ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘ভুল সময়ে জন্মেছিলাম’

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৬
‘ভুল সময়ে জন্মেছিলাম’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ক্রিকেটে টেস্ট পরিবারের সদস্য হিসেবে ১৫ বছর অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ। ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ৯৩ টেস্টে বাংলাদেশের ৭৮ জন ক্রিকেটার টেস্ট ক্যাপ পরেছেন।

বাংলাদেশ দলে সর্বশেষ টেস্ট অভিষেক হয় কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের।

টেস্ট ক্রিকেটারের তালিকাটা লম্বা হলেও, লম্বা হয়নি বেশিরভাগ ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার। এক, দুই কিংবা তিনটি টেস্ট খেলিয়ে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা অনেক। আর ১০ টেস্টের নিচে খেলেছেন এমন তো অনেক রয়েছেই।

জাতীয় দলের হয়ে একটি সিরিজে অংশ নেওয়া ক্রিকেটারদের সংখ্যাও কম নয়। তাদেরই একজন মোহাম্মদ সেলিম। জাতীয় লিগ, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে একচ্ছত্র দাপট দেখিয়ে খালেদ মাসুদ পাইলটের জায়গায় বাংলাদেশ দলে ঠাঁই পান সেলিম। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম সিরিজে দু’টি টেস্ট ও একটি ওয়ানডে খেলেছিলেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।

এর পর আর ফেরা হয়নি দলে।   ২০১৪-১৫ মৌসুমের জাতীয় লিগ খেলে অবসরে যান তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ১৪ বছরের ক্যারিয়ার হলেও জাতীয় দলে লম্বা হয়নি ক্যারিয়ার। এজন্য পর্যাপ্ত সুযোগ না দেওয়াকেই দায়ী করলেন তিনি।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি সুযোগটা কম পেয়েছি। একটি ছেলেকে আপনি দুইটি টেস্ট কিংবা একটি ওয়ানডে দিয়ে যাচাই করতে পারেন না। আমি অস্বীকার করি না, পাইলটা ভাই তখন সেরা। কিন্ত আমাকে যেহেতু সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো, তাহলে নিশ্চয়ই আমার ভেতর কিছু না কিছু ছিলো। এ জন্যই সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো। একটি ছেলেকে দেখার জন্য দুইটি টেস্ট যথেষ্ট নয়।
 
ভুল সময়ে জন্মেছিলাম। তখন পাইলট ভাই (খালেদ মাসুদ) দেশের সেরা উইকেটরক্ষক, অধিনায়কও ছিলেন। ওই সময়ে ক্রিকেটে আমার আর্বিভাব, যোগ করেন সেলিম।

সেলিমের মতো হতভাগা ক্রিকেটারদের মধ্যে রয়েছে আরও অনেক নাম। অভিষেক টেস্ট খেলে দলে আর ডাক পাননি এমন ক্রিকেটার রয়েছেন চারজন। তারা ‍হলেন- বিকাশ রঞ্জন দাস, আনোয়ার হোসেন, ফয়সাল হোসেন ডিকেন্স ও রফিকুল ইসলাম।
 
এছাড়া ফাহিম মুনতাসির সুমিত, আলমগীর কবির, তারেক আজিজ খান ও আনোয়ার হোসেন মনিরকে বাংলাদেশের হয়ে ‍মাত্র তিনটি টেস্ট খেলে ইতি টানতে হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার।

ক্রিকেট জীবন শেষ করে ‍তারা কোনো না কোনোভাবে অবশ্য ক্রিকেটের সঙ্গেই সম্পৃক্ত রয়েছেন। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ সেলিম বেছে নিয়েছেন ক্রিকেট কোচিং। নিজ শহর খুলনায় চালু করেছেন বেসিক ক্রিকেট একাডেমি। আর ঢাকায় শেখ জামাল ক্রিকেট একাডেমির প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

খেলোয়াড়ি জীবন শেষ করে প্রয়াত বাবার ব্যবসাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। তবে ক্রিকেটের টানে মাঠে ফেরেন কোচ হয়ে। ক্রিকেটার তৈরির স্বপ্ন নিয়ে একাডেমির শিশু-কিশোরদের নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন জাতীয় দলের সাবেক এ ‍ক্রিকেটার।
 
নিজের স্বপ্ন নিয়ে তিনি বলেন, খেলোয়াড়ি জীবনে জাতীয় দলে অনেক দিন খেলতে পারি নাই। ক্লাব ক্রিকেটে অনেক দিন খেলেছি। দশটি হোক, দুইটি হোক, মানুষ যেনো মরে যাওয়ার পর বলে, সেলিম বাংলাদেশের জন্য কিছু ক্রিকেটার দিয়ে গেছে।

বাংলাদেশের বর্তমান ক্রিকেট নিয়ে খুব ইতিবাচক মনোভাব মোহাম্মদ সেলিমের মধ্যে, বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক এগিয়েছে। ক্রিকেটারদের খেলার কৌশল, মান অনেক অনেক বেড়েছে। এখন যাকে সুযোগ দেওয়া হয় সে তিন-চারটি সিরিজ পর্যন্ত দলে থাকে। একটা সিরিজ দেখেই বাদ দেওয়া হয় না। পুরোনো ধারা থেকে বের হয়েছেন নির্বাচকরা। এটি ভালো দিক।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫
এসকে/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।