চলমান বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) দ্বিতীয় রাউন্ডে দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০ হাজার রানের অনন্য চূড়া স্পর্শ করেছেন ৩৪ বছর বয়সী তুষার। তার দু’দিন পরেই ঘরোয়া ক্রিকেটে দেশের প্রথম বোলার হিসেবে ৫০০ উইকেটের অনন্য মাইলফলক ছুঁয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার রাজ্জাক।
জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও ঘরোয়া ক্রিকেটের এই দুই পারফর্মারকে অনুসরণ করতে দেশের তরুণ ক্রিকেটারদের প্রতি আহবান জানালেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের দিন বদলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, ‘আমাদের মানসিকতা থাকে, সাকিব-তামিম-মাশরাফি-মুশফিকরা কী বলছে সেটা ফলো করা। আমি মনে করি তাদের কাছ থেকে শিখে এসে এখানে খেলা উচিত। ক্রিকেট নিয়ে ডেডিকেশন থাকলে কী করা যায়। ফার্স্টক্লাসে ৫০০ বা ১০ হাজার কোনো হেলাফেলা নয়। এটা আসলেই করে ফেলবে এমন কিছু নয়। সেজন্য তাদের ১৭-১৮ বছর খেলতে হয়েছে। ’
‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সব না। সুস্থ থেকে এতদিন খেলে গেছে, তাদের যে সম্মানটা দেওয়া দরকার সেটা খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে আমরা দিতে চাই এবং দিচ্ছি। হয়তো আনুষ্ঠানিক কিছু সম্ভব হয়নি। তবে অবশ্যই আমাদের জায়গা থেকে তাদের সম্মান দিই, সব সময় তাদের নিয়ে আলোচনা হয়। ফার্স্টক্লাস যারা নতুন খেলছে, তারা তাদের ফলো করবে। তারাও ১০ হাজার করা লাগবে বাংলাদেশ দলের জন্য, চার পাচ হাজার রান করলে বুঝতে পারবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চাপটা কী জিনিস। আমি বলব তারা যেন আরও সিরিয়াস হয়ে খেলে, মাঠে গিয়ে ওই মানসিকতা নিয়ে খেলে। ’
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুযারি) শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সম্মেলন কক্ষে এসব কথাই তুলে ধরেন মাশরাফি। এসময় সংবাদ মাধ্যম কর্মীরা তার কাছে জানতে চান দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের উজ্জ্বল এই দুই নক্ষত্রকে আমরা কতুটুকু সম্মান দিতে পারছি। এমন প্রশ্নে মাশরাফির সোজাসাপ্টা জবাব, ‘প্লেয়ারদের কাছ থেকে বলেন, অবশ্যই পাচ্ছে। আমরা একটু আগে বাসে আসার সময়ও তাদের নিয়ে কথা বলছিলাম। তুষার ইমরান ১০ হাজার রান করেছে, রাজ্জাক ৫০০ উইকেট পেয়েছে। তাদের যে সম্মানটা মন থেকে দেওয়া দরকার খেলোয়াড়দের দিক থেকে দেওয়া হচ্ছে। তাদের সঙ্গে কথা বললেই আমার বিশ্বাস আপনারা এটা পরিষ্কার হবেন। ’
টেস্ট ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ২০০২ সালের কলম্বোতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে অভিষিক্ত তুষার ইমরান ৫ ম্যাচ খেলে সংগ্রহ করেছেন ৮৯ রান। তার সবশেষ টেস্ট ম্যাচটি ছিল ২০০৭ সালের জুলাইয়ে ক্যান্ডিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আর ওয়ানডে ক্রিকেটে তার শুরুটা হয়েছিল ২০০১ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়েল বিপক্ষে ম্যাচে। ৪১ টি ম্যাচ খেলে সংগ্রহ করেছেন ৫৭৪ রান। রঙিন পোশাকে তার সবশেষ ম্যাচটি ছিল ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে কুইন্সটাউনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
আর বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্পিন আইকন আব্দুর রাজ্জাক টেস্ট ক্রিকেটে ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের শুরুটা করেছিলেন চট্টগ্রামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। একই ভেন্যুতে তিনি দেশের হয়ে সবশেষ ম্যাচটি খেলেছেন ২০১৪ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সাদা পোশাকে ১২ ম্যাচ খেলে পেয়েছেন ২৩ উইকেট।
আর রঙিন পোশাকে ২০০৪ সালে কলম্বোয় হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওয়ানড শুরু করা রাজ্জাকের শেষ ম্যাচটি ছিল ২০১৪ সালের ২৫ আগস্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ১৫৩ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ২০৭টি। ৩৪ টি-টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ৪৪টি উইকেট।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৮
এইচএল/এমআরএম