ঢাকা, শনিবার, ০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

হতাশ হয়ে ফিরলেন দর্শক

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৮
হতাশ হয়ে ফিরলেন দর্শক বাংলাদেশের হারে হতাশ দর্শক-ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: সকাল থেকে মেঘাচ্ছন্ন সিলেটের আকাশ। না রোদ, না বৃষ্টি-প্রকৃতির এমন বিরূপ মনোভাব যেনো বাংলাদেশ দলেরই হারের ইঙ্গিত।

চায়ের দেশে বাংলাদেশ দল প্রথম টেস্ট জিতবে, এমন প্রত্যাশা নিয়ে মঙ্গলবার সিলেটের মাঠে ছিল দর্শকের ঢল। সাধারণত ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এমন দর্শক সমাগম ঘটে থাকলেও টেস্ট ম্যাচে এতো দর্শক! যেনো এ অঞ্চলের মানুষের ক্রিকেট প্রেমের প্রমাণ করে।

খেলা শেষ হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্তও দর্শকদের মাঠে প্রবেশ করতে দেখা যায়। অর্থাৎ শেষ উইকেটেও বাংলাদেশ দলকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন দর্শকরা। কিন্তু যা হওয়ার, তাই হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বিমুখ হয়ে ফিরেছেন দর্শকরা।

ইতিহাসের সাক্ষী হতে স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসা দর্শকরা চোখের সামনেই জিম্ববুয়ের কাছে বাংলাদেশ দলের হার ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত, হতাশারও বটে। সিলেটের মাঠে প্রথম টেস্ট ম্যাচে এমন সাক্ষী হয়ে থাকতে হবে তাদের কে জানতো?

বেলা সোয়া ২টার দিকে মিললো রোদের দেখা। ততক্ষণে গুড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ দল। দর্শকরাও ফিরেছেন বাড়ির পথে।

চায়ের দেশে মধ্যাহ্ন বিরতির পর চা বিরতির আগেই ৫ দিনের টেস্ট চার দিনে এসে শেষ হয়ে গেলো কেবল ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ে। ম্যাচ শেষেও সেই দায়ভার নিয়ে দু:খ প্রকাশ করেছেন স্বাগতিক দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

জিম্বাবুয়ের দেওয়া ৩২১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে তৃতীয় দিনে খেলতে নামা বাংলাদেশ ২৬ রান করে আলোস্বল্পতায় ম্যাচের ইতি ঘটায়। ৪র্থ দিনের খেলায় সবক’টি উইকেট হাতে নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশকে সমর্থন জানাতে মাঠে আসেন দর্শকরা।

সকাল সাড়ে ৯টায় খেলা শুরু হলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে চার পাশের গ্যালারি। এতো দর্শক দেখে মনে হবে যেনো ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ চলছে। কিন্তু না, সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশকে সমর্থন জানাতে লোকে লোকারণ্য ছিল স্টেডিয়াম গ্যালারি।

সিলেট ইউনিভার্সিটি গেট এলাকা থেকে আসা রাজিউল হোসেন বলেন, সব উইকেট রেখে ৪র্থ দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। আমরা ধরে নিয়েছিলাম টাইগাররা জিতবে। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি তারা।

স্কুল লিগে এই মাঠেই ক্রিকেট খেলেছেন শিক্ষার্থী জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, আমরা ধরে নিয়েছিলাম বাংলাদেশ জিতবে। এ জন্য খেলোয়াড়দের অনুপ্রেরণা দিতে মাঠে আসি। কিন্তু ভাল পার্টনারশীপ না করায় দল হাররো।

সিলেটের মাঠে অভিষেক টেস্ট ম্যাচে প্রথম ইনিংসে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির পর পর্যন্ত ১১৭.৩ ওভার খেলে ২৮২ রান করে। দ্বিতীয় দিন বিকেলে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের ইনিংস ৫১ ওভারে ১৪৩ রানেই গুড়িয়ে যায়।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ে ৬৫.৪ ওভারে ১৮১ রান যোগ করে ৩২০ রানের লিড নিয়ে অলআউট হয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে সোমবার বিকেলে ব্যাট করতে নামে সফরকারী দল। সোমবার বিকেলে উদ্বোধনী জুটি লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস জিম্বাবুয়ের বোলারদের ভালই সামলে নিচ্ছিলেন। ওইদিন আলো স্বল্পতায় খেলা শেষ হয়ে যায়।

মঙ্গলবার পূণরায় খেলা শুরু হলে মধ্যাহ্ন বিরতির পর চা বিরতির আগেই ১৬৯ রানে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের সবাইকে সাজঘরে ফেরালো জিম্বাবুয়ে। জয় পায় ১৫১ রানে।

শেষ বিকেলে রোদের ন্যায় অলআউট হওয়ার আগে যেনো আলোর জলকানি দিলেন আরিফুল। ৩৭ বলে আসে ৩৮ রান করা আরিফুল একটি বল তুলে মারতে গেলে সোজা উপরে উঠে যায়। বলটি তালুবন্দি করে বাংলাদেশ দলে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন জিম্ববুয়ের উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাবা। সেই সঙ্গে মন ভাঙা দর্শকরা গ্যালারি ছেড়ে ফিরে বাড়ির পথে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘন্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৮
এনইউ/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।