ঢাকা: ক্রিকেটবিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপের সেরা একাদশ ঘোষণা করেছে। যেখানে বাংলাদেশের চার ক্রিকেটার নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন।
এশিয়া কাপে দারুণ পারফর্ম করে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালের মঞ্চে নেমেছিল বাংলাদেশ। আর পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ব্যাট হাতে আলো ছড়ানো টাইগারদের টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট সাব্বির রহমান রুম্মন পুরস্কারও পান খুব দ্রুতই। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা, আইসিসি তাদের টি-টোয়েন্টি র্যাংকিং প্রকাশ করে। সেখানে সাব্বির ৪৪ ধাপ এগিয়েছেন। টি-টোয়েন্টির ব্যাটসম্যান ক্যাটাগরিতে সাব্বিরের অবস্থান ২০তম। তার রেটিং পয়েন্ট ৫৭৪। এটিই মারকুটে এই ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ারে অর্জিত সর্বোচ্চ র্যাংকিং ও রেটিং পয়েন্ট।
এশিয়া কাপে টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারও নির্বাচিত হন সাব্বির। টুর্নামেন্ট সেরার খেতাব জিততে ৫ ম্যাচে সাব্বির করেন সর্বোচ্চ ১৭৬ রান। ৪৪ ব্যাটিং গড়ে সাব্বিরের টুর্নামেন্ট জুড়ে ছিল ১৫টি বাউন্ডারি আর ৫টি ওভার বাউন্ডারি। ইনিংস সর্বোচ্চ রান ছিল ৮০। এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৪৪ রান করেন সাব্বির। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৬ রান করলেও তৃতীয় ম্যাচে আবারো জ্বলে উঠে সাব্বিরের ব্যাট, করেন ৮০ রান। চতুর্থ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪ রান করা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে করেন অপরাজিত ৩২ রান। এশিয়া কাপে সাব্বিরের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫৩ রান করেন ভারতের বিরাট কোহলি। লঙ্কান তারকা দিনেশ চান্দিমাল ১৪৯ রান করে তৃতীয় অবস্থানে থাকেন।
এশিয়া কাপের এবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়ে ‘কুলেস্ট প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ’ হওয়া টাইগারদের পেসার আল আমিন হোসেন আইসিসির টি-টোয়েন্টি বোলার ক্যাটাগরিতেও ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রেটিং পয়েন্ট অর্জন করেছেন। ১৭ ধাপ এগিয়ে আল আমিন বোলারদের ক্যাটাগরিতে উঠে আসেন ১৫ নম্বরে। ক্যারিয়ার সেরা ৬১২ রেটিং পয়েন্ট পাওয়া টাইগার এই পেসার এশিয়া কাপের আসরেও প্রতিপক্ষের জন্য ছিলেন রীতিমতো ভয়ঙ্কর। টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ১১ উইকেট তুলে নেন আল আমিন। শীর্ষ ১৫’তে উঠে আসতে আল আমিন পেছনে ফেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক, শ্রীলঙ্কান লাসিথ মালিঙ্গা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজদের মতো তারকাদের।
আসরে আল আমিন ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই তুলে নেন টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট। পরের ম্যাচে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৮ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট। আর তৃতীয় ম্যাচে লঙ্কানদের হারাতে আবারো তুলে নেন দলের সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। পাকিস্তানের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আবারো স্বরূপে আল আমিন। পেয়ে যান আবারও সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। ফাইনালের মঞ্চে ভারতের বিপক্ষে নিয়েছেন আরও একটি উইকেট।
ক্রিকইনফোর সেরা একাদশে থাকা রিয়াদ দেখিয়েছেন অলরাউন্ড নৈপুণ্য। পাঁচ ম্যাচ থেকে তিনি করেন ১২১ রান। একবারই তিনি আউট হন। ১৬৫.৭৫ স্ট্রাইক রেটে রান তোলা রিয়াদ বল হাতে ৪.৭ ইকোনমি রেটে নেন চারটি উইকেট।
টাইগারদের ওপেনার সৌম্য সরকার ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ রানের মালিক হতে না পারলেও ফিল্ডিংয়ে ছিলেন দুর্দান্ত। পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি। ব্যাট হাতে করেছিলেন ৪৮ রান।
ক্রিকইনফোর এশিয়ার সেরা দলে ভারতের চার ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন। ওপেনার রোহিত শর্মার সঙ্গে টিম ইন্ডিয়ার বাকি তিনজন হলেন বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনি ও জাসপ্রিত বুমরাহ। পাকিস্তানের দুইজন এই দলে জায়গা পেয়েছেন। পাকিস্তানের থেকে রয়েছেন শোয়েব মালিক আর মোহাম্মদ আমির। বাছাইপর্ব পেরিয়ে মূলপর্বে খেলা সংযুক্ত আরব আমিরাতের থেকে সেরা একাদশে জায়গা করে নেন দলটির অধিনায়ক আমজাদ জাভেদ।
গত বারের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কার কোনো ক্রিকেটার সেরা একাদশে জায়গা পাননি। মহেন্দ্র সিং ধোনিকে এই দলটির অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক নির্বাচন করা হয়।
ইএসপিএন ক্রিকইনফো এশিয়া কাপের একাদশ:
রোহিত শর্মা (ভারত)
সৌম্য সরকার (বাংলাদেশ)
বিরাট কোহলি (ভারত)
সাব্বির রহমান (বাংলাদেশ)
শোয়েব মালিক (পাকিস্তান)
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (বাংলাদেশ)
মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)
আমজাদ জাভেদ (আরব আমিরাত)
মোহাম্মদ আমির (পাকিস্তান)
জাসপ্রিত বুমরাহ (ভারত)
আল-আমিন হোসেন (বাংলাদেশ)
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, ০৮ মার্চ ২০১৬
এমআর