প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি না মুমিনুল। দলীয় স্কোরে মাত্র ৩ রান যোগ করে তারপরই ফেরেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১৩ রানেই দুই ওপেনারকে হারায় স্বাগতিকরা। ব্যক্তিগত ২ রানে জোমেল ওয়ারিকানের বলে বোল্ড হন ইমরুল। আর ১১ রান করে রোস্টন চেজের বলে ব্র্যাথওয়েটকে ক্যাচ দেন সৌম্য।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৩২৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে সৌম্য সরকারের ক্যাচে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান। আর এরইমধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ইনিংসে ২৪৬ রানে বেঁধে ৭৮ রানের লিডও পেল টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৩২৪ রান করে। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শেন ডোওরিচ ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
অভিষেকেই বাজিমাত করেন স্পিনার নাঈম হাসান। পাঁচ উইকেট নিয়ে ঢুকে গেছেন রেকর্ডের তালিকায়। সর্বশেষ জোমেল ওয়ারিকানকে বোল্ড করে ষোলকলা পূর্ণ করেন এই তরুণ। এর আগে একই ওভারের তৃতীয় ও ষষ্ঠ বলে দেবেন্দ্র বিশুর পর কেমার রোচকেও এলবির ফাঁদে ফেলে নিজের চতুর্থ উইকেট দখল করেন এই ডানহাতি।
এর আগে উইকেটের দেখা পান মেহেদি হাসান মিরাজ। ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে ওঠা শিমরন হেল্টমায়ারকে নিজের ১০ম ওভারে ফেরান মিরাজ। ৪৭ বলে ৬৩ রান করা হেটমায়ার স্পিনার মিরাজের বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
দলীয় ৩১ রানে প্রথম তিন উইকেট হারানোর পর ৭৭ ও ৮৮ রানে ক্যারিবীয় শিবিরে জোড়া আঘাত করেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা নাঈম হাসান। ৩১ রান করা রোস্টন চেজকে ইমরুল কায়েসের ক্যাচে ফেরান তিনি। পরে সুনীল অ্যামব্রিসকে (১৯) এলবির ফাঁদে ফেলেন।
এর আগে ১১তম ওভারে তাইজুল ইসলামের বলে এলবির ফাঁদে পড়ে মাঠ ছাড়েন ১৪ রান করা কাইরান পাওয়েল। পরের ওভারেই প্রথম বল করতে এসে নতুন ব্যাটসম্যান শাহি হোপকে বোল্ড করেন সাকিব আল হাসান। একই ওভারের শেষ বলে ১৩ রান করা অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকেও ফেরত পাঠান সাকিব।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ৩২৪ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। দ্বিতীয় দিন মাত্র ৯ রান যোগ করতেই শেষ দুটি উইকেট হারায় টাইগাররা। অভিষিক্ত নাঈম হাসান ২৬ ও মোস্তাফিজুর রহমান শূন্য রানে জোমেল ওয়ারিকনের বলে আউট হলে ৪ উইকেট লাভ করেন এই ক্যারিবীয় স্পিনার। তাইজুল ইসলাম ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন।
মুমিনুল হকের সেঞ্চুরি ও টেলএন্ডারদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে প্রথম দিন শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৫ রান করেছিল বাংলাদেশ।
আগের দিনের অভিষিক্ত নাঈম হাসান ২৪ ও তাইজুল ইসলাম ৩২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
দীর্ঘদিন পর টেস্ট দলে ফেরা সৌম্য সরকারের ব্যর্থতায় শুরু করে টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুর বিপর্যয় পুষিয়ে দেন ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হক। ১০৪ রানের জুটি গড়েন তারা।
কায়েস ৪৪ রানে বিদায় নিলেও ক্যারিয়ারের অষ্ঠম সেঞ্চুরি করে বেশ কয়েকটি রেকর্ডের মালিক হন মুমিনুল। শেষ পর্যন্ত তিনি ১৬৭ বলে ১০টি চার ও একটি ছক্কায় ১২০ রানে কেমার রোচের বলে বিদায় নেন। দলের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ফিরলেও ভালো কিছু করতে পারেননি (৩৪)। ব্যর্থতার খাতায় নাম লেখান মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও।
তবে শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজ (২২), নাঈম ও তাইজুলের ব্যাটে তিনশ রানের কোটা পার করে বাংলাদেশ।
ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে প্রথম দিন শেনন গ্যাব্রিয়েল ৪টি উইকেট নেন। জোমেল ওয়ারিকন ২টি এবং দেবেন্দ্র বিশ ও রোচ একটি করে উইকেট পান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৮
এমকেএম