ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ফাইনালে কুমিল্লার সঙ্গী বরিশাল

সাব্বির ঝড়ে উড়লো বরিশাল, উড়ে গেল রংপুর

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫
সাব্বির ঝড়ে উড়লো বরিশাল, উড়ে গেল রংপুর ছবি: শোয়েব মিথুন/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্স আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল বুলস। তিন বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয় বরিশাল বুলস।



সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শুরু হয় ফাইনালের মঞ্চে উঠার এ ম্যাচটি। আগেই ফাইনালে উঠেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ফলে, ১৫ ডিসেম্বর কুমিল্লার বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মাঠে নামবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল।

টস জিতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের হাইভোল্টেজ ম্যাচে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন রংপুর দলপতি সাকিব। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে রংপুর ১৬০ রান সংগ্রহ করেছে। রংপুরের হয়ে দারুণ ব্যাটিং করেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান লেন্ডল সিমন্স। বরিশালের হয়ে ৪টি উইকেট তুলে নেন কেভিন কুপার। ১৬১ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে বরিশালের ব্যাটসম্যান সাব্বিরের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে তিন বল হাতে রেখে ১৬৩ রান করে বুলস। ৫ উইকেটে ম্যাচটিও জিতে নেয় বরিশাল।

স্কোর: রংপুর: ১৬০/৯ (২০ ওভার)
বরিশাল: ১৬৩/৫ (১৯.৩ ওভার)
ফল: বরিশাল জয়ী ৫ উইকেটে

রংপুরের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা ব্যাটসম্যান লেন্ডল সিমন্স ও জহুরুল ইসলামের চোটের কারণে প্রথম সুযোগ পাওয়া আবদুল্লাহ আল মামুন। ওপেনিং জুটি থেকে তারা তুলে নেন ৫২ রান। নবম ওভারের তৃতীয় বলে বরিশালের বোলার সেকুজে প্রসন্ন রংপুরের ওপেনিং জুটি ভাঙেন। মামুনকে বোল্ড করে ফেরান লঙ্কান এ বোলার। সাজঘরে ফেরার আগে মামুন ২৩ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় করেন ২০ রান।

মামুনের বিদায়ে ব্যাট হাতে ওয়ানডাউনে নামেন টাইগার তারকা সৌম্য সরকার। উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই কেভিন কুপার ফিরিয়ে দেন সৌম্যকে। লংঅফে মোহাম্মদ সামির তালুবন্দি হওয়ার আগে সৌম্য ৮ বলে ৬ রান করেন।

১০ ওভার থেকে রংপুর তুলে নেয় ৫৯ রান। দলীয় ৭০ রানের মাথায় সৌম্য বিদায় নিলে উইকেটে আসেন রংপুর দলপতি সাকিব।

ইনিংসের ১৬তম ওভারে বিদায় নেন সাকিব। আল আমিন হোসেনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে সাকিবের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১৩ রান। আল আমিনের সে বলে মাঝের স্টাম্পটি ভেঙেই যায়। ১০ বল মোকাবেলা করা রংপুর দলপতি সিমন্সের সঙ্গে ৪৪ রানের (২৮ বল) জুটি গড়েন।

দলীয় ১১৪ রানের মাথায় মামুন-সৌম্য-সাকিব ফিরলেও রানের চাকা ঘোরাতে ব্যস্ত থাকেন রংপুরের আরেক ওপেনার সিমন্স। সঙ্গে যোগ দেন থিসারা পেরেরা। তবে, এই জুটি থেকে ভালো কিছু আসেনি। স্কোরবোর্ডে ১১ রান যোগ হতে এ জুটি বিচ্ছিন্ন হন সিমন্স আউট হলে। পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ সামি ফেরান ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা সিমন্সকে। বোল্ড হওয়ার আগে ক্যারিবীয় এ তারকা ৫৭ বলে করেন ৭৩ রান। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৯টি চার আর দুটি ছক্কায়।

১৮তম ওভারে কেভিন কুপার নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে বিদায় করেন পেরেরাকে (৫)।

ইনিংসের শেষ ওভারে জ্বলে উঠেন কেভিন কুপার। দ্বিতীয় বলে মোহাম্মদ নবীকে ফিরিয়ে দেন কুপার। রায়াদ এমরিতের তালুবন্দি হওয়ার আগে নবী ৮ রান করেন। একই ওভারে কুপারের চতুর্থ বলে বলে তাইজুলের হাতে ধরা পড়েন ড্যারেন স্যামি। তবে বিদায় নেওয়ার আগে স্যামি ১৩ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ২৩ রান। পঞ্চম বলে মোহাম্মদ মিথুন (১) রান আউট হলে শেষ বলে সাকলাইন সজীবও রান আউট হন।

৯ উইকেট হারিয়ে রংপুর থেমে যায় ১৬০ রান সংগ্রহ করে।

বরিশালের হয়ে একটি করে উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সামি, আল আমিন হোসেন আর সেকুজে প্রসন্ন। উইকেট শূন্য থাকেন রায়াদ এমরিত এবং তাইজুল ইসলাম। কেভিন কুপার ৪ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে নেন সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট।

বিপিএলের গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে ক্রিস গেইলকে পায়নি বরিশাল বুলস। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ বিগ ব্যাশে খেলতে মেলবোর্নের উদ্দেশ্যে রোববার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা ছাড়ার কথা এ ক্রিকেটারের। ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া বিগ ব্যাশে মেলর্বোন রেনেগেডসের হয়ে খেলবেন এই ব্যাটিং দানব। বিগ ব্যাশে রেনেগেডসের প্রথম ম্যাচ ১৯ ডিসেম্বর ব্রিসবেন হিটের বিপক্ষে। তবে, একটি সূত্র থেকে জানা যায়, গেইল তার পুরোনো পিঠের ব্যথায় ভুগছেন। বিগ ব্যাশে খেলার আগে তিনি কোনো রকম ঝুঁকি নিতে চাননি। বরিশালের হয়ে ছিলেন এ ম্যাচে ছিলেন না আসরের সেঞ্চুরিয়ান ক্যারিবীয় তারকা এভিন লুইস।

রংপুরের ছুঁড়ে দেওয়া ১৬১ রানের টার্গেটে গেইল-লুইস বিহীন বরিশালের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন রনি তালুকদার এবং সেকুজে প্রসন্ন। দলীয় ৩ রানের মাথায় বিদায় নেন রনি তালুকদার। দ্বিতীয় ওভারে আরাফাত সানির বলে পেরেরার তালুবন্দি হয়ে ফেরেন রনি তালুকদার (২)।

পরের ওভারে সাকিব বিদায় করেন বরিশালের আরেক ওপেনার প্রসন্নকে। এলবির ফাঁদে পড়া প্রসন্ন করেন ৭ রান।

দলীয় ১০ রানে দুই ওপেনার ফিরলেও সঠিক পথেই দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন সাব্বির রহমান এবং শাহরিয়ার নাফিস। প্রথম দশ ওভারে বরিশাল দুই উইকেট হারিয়ে ৬৯ রান করে।

১২৪ রানের জুটি গড়েন সাব্বির-নাফিস। ১৭তম ওভারে বিদায় নেন নাফিস। রান আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। ৪০ বল মোকাবেলা করা নাফিসের ইনিংস সাজানো ছিল ৬টি বাউন্ডারিতে। নাফিসের বিদায়ে মাঠে নামেন বরিশাল দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

১৮তম ওভারে ফেরেন সাব্বির রহমান। টাইগার এ তারকা ব্যাটসম্যান ব্যাটে ঝড় তুলে করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৯ রান। থিসারা পেরেরা বলে লংঅনে স্যামির তালুবন্দি হওয়ার আগে সাব্বির মাত্র ৪৯ বল মোকাবেলা করেন। তার ইনিংস সাজানো ছিল ৭টি চার আর তিনটি ছক্কায়।

১৯তম ওভারে তুলে মারতে গিয়ে বিদায় নেন ৫ রান করা মাহমুদুল্লাহ। স্যামির বলে পেরেরার তালুবন্দি হন রিয়াদ। সে ওভারের পঞ্চম বলে রায়াদ এমরিত ছক্কা হাঁকালে শেষ ওভারে ৮ রান প্রয়োজন হয় বরিশালের।

পেরেরার করা ২০তম ওভারের প্রথম বলেই চার মেরে দেন কেভিন কুপার। পরের বলে ডাবল নিয়ে তৃতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকান কুপার। সঙ্গে ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত হয় বরিশালের। কুপার ৩ বলে ১০ আর এমরিত ৪ বলে ৭ রান করে অপরাজিত থাকেন।

রংপুরের হয়ে একটি করে উইকেট নেন সাকিব, স্যামি, সানি, পেরেরা।

বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫
এমআর

** ফাইনালে যেতে বরিশালের টার্গেট ১৬১ রান

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।