আগে ব্যাটিং করে ঢাকার সামনে ১৫৯ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল সিলেট। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় ঢাকা।
দুই ওপেনারকে হারানো ঢাকা দলীয় ৩৭ রানে হারায় রনি তালুকদারের (১৩) উইকেট। এরপর ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন সাকিব। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। মাঝে ১৫ বলে ১৯ রানের ছোট ইনিংস খেলে ইরফানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ডারউইশ রাসোলি। তবে আর কোনো উইকেটের পতন না ঘটতে দিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন সাকিব-রাসেল।
ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আজ বিধ্বংসী রূপে দেখা দেন। খেলেন ৪১ বলে অপরাজিত ৬১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। এই ইনিংসটি ৮ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো। তবে আরও বড় ঝড় তোলেন রাসেল। মাত্র ২১ বলে অপরাজিত ৪০ রানের ইনিংস খেলেছেন এই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান। তার এই ইনিংসে ২ চারের বিপরীতে ছক্কা ৪টি। এই দুজনের ঝড়ে ১৭ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ঢাকা।
বল হাতে সিলেটের প্রায় সব বোলারই রান বিলিয়েছেন অকাতরে। একমাত্র নেপালি স্পিনার সন্দ্বীপ লামিচানে ৪ ওভারে ২৭ রান খরচ করে ১ উইকেট নিয়ে কিছুটা সাফল্যের দেখা পেয়েছেন। ইরফান ২ উইকেট নিলেও খরচ করেছেন ৩৮ রান। বাকিদের অবস্থা তো আরও সঙ্গিন।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সিলেট পর্বে একদিন বিরতির পর শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) মাঠে গড়ায় ম্যাচ। দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি ঢাকা ডায়নামাইটস ও স্বাগতিক সিলেট সিক্সার্স। সিলেট অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের ৬৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫৮ রান।
টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে শুরুটাও দারুন করে স্বাগতিক সিলেট সিক্সার্স। ওপেনিংয়ে নামা সাব্বির রহমান ও লিটন দাস শুরু থেকেই হাত খুলে খেলা শুরু করেন। তবে দুজন মিলে ৩৮ রান তোলার পর ফেরেন লিটন। ঢাকা অধিনায়ক সাকিবের বলে আম্পায়ার নট আউট ঘোষণা করলেও রিভিউ নেয় ঢাকা। আর তাতেই ১৪ বলে ২১ রান করে ফেরেন লিটন। ইনিংসে ৪টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান তিনি।
লিটন ফেরার মাত্র এক বল পরই ফেরেন আরেক ওপেনার সাব্বিরও। আন্দ্রে রাসেলের বলে সীমানায় রনি তালুকদারের হাতে ধরা পড়েন তিনি। আউট হয়ে ফেরার আগে ১৬ বলে ১১ রান করেন সাব্বির।
বড় স্কোরের আভাস দিয়েও বেশি সময় উইকেটে থাকতে পারেননি আফিফ হোসেন। ১৭ বলে ১৯ রান করে অ্যান্ড্রিউ বির্চের বলে উইকেটের পেছনে নূরুল হাসান সোহানের হাতে ধরা পড়ে ফেরেন তিনি। ১৯ রানের এই ইনিংসে দুটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। অলক কাপালি শূন্য রানেই ফেরেন রুবেল হোসেনের বলে।
৬ বলে ৬ রান করে সুনীল নারাইনের বলে বোল্ড হয়ে দলকে বেশ সমস্যায় ফেলে যান নিকোলাস পোরান।
ডেভিড ওয়ার্নারের কাছ থেকে সিলেট সমর্থকরা যা আশা করছিলেন এতদিন, টানা দুই ম্যাচেই তাই দেখালেন অস্ট্রেলীয় এই ব্যাটসম্যান। গেল ম্যাচে ৬১ রানের পর এ ম্যাচেও করলেন ৬৩ রান। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে ৪৩ বলে খেলেন ৬৩ রানের ইনিংস। যার মধ্যে আছে ৮টি চার ও একটি ছক্কার মার। তবে ইনিংসের এই পর্যায়ে সাকিবের বলে নাঈমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সিলেট অধিনায়ক।
তবে এক প্রান্ত আগলে রাখেন জাকের আলী। অবশ্য ১৮ বলে ২৫ রান করে বির্চের বলে রুবেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এক রান করে তাসকিন আহমেদও ফেরেন বির্চের বলে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৮ রান তোলে সিলেট সিক্সার্স।
ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন বল আর ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করা সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশ সময় ১৭৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯
এমএইচএম