ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

জয়ের খোঁজে ভঙ্গুর দল নিয়েই লড়বে বাংলাদেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
জয়ের খোঁজে ভঙ্গুর দল নিয়েই লড়বে বাংলাদেশ ছবি: সংগৃহীত

দ. আফ্রিকা সফরে গিয়ে স্বাগতিকদের বিপক্ষে এই পর্যন্ত দুটি টেস্ট ও দু’টি ওয়ানডে খেলেছে সফরকারী বাংলাদেশ। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, এই চার ম্যাচের একটিতেও নিজেদের ক্ষমতার প্রমাণ দিতে পারেনি সফরকারীরা। টেস্টে যেহেতু মাত্রই বাংলাদেশ জয় পাওয়া শুরু করেছে তাই মুশফিক এই যাত্রায় বেঁচে গেলেও সমালোচকদের তোপ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না মাশরাফি।

কেননা তার নেতৃত্বে ইতোমধ্যেই ওয়ানডেতেও সিরিজ হেরে বসেছে টাইগাররা। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ১০ উইকেটের লজ্জার হারের পর দ্বিতীয়টিতে রান চাপা পড়ে হেরেছে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে।

এমন হারে গত তিন বছর ওয়ানডে ক্রিকেটে রীতিমতো উড়তে থাকা দলটি এখন অনেকটাই বিপর্যস্ত। ওয়ানডে ফরমেটে দেশে ও দেশের বাইরে তাক লাগিয়ে দেয়া এক একটি জয় উপহার দিয়ে যে মাশরাফি দিন বদলের অধিনায়কের তকমা পেয়েছিলেন, এই সিরিজেই তা অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে।

অথচ দেশের বাইরে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের নিয়মিত জয় এখন আর দুর্লভ কিছু নয়। যার শুরুটা হয়েছিল ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ দিয়ে। অতদূর না গেলেও চলবে। গেল মে’তে ডাবলিনে ত্রিদেশীয় সিরিজে ও জুনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডকে হারানোর সুখস্মৃতি নিয়ে দেশে ফেরা দলটির চলতি সিরিজে সেই জয়ই যেন সোনার হরিণ হয়ে হারিয়ে গেছে আফ্রিকার কোনো এক গহীন জঙ্গলে। সেই সোনার হরিণের খোঁজেই এখন মরিয়া লাল-সবুজের দল।

যে ওয়ানডে ফরমেটে বাংলাদেশ বিশ্বের পরাশক্তি এক একটি দেশের কাছে মূর্তমান ত্রাস হয়ে উঠেছিল সেই সেই ফরমেটে তারা যেন আজ দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য। এজন্য শুধু মাশরাফির দোষ দিয়েই বা কী লাভ? দলের বাকি দশজনের খেলা তো আর তিনি একা খেলতে পারবেন না।

ব্যাটিংয়ের কথায় আসি। একমাত্র মুশফিক ছাড়া ওয়ানডে ফরমেটে আর কোনো ব্যাটসম্যান ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলেছেন একথা কেউই বলবেন না। যদিও ওপেনিংয়ে নিয়মিত ব্যর্থতার নাগপাশ কাটিয়ে ইমরুল কায়েস গত ম্যাচে ৬৮ রানের একটি ইনিংস খেলতে সমর্থ হয়েছিলেন। সেটা বাদ দিলে দুই টেস্ট ও প্রথম ওয়ানডেতে তিনি ছিলেন নিস্প্রভ। আর লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান ও নাসির হোসেনের মতো প্রমাণিত ব্যাটসম্যানদের ব্যাট থেকে রানতো এই সিরিজের শুরু থেকেই নির্বাসনে।

বোলিংয়ের অবস্থাতো আরও শোচনীয়। প্রথম ওয়ানডেতে আমলা ও ডি ককের ব্যাটে বলতে গেলে নিস্পেষিতই হয়েছেন টাইগার বোলাররা। যদিও দ্বিতীয়টিতে সাকিব ও রুবেল কিছুটা জ্বলে উঠতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও খুব একটা লাভ হয়নি। তাদের থোরাইকেয়ার করে ডি ভিলিয়ার্সের ১৭৬ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৩৫৩ রানের দলীয় সংগ্রহ গড়েছিল প্রোটিয়ারা।
 
দৈন্যতার কমতি নেই মাশরাফিদের ফিল্ডিংয়েও। প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা দু’একটা ক্যাচ তুলে দিলেও সেগুলোর কোনোটা আবার লুফে নিতে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন। তাই সব দিক থেকেই কেমন একটি অদৃশ্য চাপ অধিনায়ক মাশরাফিকে গ্রাস করছে। অধিনায়ক মাশরাফির ওপর চাপটি আরও প্রকট হয়েছে ইনজুরিতে দুই লড়াকু যোদ্ধা তামিম ইকবাল ও মোস্তাফিজ ছিটকে যাওয়ায়। যদিও মোস্তাফিজের বদলি হিসেবে খেলতে দেশ থেকে উড়ে গিয়ে ইতোমধ্যেই দলে যোগ দিয়েছেন শফিউল ইসলাম। আর তামিমের বদলি হিসেবে আছেন মুমিনুল হক। কিন্তু তামিম এবং ফিজের বিকল্প কী আর সম্ভব?

দলের এমন ভগ্নদশার মধ্য দিয়েই সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। যেখানে তাদের লক্ষ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে প্রিয় ফরমেটে নিজেদের সামর্থের প্রমাণ দিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ানো। দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্কে ম্যাচটি শুরু হবে রোববার (২২ অক্টোবর), বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা’য়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, ২১ অক্টোবর ২০১৭
এইচএল/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।