মিরপুর থেকে: চলমান বিপিএলের ৩৮তম ম্যাচে সহজ জয় পেয়েছে সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটস। তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা।
বিপিএলের হাইভোল্টেজ ম্যাচে মাঠের লড়াইয়ে নামে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা ঢাকা ডায়নামাইটস এবং তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা চিটাগং ভাইকিংস। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় ঢাকা-চিটাগং ম্যাচটি শুরু হয়।
টস হেরে আগে ব্যাট করা ভাইকিংস ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৩৪ রান। ৭৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তামিম ইকবাল। জবাবে, ১০ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় ৪ উইকেট হারানো ঢাকা।
টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ভাইকিংসদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন দলপতি তামিম ইকবাল এবং ক্যারিবীয়ান ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে বিদায় নেন গেইল। আন্দ্রে রাসেলের বলে সাকিবের তালুবন্দি হওয়ার আগে তিনি ৬ বলে করেন মাত্র ১ রান। দলীয় ১৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় চিটাগং। দলীয় দুই রান যোগ হতেই বিদায় নেন আনামুল হক বিজয়। রন্সফোর্ড বিটনের বলে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে কুমার সাঙ্গাকারার গ্লাভসবন্দি হন বিজয় (০)।
এরপর দ্রুত বিদায় নেন জহুরুল ইসলাম। ব্যক্তিগত ৬ রানে ব্রাভোর বলে বিটনের হাতে ধরা পড়েন তিনি। দলীয় অষ্টম ওভারে ৩৩ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় ভাইকিংস। চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়েন পাকিস্তানি তারকা অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক এবং তামিম ইকবাল। দুর্দান্তভাবে দলকে টানতে থাকেন তারা। এই জুটি থেকে আসে ৫৬ বলে ৮৬ রান। ইনিংসে ১৭তম ওভারে বিদায় নেন শোয়েব মালিক। বিটনের বলে রাসেলের হাতে ধরা পড়ার আগে তিনি ২৫ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় করেন ৩৩ রান।
১৮তম ওভারের প্রথম বলে বিদায় নেন তামিম। ব্রাভোর বলে রাসেলের হাতে ধরা পড়ার আগে ভাইকিংস দলপতি করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৪ রান। তার ৫৯ বলের ইনিংসে ছিল ছয়টি চার আর তিনটি ছক্কার মার। দলীয় ১১৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় চিটাগং।
তামিম-মালিক ফিরলেও ভাইকিংস তাকিয়ে ছিল আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীর দিকে। তবে, তামিমকে ফিরিয়ে একই ওভারে ব্রাভো ফেরান নবীকে (০)। জাকির হাসান (৯) আর ইমরান খান (৪) অপরাজিত থাকেন।
ঢাকার হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন ৪ ওভারে ২৭ রান খরচ করা ব্রাভো। দুটি উইকেট নেন বিটন আর একটি উইকেট তুলে নেন আন্দ্রে রাসেল।
চিটাগং ভাইকিংসের ছুঁড়ে দেওয়া ১৩৫ রানের টার্গেটে ঢাকার হয়ে ব্যাটিং শুরু করেন মেহেদি মারুফ এবং কুমার সাঙ্গাকারা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে মোহাম্মদ নবী ফিরিয়ে দেন মেহেদি মারুফকে। হার্ডহিটার এই তারকা ব্যাটসম্যান এলবির ফাঁদে পড়ার আগে করেন ৯ রান। দলীয় ১০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় ঢাকা। ৩৫ রানের মাথায় বিদায় নেন নাসির হোসেন। ইমরান খানের বলে উইকেটের পেছনে আনামুল হক বিজয়ের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে নাসির ৬ বলে একটি করে চার আর ছক্কায় করেন ১৩ রান।
তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন মোসাদ্দেক হোসেন। শোয়েব মালিকের বলে তুলে মারতে গিয়ে ইমরান খানের তালুবন্দি হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৯ রান। দলীয় ৫৬ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় ঢাকা।
এরপর জুটি গড়েন কুমার সাঙ্গাকারা এবং আলাউদ্দিন বাবু। এই জুটি থেকে আসে ২৭ রান। ইনিংসের ১৩তম ওভারে রানআউট হয়ে বিদায় নেন লঙ্কান গ্রেট। তার আগে ৩৫ বলে ৫টি চারের সাহায্যে সাঙ্গার ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান। দলীয় ৮৩ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ঢাকা।
আলাউদ্দিন বাবু ২৭ বলে ১টি চার আর ২টি ছক্কায় ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন। আন্দ্রে রাসেল ১৮ বলে ১টি চার আর ৩টি ছক্কায় ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন। ১৮.২ ওভারে জয় তুলে নেয় ঢাকা।
দিনের প্রথম ম্যাচে মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের চ্যালেঞ্জের সামনে পড়েছিল মাহমুদউল্লাহর খুলনা টাইটান্স। বিপিএলের শেষদিকে এসে ছন্দ খুঁজে পাওয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের শিকার এবার খুলনা টাইটান্স! মাশরাফিদের টানা তিন জয়ের বিপরীতে টানা তিন হারে খুলনার প্লে-অফ নিশ্চিতের অপেক্ষাটাও বেড়েছে। মারলন স্যামুয়েলসের ৬৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে ১৪২ রানের লক্ষ্যটা পাঁচ উইকেট ও আট বল হাতে রেখেই টপকে গেছে কুমিল্লা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৬
এমআরপি