সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দলকেও হারিয়েছিল টাইগাররা, সেই দলকেই জিম্বাবুয়ের মতো ক্ষয়িষ্ণু দলের কাছে হারতে হবে এ যে সমর্থকদের কল্পনাতেও ছিল না। তাছাড়া এটি ছিল টেস্ট ভেন্যু হিসেবে সিলেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেক ম্যাচ।
এই মাঠে আগে টেস্ট না খেললেও ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি এমনকি বিপিএল খেলার অভিজ্ঞতা আগে থেকেই ছিল বাংলাদেশ দলটির অধিকাংশ সদস্যের। সেদিক থেকে দেখলে জিম্বাবুয়ের জন্য এটা একেবারেই আনকোরা এক কন্ডিশন। আর সেই আনকোরা কন্ডিশনে বাংলাদেশকে রীতিমত লজ্জায় ভাসালো মাসাকাদজাবাহিনী।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে বেশ শান্ত দেখাচ্ছিল। হয়তো তিনি এমন কিছু হবে ভাবতেই পারেননি। তবে কোনো অজুহাত দাঁড় করাতে চাইলেন না। মেনে নিলেন নিজেদের ভুল হিসাবের কথা।
‘আমরা প্রথম ইনিংসে ভালো পুঁজি সংগ্রহ করতে পারিনি। উইকেট ভালো ছিল, এটা নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। আমরা অনেক বেশি শট খেলেছি, আমরা ভালো করে পিচ পড়তে পারিনি। ’
তবে হাতে আরও একটি ম্যাচ আছে। অর্থাৎ, ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকছে। সম্মান রক্ষার্থে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ঝড়ে পড়ল মাহমুদউল্লাহ’র কন্ঠ থেকে।
‘আমাদের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। ’
ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে একজনই জ্বলে উঠেছেন। তিনি বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১১ উইকেট তুলে নিয়েও পরাজিত দলের সঙ্গী তিনি। তাইজুলের প্রশংসা করলেন মাহমুদউল্লাহও, ‘তাইজুল দারুণ খেলেছে, সে জয়ী দলে থাকার যোগ্য ছিল। ’
জিম্বাবুয়ের কাছে জয়টার মাহাত্ম কত বেশি তা বুঝতে হলে এই তথ্যগুলোই যথেষ্ট- ২০০১ সালের পর বিদেশের মাটিতে প্রথম আর সবমিলিয়ে বিদেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের এটি মাত্র তৃতীয় টেস্ট জয়।
সর্বশেষ যেবার তারা বিদেশের মাটিতে টেস্ট জিতেছিল, সেই দলে ছিল অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার, হিথ স্ট্রিকদের মতো তারকারা। সেই হিসেবে এই দলটি একেবারেই দুর্বল। অথচ এদের কাছেই হার মানতে হলো টাইগারদের।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যতোই বলুন ফের ঘুরে দাঁড়ানোর কথা, সিলেটের মাঠে এই লজ্জার হার বহুদিন সমর্থকদের মনে কাঁটা হয়ে বিঁধবে, একথা বলাই যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৮
এমএইচএম/এমএমএস