মিরপুর থেকে: রীতিমত যুদ্ধ করে পুরো দেশবাসী বলছে, টিকিট মিলছে না। অথচ বাংলানিউজ দেখছে, টিকিট বেচতে বাকবিতণ্ডা চলছে বিক্রেতাদেরই মধ্যে।
রোববার (৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টা। তার আগে দুপুর ১২টায় টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে দু’ ঘণ্টা পর বন্ধ হয়ে যায়। হতাশায় মুষড়ে পড়েন লম্বা লাইনে দাঁড়ানো টাইগার ভক্তরা।
পুলিশের দৌড়ানিতে একবার তারা লাইনে দাঁড়াচ্ছিলেন, তো আরেকবার লাইন ছাড়া ভিড়ে। এই ভিড়ই যেন ‘টিকিটের কালোবাজার’। বাংলানিউজ ঢুকে পড়ে সে বাজারে। দু’জন নারী এগিয়ে এসে বললেন, ‘লাগবে?’
বাংলানিউজের পাল্টা প্রশ্ন, ‘কয়টা আছে? আমার বন্ধুরা কিনবে। ’ ওই নারী দেখালেন তার হাতে দু’টো টিকিট আছে। লাগলে আরও দেওয়া যাবে। সঙ্গে সঙ্গেই আরও দু’জন নারী চলে এলেন তার পাশে, টিকিট নিয়ে।
এই নারীদের মতোই লাইন ছাড়া ভিড়ে ঘোরা-ফেরা করতে দেখা গেল আরও শ’খানেক নারীকে। যারা আবার সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করেছিলেন। তাদের অকপট কথা, শনিবার (৫ মার্চ) রাত থেকে তারা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনেছেন, পরে বেশি দামে বিক্রি করবেন বলেই।
নারীদের সঙ্গে ‘ক্রেতা’কে কথা বলতে দেখে ইউসিবির সামনে থেকে দৌড়ে এলো জনাকয়েক তরুণ। তারাও বললো, ‘টিকিট আছে, লাগবে?’
এবার টিকিট বেচা নিয়ে বাকযুদ্ধ লাগলো তাদের মধ্যেই। এক ক্রেতার জন্য টিকিট নিয়ে এই বাকযুদ্ধ অসংখ্য বিক্রেতার।
তবে, টিকিটের দাম শুনে দমে যেতে হবে যে কাউকেই। প্রথম নারী বলছিলেন, দেড়শ টাকা দামের দু’টো টিকিট ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করবেন তিনি। তার তুলনায় ৫০০ টাকা কমিয়ে দু’জন তরুণ বললেন, তারা দেবেন আট হাজার টাকায়।
টিকিট নিয়ে যেখানে এই দরদাম, তার ১০০ গজ দূরে পুলিশ বসে তা-ই দেখছে। কালোবাজারে এই টিকিট বিক্রির তৎপরতায় পুলিশের কোনো বাধা নেই।
বাধা দেবেইবা কেন? খোদ পুলিশই তো ‘টিকিট বিক্রিতে’ নিয়োজিত। খানিক আগেই পুলিশের এক সদস্য পাঁচটি টিকিট বিক্রি করেছেন। পাশের এক বিরিয়ানি হাউজে আরেক পুলিশের কাছ থেকে দু’জন টিকিট কিনে এসে দেখাচ্ছিলেন বাংলানিউজকে।
ভিড়ে ঘুরে বোঝা গেল, ওপরে ওপরে ক্রেতার ভিড় কিন্তু টিকিটের অভাব দেখা গেলেও ভেতরের চিত্র ঠিক উল্টো, অর্থাৎ ক্রেতা কম কিন্তু টিকিটের অভাব নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০১৬
এসএ/এইচএ