ঢাকা: রাত পোহালেই মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে শুরু হবে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৩তম আসর। এশিয়া ক্রিকেটের এই মহাযজ্ঞকে সামনে রেখে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে ঢাকার ইউসিবি ব্যংকের ৬টি শাখায় টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।
এই ছয়টি শাখার একটি হলো মিরপুর। যেখানে ব্যাংকের পাশাপাশি কালোবাজারিরা প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে টিকিট বিক্রি করে যাচ্ছেন। ১৫০ টাকার টিকিট এখানে বিক্রি হচ্ছে কতটাকা দামে জানেন? ২ হাজার টাকা দামে! আর এই টিকিট শুধু ব্যাংকের বুথেই নয়, ব্যাংকের পেছনে দাঁড়িয়েও বিক্রি করছেন পুলিশ ও কালোবাজারিরা!
মঙ্গলবার দুপুরে মিরপুর ইউসিবি ব্যাংকের ওই শাখায় গিয়ে দেখা গেল, হাজার হাজার মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে কাঙ্খিত টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছেন। টিকিটের জন্য ক্রিকেট প্রেমীদের এমন ভীড়ে মিরপুর ১০ নম্বর মোড় সংলগ্ন এই ব্যাংকটির আশেপাশের এলাকা একেবারে জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
অবশ্য না হবারও কোন কারণ নেই। এশিয়ার ৫ জাতির ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ের প্রথম ম্যাচেই ২৪ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) স্বাগতিক বাংলাদেশ মোকাবেলা করবে হালের সবচাইতে তিক্ত প্রতিপক্ষ ভারতকে। এমন ভীড় তাই ক্রিকেট পাগল এই জাতির জন্য অযৌক্তিক কিছু নয়।
অযৌক্তিক হলো, ভক্তরা ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও যখন কাঙ্খিত টিকিটটি পাননা। যখন কৃত্তিম সংকট তৈরী করে ব্যাংক কর্তারা বলেন টিকিট নেই কিন্তু পুলিশ ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছের লোকজন টিকিট হাতে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্ধারিত দামের চেয়েও প্রায় ১০ গুন দামে টিকিট বিক্রি করে যাচ্ছেন!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন কয়েকজন ভক্ত জানালেন, ‘সেই সকাল ৭টা থেকে টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। এখন ২টা বাজে টিকিট পাইনি। ব্যাংক থেকে বলছে দেড়শো ও আড়াইশো টাকা দামের টিকিট নেই। সব শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু দেখেন আমাদের সামনেই দেড়শো টাকা দামের টিকিট পুলিশ ২ হাজার টাকা দামে বিক্রি করছে। কেউ কেউ দেখছি ব্যাংকের পেছনে গিয়ে টিকিট কিনছে। তাহলে টিকিট ব্যাংকে ছাড়ার দরকার কী ছিল?’
প্রসঙ্গত, মিরপুর ইউসিবি ব্যাংকের এই শাখায় ৫’শ, ২’শ, দেড়শ ও ৫০ টাকা দামের টিকিট ছাড়া হয়েছে। কিন্তু দুপুর ১২টা বাজার আগেই আড়াইশ ও দেড়শো টাকার টিকিট শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্মকর্তারা।
ক্রিকেট এদেশের মানুষের প্রাণের খেলা। টাইগারদের এক একটি জয়ে ১৬ কোটি মানুষের এই ক্ষুদ্র ভুখন্ড এক সঙ্গে উল্লাসে মেতে উঠে আর এই উল্লাসে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণই বেশি। তারা মাঠে গিয়ে হাততালি দিয়ে, চিতকার করে মাশরাফি-সাকিবদের জয়ের উৎস হিসেবে কাজ করেন। আর যাদের মাঠে বসে খেলা দেখার সামর্থ্য নেই তারা টিভি সেটের সামনে বসে খেলা দেখে উল্লাস করেন।
তাই এদেশের ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ব বন্ধ করা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা না হলে লাল-সবুজের মাঠের ক্রিকেট মাঠেই মারা যাবে!
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
এইচএল/আরএম
** টিকিটতো নয় যেন সোনার হরিণ