একথা সবাই অকপটে স্বীকার করবেন, সাদা পোশাকে টাইগাররা আগে যেখানে হার ব্যবধান কমাতে খেলতো এখন সেখানে নূন্যতম ড্র কিংবা জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামে। প্রমাণ চান? এইতো এ বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে টাইগারদের শততম টেস্ট জিতে সিরিজ ড্র করে দেশে ফিরেছিল মুশফিকরা।
এখানেই শেষ নয়। গত বছরের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হেরে গেলেও স্বাগতিকরা সাকিব-মুশফিকের (২১৭-১৫৯ রান) ব্যাটিং চোখ রাঙানি দেখেছে। মুশফিক অবশ্য এটি ধরে রেখেছিলেন ফেব্রুয়ারিতে হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত ভারত সিরিজেও। খেলেছিলেন ১২৭ রানের দারুণ এক ইনিংস। যদিও তারা কোহলিদের কাছে হেরে গিয়েছিলেন।
এবার অস্ট্রেলিয়ার পালা। আর্থিক বিষয় নিয়ে খেলোয়াড়দের সাথে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার যে টানাপোড়ন ছিল সেটা সমাধান হয়ে গেছে। ফলে বাংলাদেশ সফর নিয়ে এতদিন যে শঙ্কার মেঘ জমেছিল তা উড়ে গেছে।
অধিনায়ক রিকিং পন্টিংয়ের নেতৃত্বে অজিরা সবশেষ বাংলাদেশ সফর করেছে ২০০৬ সালে। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে সেবার উড়ন্ত অস্ট্রেলিয়াকে প্রায় মাটিতে নামিয়ে এনেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। এবারও দেশটির বিপক্ষে সেই ঘরের মাটিতে টেস্ট সিরিজ। ফলে লড়াইটা সেয়ানে সেয়ানে হবে বলেই বিশ্বাস বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর।
বাংলানিউজের সাথে আলাপকালে নান্নু জানালেন, ‘আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত আছি। চ্যালেঞ্জিং একটি সিরিজ হবে। কারণ অস্ট্রেলিয়াকে ১১ বছর পর হোম সিরিজে পাচ্ছি। আশা করি ভালো ক্রিকেটই খেলতে পারবো। আগের চেয়ে আমাদের দলটাও পরিণত। সেই বিবেচনায় ভালো ক্রিকেটটাই চাচ্ছি। ’
আর এক্ষেত্রে নান্নুকে অভয় যোগাচ্ছে গত বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগারদের অদম্য পারফরমেন্স। পাশাপাশি এ বছর খেলা অন্যান্য টেস্টতো আছেই, ‘যেহেতু আমরা সবশেষ ইংল্যান্ড সিরিজ যথেষ্ট ভালো খেলেছিলাম ওটার মতোই একটা সিরিজ আশা করছি। তাছাড়া শেষ যতগুলো টেস্ট ম্যাচ খেলেছি যথেষ্টেই ভালো খেলেছি। ’
নান্নুর মতো এমন প্রত্যাশা করছেন টাইগারদের এক সময়ের স্পিন জাদুকর আব্দুর রাজ্জাকও। তার চোখে বাংলাদেশ এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটে ভয়ংকর এক দলের নাম। তার বিশ্বাস নিজেদের মাঠে লাল-সবুজের দল যে কোনো শক্তিশালী দলের কাঁপন ধরিয়ে দেওয়ার সামর্থ রাখে। তাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও স্বাগতিকদের চোখ রাঙানি অব্যাহত থাকবে, ‘হোমে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ খুবই ভয়ংকর। দেখা যাক, কী হয়। আগের পর্যায়ে আমরা নেই। এখন আমরা যে কোনো দলের জন্য থ্রেট। আমাদের হালকা করে নেওয়ার কিছু নেই। কারণ আমি ব্যক্তিগতভাবে ফিল করি ইংল্যান্ড হচ্ছে বিশ্বের সেরা টেস্ট দল। তো ইংল্যান্ডকে যদি টেস্টে হারাতে পারি তাহলে আর কাউকে হারানো কঠিন হবে না। ’
ইংলিশদের পরে অজিদের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে টাইগাররা কাঁপিয়ে তুলুক ১৬ কোটির ক্ষুদ্র এই ব-দ্বীপ। বিশ্ব ক্রিকেটকে আরেকবার দেখিয়ে দিক বাংলাদেশের যে দিন গেছে তা শুধুই অতীত। সেসব দিন এখন আর নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, ৫ আগস্ট ২০১৭
এইচএল/এমআরপি