তাই সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম টেস্ট ম্যাচে অভিষিক্ত হওয়ার দিনটি বর্ণিল করে রাখতে ব্যতিক্রমী আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অভিষেক টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখতে সিলেটবাসীকে মাঠে এসে টেস্ট ম্যাচ উপভোগ করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে এমন আহ্বান জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক শফিউল আলম নাদেল।
অভিষেক টেস্ট হলেও ক্রিকেটের রীতিনীতি অনুসারে খুব বেশি কিছু আয়োজনের সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভিষেক টেস্ট উপলক্ষে আমরা বেল নিয়ে এসেছি। এই বেল বাজিয়ে আম্পায়ার ম্যাচ শুরু করবেন।
অভিষেক ম্যাচ উপলক্ষ্যে করা স্যুভেনিয়রে সিলেটের ক্রিকেটের ইতিহাস, ঐতিহ্যসহ নানা বিষয় নিয়ে বিশেষ প্রকাশনা থাকছে বলেন তিনি।
এছাড়া টসে খেলার স্মারক কয়েন করা হয়েছে। যেটা দিয়ে ম্যাচের টস হবে। এছাড়া উভয় দলের ক্রিকেটার, কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের জন্য থাকছে বিশেষ স্মারক। অভিষেক টেস্টে দর্শকদের ক্রয় করা টিকিটটাও একটা ‘স্মারক’ বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো-সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অধীনে একটি ক্রিকেট একাডেমি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। বিভাগের ৪ জেলায় ক্রিকেটার হান্টিং শেষ হয়েছে। তাদের নিয়ে এক মাসের ক্যাম্প হবে। ৩ নভেম্বর বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অধীনে ক্রিকেট একাডেমির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
নাদেল বলেন, ‘স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ১৮ হাজার। অভিষেক টেস্ট ম্যাচকে ঘিরে দুদিন প্রচারণা চলবে। নগরে বর্ণাঢ্য র্যালীও বের করা হবে।
ক্রীড়াপ্রেমিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মাঠে কোনো ধরনের খাবার বা পানীয় নিয়ে আসবেন না। ছুড়া যায় এমন কিছু নিয়ে মাঠে প্রবেশ করা যাবে না। মাঠের মধ্যে খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা থাকবে। দর্শকরা চাইলে পতাকা বা ব্যানার নিয়ে আসতে পারবেন। মাঠের চারটি প্রবেশ পথে টিকেটের বুথ থাকবে। টিকেটের গায়ে প্রবেশের গেইটের নাম্বারও লিখা থাকবে। ’
তিনি বলেন, ‘স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের টিকিট ছাড়াই প্রবেশ করতে পারবে, তবে প্রথম দিন টিকিটধারী দর্শকদের মূল্যায়ন করতে গিয়ে এদিন শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করানো সম্ভব নয়। অবশ্য দ্বিতীয় দিন থেকে তাদেরকে টিকিট ছাড়া প্রবেশ করানো যায় কিনা, তা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবো। ’
নাদেল আরো বলেন, ‘অভিষেক টেস্টে সিলেটের সাবেক টেস্ট প্লেয়ারদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অনেকেই আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া প্রয়োজনীয় সকলকে আমরা আমন্ত্রণ করেছি। ’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সৌন্দর্য, আবাসন ব্যবস্থা ও যোগাযোগর দিক দিয়ে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম অনেক এগিয়ে। এই ভেন্যুর প্রতি বোর্ডের আন্তরিকতা আছে। আশা করছি, প্রতি সিরিজেই এখানে ম্যাচ থাকবে। তবে যতো বেশি ভেন্যুতে খেলা হবে, ততোই স্থানীয় পর্যায়ে ক্রিকেটের জন্য উপকার হবে। ’
২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেছিলেন। এই স্টেডিয়াম শুধুমাত্র ক্রিকেটের কথা মাথায় রেখেই নির্মাণ করা হয়েছে। অন্যান্য ভেন্যুর তুলনায় এ স্টেডিয়ামের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি। সাংবাদিকরাও শুরু থেকেই এ স্টেডিয়ামের বিষয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন, বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাফুফের কার্যনির্বাহী সদস্য ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম, সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মারিয়ান চৌধুরী মাম্মি, সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ তকরিমুল হাদী কাবী, সাবেক কোষাধ্যক্ষ শহীদ আহমদ জুয়েল, সদস্য ইমরান আহমদ, পাপলু দত্ত, বিভাগীয় ব্যাডমিন্টন কমিটির চেয়ারম্যান কামরান আহমদ, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জয়দ্বীপ দাস সুজক, মিডিয়া ম্যানেজার ফরহাদ কোরেশী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৮
এনইউ/এমএমএস