বাংলাদেশ দলকে উৎসাহ যোগাতে গ্যালারিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি লক্ষণীয়। মাঠে শিক্ষার্থীদের পদচারণা রোববার থেকে।
লাল-সবুজের গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী। স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ড্রেস পরে আসায় সাধারণ দর্শক থেকে তাদের আলাদা করে চেনা যায় অতি সহজে। খেলার পুরোটা সময় জুড়ে গ্যালারিতে থেকে দিনভর উৎসাহ যোগাতে দেখা গেছে তাদের।
শিক্ষার্থীদের অনেকে পুরো খেলা উপভোগ করতে মাঠ থেকে বের হননি। বরং ভুখা পেটে বাংলাদেশের খেলা দেখেছেন। তারা দুপুরের হালকা নাস্তা সেরেছেন বাড়ি থেকে আনা টিফিনের টাকায়। তারপরও থেমে ছিলনা স্লোগান।
টেস্টের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ যখনই কোনো উইকেট লাভ করেছে, তখন গ্যালারিতে উচ্ছ্বাস করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। সাধারণ দর্শক ও শিক্ষার্থীদের মুখে মুশফিক, রিয়াদ, লিটন আর ১০ উইকেট লাভ করা তাইজুলের নামে স্লোগানে মুখরিত ছিল।
খেলা দেখতে মাঠে আসা সিলেট সেন্ট্রাল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জাবের আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম টেস্টের সাক্ষী হতেই তাদের ১১ বন্ধু মিলে মাঠে আসা। তাদের একটাই চাওয়া প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ জয়লাভ করুক। সেই মানসিকতা থেকে মাঠে মুশফিকদের সমর্থন জানাতে এসেছেন তারা।
স্টারলাইট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র নাঈম হোসেন ও জিয়াউর রহমান বলেন, তারাও ১১ ফ্রেন্ড মিলে বাংলাদেশ দলকে সমর্থন দিতে মাঠে এসেছেন। তবে গত দিন বাংলাদেশ খারাপ খেললেও ঘুরে দাঁড়াবে বলে আত্মপ্রত্যয়ী নাঈম।
বাংলাদেশকে নিয়ে তার এমন আত্মবিশ্বাসের কারণ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। তাই বাংলাদেশ জিতবে এমনটি প্রত্যাশা তাদের। সিলেট এইডেড স্কুলের ছাত্র সাব্বির আহমদ বলেন, এই মাঠে স্কুল লিগ ক্রিকেট খেলেছি। আর এখানে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের প্রথম টেস্ট ম্যাচ হচ্ছে। একজন ক্ষুদে ক্রিকেটার হয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হতে খেলা দেখতে এসেছি। টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ কিছুটা খারাপ করলেও ঘুরে দাঁড়াবে এমন আশাবাদি তিনি।
গ্যালারিতে বসে খেলা দেখতে আসা সিলেট ব্লু বার্ড স্কুল এণ্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র নাসরিন জাহান কনিকা ও তার কয়েক বান্ধবীরা জানান, বাংলাদেশ দলের খেলা, তাই দেখতে এসেছি।
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ স্কুল থেকে আসায় তাদের ব্যাগ নিয়ে আসতে হয়। কিন্তু স্টেডিয়ামে এসে ব্যাগ নিয়ে ঢোকা নিষেধ থাকায় বাইরে ব্যাগ রেখে আসতে হয়। এ জন্য ব্যাগ প্রতি ৩০ টাকা করে দিতে হচ্ছে।
সরেজমিন স্টেডিয়ামের ৪ নং ফটকের বাইরে দেখা যায়, স্থানীয় যুবকরা মিলে ব্যাগ রাখার জন্য উন্মুক্ত স্থান তৈরি করেছেন। যেখানে বাঁশের বেড়া ঘেরা কিছু স্থানে মাটিতে ব্যাগ রেখে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। আর খেলা দেখার মানসিকতায় শিক্ষার্থীরা ব্যাগ রাখতে টিফিনের টাকা ব্যয় করেছেন। এই ঘটনার সঙ্গে গেট কিপার ও পুলিশ জড়িত থাকার কথাও জানান শিক্ষার্থীরা।
তাদের অভিযোগ বাংলাদেশ ক্রিকেটর বোর্ড (বিসিবি) যখন শিক্ষার্থীদের বিনা টিকিটে খেলা দেখার সুযোগ করে দিয়েছে, তখন তাদের লোকজনের তত্ত্বাবধানে ব্যাগ রাখলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘন্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৮
এনইউ/এমএমএস