বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর প্রথমবার সাদা পোশাকে ভারতের বিপক্ষে নাইমুর রহমান দুর্জয়ের নেতৃত্বে মাঠে নামে বাংলাদেশ। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের গতিপথ বদলে দেয়।
টেস্ট মর্যাদার আবেদন করা হলে সে সময়ের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর হাত ধরে ২০০০ সালের ২৬ জুন টেস্ট খেলার মর্যাদা অর্জন করে বাংলাদেশ।
এখন পর্যন্ত খেলা ১০৯টি টেস্ট ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ১০ ম্যাচে। হেরেছে ৮৩টিতে। আর ড্র-তে শেষ হয়েছে ১৬ ম্যাচ।
জয় পাওয়া ১০ টেস্টের মধ্যে ৬টি জয় দেশের মাটিতে। বাকি ৪টি বিদেশের মাটিতে। প্রথম টেস্টের মাত্র পাঁচ বছর পরই চট্টগ্রামের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় জয়ের জন্য অপেক্ষা করতে আরও চার বছর।
সবশেষ গেলো বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পায় টাইগাররা। বাকি নয় জয়ের পাঁচটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, দুটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আর একটি করে ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
টেস্ট ক্রিকেটে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক তামিম ইকবাল (৫৬ ম্যাচে ৪০৪৯ রান)। সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি তারই (৮টি)। তবে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসটি নিজের করে রেখেছেন সাকিব আল হাসান। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২১৭ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন।
বল হাতেও এগিয়ে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিকও সাকিব। তার নামের পাশে আছে ৫৬ ম্যাচে ১৯৬ উইকেট। সাকিব ছাড়া দেশের হয়ে একমাত্র মোহাম্মদ রফিকের নামের পাশেই আছে ১০০ বা এর বেশি টেস্ট উইকেট। ৩৩ টেস্টে রফিকের উইকেট ১০০টি।
দেশকে সবচেয়ে বেশি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম (৩৪টি)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা হাবিবুল বাশারের। দেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে মাঠে নেমেছেন মুশফিক (৬৩টি ম্যাচ)। এই ১৮ বছরে সাফল্যের হার কম হলেও অর্জনটা নেহায়েত কম না। অভিষেক টেস্টেই ১৪৫ রানের ইনিংস খেলে চালর্স বানারম্যান ও ডেভ হটনের পাশে নিজের নাম লেখান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। টেস্ট ক্রিকেটের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরি করেন বুলবুল।
টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের রেকর্ডটি আছে বাংলাদেশের মোহাম্মদ আশরাফুলের নামের পাশে। ২০০১ সালে টেস্ট অভিষেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৭ বছর ৬৩ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করেন তিনি। সবচেয়ে কম বয়সে ১০ উইকেটের রেকর্ডটিও বাংলাদেশের এনামুল হক জুনিয়রের। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১২ উইকেট নেওয়া ম্যাচে এনামুলের বয়স ছিল ১৮ বছর ৪০ দিন।
এছাড়া একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও হ্যাটট্রিকের রেকর্ড আছে সোহাগ গাজির। ২০১৩ সালে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ইতিহাসের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি গড়েন তিনি। একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেন সাকিব। ২০১৪ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি এবং ম্যাচে ১০ উইকেট নেন সাকিব।
এত এত অর্জন থাকা দলটির খারাপ রেকর্ডও কম নেই। টানা ম্যাচ হারার রেকর্ডে বাংলাদেশ ২০০১ সাল থেকে শুরু করে ২০০৪ সাল পর্যন্ত টানা ২১ টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ। অভিষেক থেকে শুরু করে ২০০৪ সালে ভারত সিরিজ পর্যন্ত টানা ১৬টি সিরিজে হারে বাংলাদেশ। টানা সিরিজ হারের বিশ্ব রেকর্ড এটাই। এমনকি ২০০৫ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত টানা ১১ সিরিজ হেরে দুইয়েও আছে বাংলাদেশের নাম।
এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি শূন্য খেলার রেকর্ডে পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের সঙ্গে আছে বাংলাদেশের নাম। ২০০২ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ছয় ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হন। কোনো রান না করেই প্রথম ৩ উইকেট হারানো পঞ্চম দল বাংলাদেশ।
ভালো-খারাপ মিলিয়েই একটু একটু করে পথ চলে ১৯-তে পা দিয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের ১১০ তম ম্যাচ খেলতে রোববার (১১ নভেম্বর) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৮
এমকেএম/এমএমএস