ঢাকা: অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল বাংলাদেশে খেলতে এলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। কিন্তু উত্তরে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানায়নি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা প্রতিনিধি দল।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকটি চলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এর সারমর্ম সাংবাদিকদের জানান উভয়পক্ষ।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব ড. মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক খান, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি, সহ সভাপতি মাহবুব আনাম, সিইও নাজিমুদ্দিন চৌধুরী সুজন, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়াসহ নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ছিলেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা প্রধান শন ক্যারল, বাংলাদেশে নিযুক্ত সে দেশের হাইকমিশনার এইচইমি গ্রেগ উইলককসহ মোট ৬ জন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল অবশ্য আশার কথা জানান। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, অস্ট্রেলিয়া টিম খেলতে আসবে। আমাদের প্রস্তুতি, নিরাপত্তা ও সার্বিক দিক তাদের জানিয়েছি। আশা করি, তারা সন্তুষ্ট। এসব দেখে তারা তাদের সিদ্ধান্ত বদলাবে।
এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিসিবি’র সভাপতি পাপন বলেন, এ বৈঠকটি ছিল জানার-বোঝার। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার বিষয়টি তাদের জানিয়েছি। তারা সেটি আলোচনা করবেন। সফরে আসবে কি-না সে সিদ্ধান্ত নেবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও সেদেশের সরকার।
পাপন বলেন, বিষয়টি কোনো ষড়যন্ত্র কি-না বলতে পারি না। তবে নিরাপত্তাজনিত যে অভিযোগ তারা করেছেন, সে সম্পর্কে কোনো সত্যতা আমরা পাইনি। আমাদের ক্রিকেটে ভীতিকর কিছু হতে পারে বলে কোনো তথ্য আমরা কোথাও থেকে পাইনি। তাদের (অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি) বারবার জিজ্ঞেস করা হয়েছে। কিন্তু তারা উত্তরে বলেছেন, এ তথ্য জানাতে পারবেন না।
এ বৈঠকে জানা তথ্যে দলটি সন্তুষ্ট কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে পাপন বলেন, তারা সন্তুষ্ট বললেই যে টিম আসবে- তা না। সন্তুষ্ট কি-না তারা সেটি বলেওনি আমাদের।
পাপন বলেন, এখানে ক্রিকেট খেলা কি হচ্ছে না? এখানে ক্রিকেট কখনোই অনিরাপদ নয়। আমরা সরকার ও এজেন্সি থেকে প্রস্তুতির কথা বলেছি। এছাড়াও আরও কিছু চাইলে অস্ট্রেলিয়া আমাদের বলুক, আমরা ব্যবস্থা করতে পারি কি-না দেখবো। কিন্তু সেসবও পরিস্কার করে তারা কিছু বলছে না।
‘এভাবে খেলার কাছাকাছি সময়ে এসে বিবৃতি দিয়ে আসার বিষয়ে আপত্তি জানানো সত্যিই খুব দুঃখজনক’- বলেন পাপন।
তিনি বলেন, আমাদের তারা বলেননি, তারা কী চান? নিরাপত্তায় আমরা তাদের কী কী দেবো? না বললে আমরা কীকরে বুঝবো?
নির্দিষ্ট কোনো ভেন্যু বা ম্যাচ নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি আছে কি-না সেসবও জানায়নি দলটি- জানান পাপন।
অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার এইচইমি গ্রেগ উইলকক বলেন, নিরাপত্তার ঘাটতি বিষয়ক প্রতিবেদনের কারণে আমরা এখানে এসেছি। এখানে নিরাপত্তার বিষয়ে যা যা দেখেছি, সেসব সম্পর্কে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবো। এরপর তারা তাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন।
রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টায় ঢাকা পৌঁছেন দুই সদস্যের নিরাপত্তা পরিদর্শক দল। এরপর শন ক্যারল অস্ট্রেলীয় হাইকমিশনে বিসিবি’র সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দীন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
সোমবার অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তার আশঙ্কা দেখিয়ে সফর আপাতত স্থগিত করে তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার জানান, অস্ট্রেলিয়া সরকারের একটি সংস্থা থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে ‘ভুল’ তথ্যটি জানানো হয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়া দল না আসায় সূচি অনুযায়ী দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজটি অনিশ্চয়তায় রয়েছে।
তবে বৈঠকের একাধিক সূত্র জানায়, আলোচনা চলছে ও চলবে। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার আসার সম্ভাবনাই দেখছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৫
এসএস/এসকেএস/এএসআর
** স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দল