ঢাকা: ২০১৪ সালের শেষ থেকে পুরো ২০১৫ সাল ক্রিকেটে দারুণ সময় পার করেছে বাংলাদেশ। বছরটিতে ১৭টি ওয়ানডে ম্যাচের মধ্য ১৫টিতেই জয় পেয়েছে টাইগাররা।
গেল বছরের পারফরম্যান্সে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা বাংলাদেশ দল ২০১৬ সালের শুরুটা করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে। ২-২ এ সিরিজটি ড্র হয়।
সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনায় সিরিজ ড্র হলেও আসছে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ফলাফল কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার জাবেদ ওমর বেলিম গোল্লা। জিম্বাবুয়ে সিরিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া পরামর্শ দিলেন সাবেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।
টি-টোয়েন্টির ফর্মেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ততটা আশা জাগানিয়া নয়, যতটা টাইগাররা বিগত দিনগুলোতে ওয়ানডেতে দেখিয়েছে। ঠিক এই কারণেই এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজটি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আয়োজন করেছিল টাইগারদের খেলার মধ্যে রাখাসহ প্রস্তুতির বিষয়টি মাথায় রেখেই।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ড্র-এর ফলে এদেশের ভক্তরা মনে করতেই পারেন যে, তাদের প্রিয় বাংলাদেশ আবার ফর্ম হারিয়েছে। যা আসন্ন এশিয়া কাপ বা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে জাবেদ ওমর বেলিমের মতামত চাওয়া হলে তিনি বলেন, আসলে বিষয়টি একেবারেই তেমন নয়। কেননা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এমন একটি খেলা যেখানে যে কোনো দলই যে কোনো সময় ভালো করতে পারে। এই ফর্মেটে মাত্র ১ ওভারেই ম্যাচের ভাগ্য ঘুরে যায়। খুলনায় হয়েছেও তাই। তবে, এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই কারণ আমাদের দল গেল এক বছরেরও বেশি সময় যাবত ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে আসছে। তাছাড়া এই সিরিজের প্রথম দু’টি ম্যাচে তামিম, মুশফিক ও মুস্তাফিজ দলে থাকায় আমরা জিতেছি। কিন্তু পরের ম্যাচে তামিম, মুশফিক ও মুস্তাফিজ না থাকায় আমরা হেরে গেছি।
তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টাইগার স্কোয়াডে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন দেখা যায়। ব্যাটিংয়ে ওপেনিংয়ে ছিলেন না তামিম, টপ অর্ডারে শুভাগত হোম আর ইনজুরির কারণে ছিলেন না মুশফিকুর রহিম। এদিকে বোলিংয়েও এদিন খেলানো হয়নি আরাফাত সানি, তাসকিন আহমেদকে। আর ইনজুরির কবলে পড়ে মাঠের বাইরে ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান।
দলের এমন পরিবর্তনের কারণেই কি তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে গেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে জাবেদ ওমর জানালেন, বিষয়টি মোটেই এরকম নয়। আপনি হয়েতো দেখে থাকবেন যে, পুরো সিরিজটিতেই হ্যামিলটন মাসাকাদজা ও ম্যালকম ওয়ালার ভালো খেলেছে। বিশেষ করে মাসাকাদজার কথা বলবো। চার ম্যাচ খেলে ২৩৬ রান করেছে। তাই বিষয়টি খুব পরিষ্কার যে ভালো ব্যাটিংয়ের কারণেই ওরা দুটি ম্যাচ জিতেছে। আর নতুনদের কথা বলছেন? যারা নতুন হিসেবে এই ম্যাচে খেলেছে তারা খুব বেশি পরিপক্ক না হওয়ায় মাঠে তাদের কিছু ভুল ক্রুটি চোখে পড়েছে। ওদেরও তো দলে সুযোগ দিতে হবে। তা না হলে ওরা কীভাবে নিজেদের গড়ে তুলবে?
এদিকে সিরিজের শেষ দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টাইগাররা শুধু দলগত পারফরম্যান্সের দুর্বলতার কারণেই নয় ভাগ্যদেবী এই দুই ম্যাচে তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তাই হেরে গেছে বলে মত দেন গোল্লা। তবে এই দুই ম্যাচে হারকে ইতিবাচকভাবে নিয়ে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বাজে ক্রিকেট খেলেনি। খেলেছিল ভালোই। তবে ভাগ্য সহায় না হওয়ায় জয়ের দেখা পাওয়া যায়নি। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না আমরা ফর্মে আছি এবং ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমাদের উচিত হবে এই সিরিজের ভুল ভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে আসছে দিনগুলোতে ভালো করা।
সামনে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বড় আসর। দলের জন্য কোনো বার্তা আছে? উত্তরে বেলিম বললেন, আমি তো আর বোর্ডের কোনো কর্মকর্তা নই। তারপরেও একজন খেলোয়াড় হিসেবে বলবো, দলে এখন যারা আছেন সবাই ভালো। তবে আমি আশা করবো দিন দিন আরও ভালো খেলে লক্ষ্য ঠিক রেখে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে আমাদের ক্রিকেট এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৬
এমজেএফ/