নিজেদের প্রথম ইনিংসে তামিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি সত্ত্বেও ২২০ রানেই সব উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলী একাই নেন ৫ উইকেট।
২৭৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে এক পর্যায়ে বিনা উইকেটে ১০০ রান তুলে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে বাকি ৬৪ রানেই পুরো ১০ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন টাইগার বোলাররা। শেষ সেশনের ১ ঘণ্টা ৫০ মিনিটেই ইংলিশদের ১৬৪ রানে গুটিয়ে দেন মেহেদি-সাকিবরা।
ম্যাচের আসল নায়ক অবশ্যই স্পিনাররা, বিশেষ করে মিরাজ, যাকে কিনা ওই সিরিজের আগে কেউ সেভাবে তার নামই শুনেনি। বিরতির আগ পর্যন্ত মনে হচ্ছিল ম্যাচটা ইংলিশদের দখলেই যাচ্ছে। দুই ইংলিশ ওপেনার বেন ডাকেট ও অ্যালিস্টার কুক বেশ গুছিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু আসল খেলা দেখালেন মিরাজ। বিরতির পর ১৯ বছর বয়সের অফ স্পিনারের বলেই ধরাশায়ী হন একের পর এক ইংলিশ ব্যাটসম্যান। দুই টেস্টের চার ইনিংসে তৃতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন এই তরুণ স্পিনার।
ইংলিশ ইনিংসের শুরুতে মেহেদির ঝড় আর লোয়ার অর্ডারে সাকিব আল হাসানের আঘাতে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা অনেকটা ‘টিউব ট্রেন’র মতো যাওয়া-আসায় ব্যস্ত থাকেন। শেষ পর্যন্ত ৭৭ রান খরচে ৬ উইকেট নেন মিরাজ। আর সাকিব নেন বাকি ৪ উইকেট। সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র হয়। আর মিরাজ নিজের অভিষেক সিরিজেই সিরিজ সেরা আর দ্বিতীয় ম্যাচে হন ম্যাচসেরা।
শেষ উইকেট হিসেবে ইংলিশ পেসার স্টিভেন ফিন যখন আউট হলেন টাইগাররা তখন তুমুল উদযাপনে ব্যস্ত, এদিকে ব্যাটসম্যান রিভিও নেওয়ার জন্য ক্রমাগত ইশারা করছেন। কিন্তু ফিন ভুলেই গিয়েছিলেন তাদের সব রিভিও শেষ। এমনই ভুলে যাওয়া এক হারের তেতো স্বাদ তাদের উপহার দিয়েছিল বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিল ইংলিশ মিডিয়া ও সাবেক ক্রিকেটাররা, সেই বাংলাদেশ তাদের এভাবে বিধ্বস্ত করতে পারে তা হয়তো তাদের চিন্তায়ই ছিল না।
টেস্ট ক্রিকেট এতো উন্মাদনা ছড়াতে পারে তা যে ভুলতেই বসেছিল এদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু সেদিন গ্যালারি ভর্তি দর্শকও যেন কিছুটা হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল। কি হলো তা অনেকে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। কিন্তু এই দলটি যে ওয়ানডেতে পরাশক্তি হয়ে উঠেছে, তাদের সামর্থ্যও আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে তার সত্যিকারের বহিঃপ্রকাশ ঘটল সেদিন।
সাকিবরা সেদিন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ‘মাইটি ইংলিশদের’ তুলোধুনা করে দেখিয়ে দিয়েছিলেন আমরা টেস্টেও ‘জায়ান্ট কিলার’। ক্রিকেটে টাইগারদের সেই অমূল্য পারফরম্যান্স ও ম্যাচ জয়ের গর্বের অনুভূতি তাই সাকিবের ‘স্যালুটে’ বিদ্যমান, যা বাংলাদশের স্পষ্ট আধিপত্যের চিহ্ন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৮
এমএইচএম/এমএমএস