মিরপুর থেকে: এ এক অন্যরকম জাতীয়তাবাদ। মাশরাফি, তাসকিন, আল-আমিন, মুস্তাফিজরা ভারতের বিপক্ষে বল করছেন আর পুরো স্টেডিয়াম তাদের নাম ধরে চিৎকার করছে।
যেন পুরো স্টেডিয়াম কাঁপিয়ে তুলছেন বাংলাদেশর সমর্থকেরা। যেন পুরো বাংলাদেশ আজ একাকীভূত হয়েছে মিরপুরের এই শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
শুধু আজকের এই ম্যাচেই নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন ম্যাচে এ দেশের দর্শকেরা মাঠে বসে চিৎকার করে, হাততালি দিয়ে এভাবেই জাতীয়তাবাদের বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এই ম্যাচেও তার কোন ব্যতিক্রম চোখে পড়লো না। যেন পুরো বাংলাদেশ আজ মিরপুরের এই ভেন্যুতে জড়ো হয়েছে! মিরপুরের এই শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম যেন এক খন্ড বাংলাদেশ ।
সন্দেহ নেই। এশিয়া কাপে এশিয়ার সেরা ক্রিকেট দেশগুলোই অংশ নিয়ে থাকে। তাই মাঠে দর্শক কানায় কানায় পূর্ণ থাকবে সেটা যেমন স্বাভাবাকি তেমনি নিজ দেশের খেলোয়াড়দের সমর্থন দিয়ে যাবেন সেটাও স্বাভাবিক।
সেই ধারাবাহিকতায় এশিয়া কাপের উদ্বোধনী এই ম্যাচে মিরপুরের গ্যালারি একেবারে কানায় কানায় পূর্ণ। উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম, ভিআইপি গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড কোথাও তিল ধারণের ঠাই নেই।
ভক্তরা যে যে প্রান্ত থেকে পারছেন চিৎকার করে উজ্জীবিত করছেন নিজ দেশের খেলোয়াড়দের।
টাইগারদের একটি বলে যখন প্রতিপক্ষ ভারতের ব্যাটসম্যানরা পরাস্ত হচ্ছেন তখন ভুয়া ভুয়া বলে চিৎকার করছেন।
অতীতে দেশের বিভিন্ন সংকট ও যুদ্ধ বিগ্রহ ছাড়া সম্ভবত ক্রিকেটেই এদেশের জাতীয়তাবাদের এমন বহি:প্রকাশ দেখা যায়।
১৯৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণ অভ্যুথ্যান, ৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ৯০’র স্বৈরাচার পতনের পর সম্ভবত ক্রিকেট দিয়েই লাল-সবুজের ক্ষুদ্র এই ভু-খন্ডের মানুষ দেশের জয়ের চেতনায় এভাবে একাকীভূত হয়।
মজার ব্যাপার হল, জাতীয়তাবাদের এই চেতনা শুধু মাঠেই সীমাবদ্ধ নেই। একই সাথে তা বারবার জেগে উঠছে মাঠের বাইরেও ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতিটি ঘরে, রাস্তায়, চায়ের দোকানে, লঞ্চ, স্টিমার ঘাট, বাস স্ট্যান্ড সহ প্রতিটি কোনায় কোনায়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
এইচএল/এমএমএস