কক্সবাজার থেকে: শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আরেকটি দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দল। পরের রাউন্ডে উঠা নামিবিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে টাইগার যুবারা।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ড আর দ্বিতীয় ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে গ্রুপপর্বের তৃতীয় ম্যাচে নামার আগে স্বাগতিক বাংলাদেশকে কোনো ছাড় দেবে না বলে হুঙ্কার দিয়েছিল নামিবিয়া। আর ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগারদের হুঙ্কারে ৩২.৫ ওভারে মাত্র ৬৫ রানেই গুটিয়ে যায় নামিবিয়া। জবাবে দুই উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৬ ওভার ব্যাটিং করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।
টাইগারদের বোলিং তোপে পড়ে দলটির দুই ব্যাটসম্যান শুধু দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেন। আর বাকিদের মধ্যে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান আসে ৫।
যুব বিশ্বকাপের চলমান আসরের ২১তম ম্যাচে সকাল নয়টায় মাঠে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ও নামিবিয়া অনূর্ধ্ব-১৯ দল। টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগারদের দলপতি মেহেদি হাসান মিরাজ। দুই দলের একাদশে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। টাইগারদের হয়ে বোলিং শুরু করেন আবদুল হালিম।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ফিরিয়ে দেন নামিবিয়ার ওপেনার ইয়াটনকে (৫)। দলীয় ৬ রানে প্রথম উইকেট হারানো নামিবিয়া দলীয় ১০ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায়। দলপতি জেন গ্রিনকে (০) রান আউট করে ফিরিয়ে দেন জাকির হাসান।
ইনিংসের ১৩তম ওভারে সালেহ আহমেদ শাওন বোল্ড করেন নিকো ড্যাভিনকে। ৩২ বলে ১৯ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন ড্যাভিন। ১৬তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজ ফেরান মিচেল ভ্যান লিনজেলকে। ব্যক্তিগত ৪ রান করে এলবির ফাঁদে পড়েন তিনি।
ইনিংসের ২১তম ওভারে শাওন তার দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন। দলীয় ৫১ রানের মাথায় নামিবিয়ার পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন জার্গেন লিন্ডে। এলবির ফাঁদে পড়ে বিদায় নেওয়ার আগে তিনি মাত্র ৪ রান করেন। ২৪তম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিং আক্রমণে আসেন আরিফুল ইসলাম। এসেই বোল্ড করেন সেট ব্যাটসম্যান লোহান লরেন্সকে। ৫২ বলে ১৭ রান করেন লরেন্স।
২৭তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজ বল তুলে দেন সাঈদ সরকারের হাতে। দলপতির আস্থার প্রতিদান দিতে মেডেন উইকেট তুলে নেন সাঈদ। ৫ রান করা চার্ল ব্রিটসকে শান্তর তালুবন্দি করেন তিনি। দলীয় ৫৯ রানে নামিবিয়া তাদের সপ্তম ব্যাটসম্যানকে হারায়।
আরিফুল নিজের চতুর্থ আর ইনিংসের ৩০তম ওভারে ক্রিস্টিয়ান অলিভিয়ারকে (০) ফিরিয়ে দেন। ফলে, অষ্টম উইকেট হারায় নামিবিয়া। ৩২তম ওভারে কোয়েতজে রান আউট হন।
আর পরের ওভারে মিরাজ ফেরান ভ্যান উইককে। ৩২.৫ ওভারে ৬৫ রানে গুটিয়ে যায় নামিবিয়া।
২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ৪৯ ম্যাচ খেলা ইমাদ ওয়াসিম দীর্ঘ ৮ বছর ধরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার হিসেবে রেকর্ডটি নিজের দখলে রেখেছিলেন। যুব ওয়ানডের ১০৬৬তম ম্যাচে বাংলাদেশি স্পিনার মিরাজের দাপটে রেকর্ডটি হারাতে হয় পাকিস্তানি স্পিনারকে।
নামিবিয়ার বিপক্ষে ১৬তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজ ফেরান মিচেল ভ্যান লিনজেলকে। সে উইকেট নিয়ে ইমাদ ওয়াসিমকে ছুঁয়ে ফেলেন মিরাজ। ইনিংসের ৩৩তম ওভারে ভ্যান উইককে এলবির ফাঁদে ফেলে মিরাজ হয়ে যান যুব ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির মালিক।
টাইগারদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন সালেহ আহমেদ শাওন, মেহেদি হাসান মিরাজ আর আরিফুল ইসলাম। একটি করে উইকেট পান সাইফুদ্দিন ও সাঈদ সরকার। মিরাজ ৭.৫ ওভার বল করে ৪টি মেডেনে ১২ রান খরচ করেন। আরিফুল ৫ ওভার বল করে দুই মেডেনে দেন ৯ রান। শাওন ৮ ওভারে ৪ মেডেন করে খরচ করেন ১০ রান। আবদুল হালিম ও সাইফুদ্দিনের প্রত্যেকের করা ৫ ওভার থেকে নামিবিয়া ১৫ রান করে নেন। সাঈদ সরকারের দুই ওভারে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা মাত্র দুই রান নিতে সক্ষম হন।
মাত্র ৬৬ রানের সহজ লক্ষ্যে বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন পিনাক ঘোষ আর সাইফ হাসান। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে কোয়েতজে ফিরিয়ে দেন পিনাককে। আর চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাইফ হাসান (৮)।
দলীয় ১৩ রানে দুই ওপেনার ফিরে গেলে উইকেটে ব্যাটিংয়ের দায়িত্ব নেন জয়রাজ শেখ ও ইনফর্ম ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। এ দুই ব্যাটসম্যান ৫৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যান। শান্ত ১৪ রানে আর জয়রাজ ৩৪ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
এমআর
** ১৫ ওভারে বাংলাদেশ ৫৮/২
** সহজ টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ
** ৬৫ রানেই গুটিয়ে গেল নামিবিয়া
** টাইগারদের অষ্টম শিকার
** টাইগারদের শিকারে সপ্তম ব্যাটসম্যান সাজঘরে
** নামিবিয়াকে চেপে ধরেছে বাংলাদেশ
** নামিবিয়ার চতুর্থ ব্যাটসম্যান সাজঘরে
** ১২ ওভারে স্বাগতিকদের অর্জন দুই উইকেট
** টাইগারদের দ্বিতীয় আঘাত