকেটের প্রতি বাঙালিদের ভালোবাসা কতটুকু তা আর কোনো কিছু দিয়ে প্রমাণ করার প্রয়োজন নেই।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের হাইভোল্টেজ মহারণে বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়াই করছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত। ধোনীর দল প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভার খেলে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশকে ৩০৩ রানের টার্গেট দিয়েছে। সেমিফাইনালের টিকেট পেতে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দেওয়া টার্গেট তাড়া করে মাঠের লড়াইয়ে টাইগাররা। তবে ব্যাটিং বিপর্যয়। ফলাফল শেষ পর্যন্ত যাই হোক; তবুও ক্রিকেট পাগল বাঙালি। আর বাংলাদেশের এ খেলা দেখার জন্য বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সকাল থেকেই কেবলই উত্তেজনা।
উত্তেজনার এ আবেগ থেকে বাদ যাননি কর্মব্যস্ত মানুষরাও। যে যেভাবে পারছেন খেলা দেখছেন। যারা বাসায় বসে অথবা কোনো চায়ের দোকানে, কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে টিভি সেটের সামনে বসে খেলা দেখছেন তারা তো আছেনই। কিন্তু যারা একান্তই কাজে-কর্মে জড়িত তাদের খেলা দেখার আগ্রহ, আবেগ যেন সব কিছুকেই ছাড়িয়ে গেছে।
যাদের টিভিতে খেলা দেখার সুযোগ হচ্ছে না তারা মোবাইলে রেডিওর মাধ্যমে খেলা শুনছেন। রিকশাচালক, বিভিন্ন বাসের কাউন্টারে বসে থাকা টিকিট বিক্রেতা, পথচারী থেকে শুরু করে যে যেখানে আছেন যেভবে সুযোগ পাচ্ছেন খেলা উপভোগ করছেন। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে অথবা বিভিন্ন টিভি ফ্রিজ বিক্রির দোকানের সামনে যেখানেই টিভিতে খেলা দেখাচ্ছে সেখানেই ভিড় করছেন খানিক সময়ের জন্য। কাজের মধ্যে একটু সময় করেই খেলার সবশেষ আপডেটটা দেখে নিচ্ছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেখা গেলো এমনই এক ব্যক্তিকে। তিনি বাসের কন্ডাক্টর। নাম তার ইব্রাহিম। বাসের যাত্রী নামানোর ফাঁকে বাসের টিকেট বিক্রেতার মোবাইলের রেডিওতে খেলার খবর শুনছেন।
আবার অনেক রিকশাচালককে দেখা গেলো কানে হেডফোন দিয়ে যাত্রী নিয়ে রিকশা চালাতে।
কথা হলো রিকশাচালক মোহাম্মদ মোমেন মিয়া সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পেটের তাগিদে রাস্তায় রিকশা নিয়া বাইর হইছি। কিন্তু বাংলাদেশের খেলাতো মিস করন যাইবো না। তাই কানে হেডফোন দিয়া মোবাইলের মাধ্যমে রেডিওতে খেলা শুনতাছি। আমরা যদি উৎসাহ না দেই তয় বাংলাদেশ জিতবো কেমনে কন!
এদিকে বাংলাদেশের খেলা যখন চলছে তখন রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট (গুলিস্তান, পল্টন, মতিঝিল, জাতীয় প্রেসক্লাব) যেখানে সচারচর প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায় সেই রাস্তাগুলোতে শুনশান নিরবতা লক্ষ্য করা গেছে। হাতে গোনো কয়েকটি গাড়ি ছাড়া তেমন কোনো গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৫