ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা তালিকায় মুশফিক-রিয়াদ-সাকিব

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৯
ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা তালিকায় মুশফিক-রিয়াদ-সাকিব টাইগার তিন গ্রেটের উদযাপন

ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন-ক্রিকইনফো’র বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্সের তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের তিন সিনিয়র ক্রিকেটার। ব্যাটিংয়ে মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর বোলিংয়ে স্থান পেয়েছেন সাকিব আল হাসান।

আইসিসি’র বর্ষসেরা পুরস্কারের সঙ্গে ‘ইএসপিএন-ক্রিকইনফো অ্যাওয়ার্ড’র এই অংশে কিছু পার্থক্য আছে। এখানে মূলত টি-টোয়েন্টির সেরা পারফরম্যান্স হিসেবে ধরা হয়েছে।

অর্থাৎ, একটি নির্দিষ্ট ম্যাচে কার পারফরম্যান্স সেরা সেটিই নির্বাচিত করা হবে। এখানে শুধু রান করা নয়, বরং ম্যাচের সেরা পারফরম্যান্সই বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

গত বছর নিদাহাস ট্রফিতে লঙ্কানদের ছুঁড়ে দেওয়া ২১৫ রানের বিশাল লক্ষ্য পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। এর আগে সর্বোচ্চ ১৬৫ রানের টার্গেট পেরোনোর অভিজ্ঞতা থাকলেও দুইশ’ রানের বেশি লক্ষ্য পাড়ি দেওয়া মোটেই সহজ কাজ নয়। কিন্তু সেই কঠিন কাজটি সহজ করে দেন মুশফিকুর রহিম।

মুশফিক যখন ক্রিজে নামেন বাংলাদেশের স্কোর তখন ১০০/২। ক্রিজে নেমে পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ওভার পিছু প্রয়োজনীয় রান কখনোই হাতের বাইরে যেতে দেননি তিনি। প্রচুর সিঙ্গেল নেওয়ার পাশাপাশি ৫টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকিয়ে মাত্র ৩৫ বলে অপরাজিত ৭২ রান করেন তিনি।
মুশফিকের উদযাপনশেষ চার ওভারে একসময় ৪০ রান দরকার ছিল, লঙ্কান বোলার জীভান মেন্ডিসকে ছক্কা হাঁকিয়ে সেই লক্ষ্য একসময় ৮ বলে ১৬ রানে নিয়ে যান মুশফিক। নুয়ান প্রদীপকে স্লগ শটে মিড উইকেটে ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ ওভারের চার বলেই বাকি রান তুলে নেন তিনি।

নিদাহাস ট্রফির আরেক ম্যাচের নায়ক মাহমুদউল্লাহ এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন। ওই ম্যাচে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সামনে ১৬০ রানের টার্গেট দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ওই ম্যাচে তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি সত্ত্বেও টাইগারদের জয়ের পথ ছিল বন্ধুর। কঠিন পথ পাড়ি দিয়েই ৫ ওভারে ৫০ রান থেকে একসময় লক্ষ্য নামিয়ে আনেন শেষ ওভারে ১২ রান পর্যন্ত।

রান আউটের খাড়ায় পড়ে সঙ্গীকে হারান মাহমুদউল্লাহ। এরপর আবার নো বল নিয়ে আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ানো, দুই দলের খেলোয়াড়দের বিবাদে জড়িয়ে পড়া আর আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অধিনায়ক সাকিবের খেলোয়াড়দের মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে আসার আহবান মিলিয়ে এক টানটান উত্তেজনার মুহূর্ত।
মাহমুদুল্লাহ উদযাপনসব ছাপিয়ে শেষ চার বলে ১২ রান প্রয়োজন। কিন্তু এমন এক মুহূর্তেও নিজের মনোযোগ ধরে রেখে প্রথম বলে চার, পরের বলে মিস ফিল্ডিংয়ের সুযোগে ২ রান এবং এরপর দুর্দান্ত এক ফ্লিকে ছক্কা হাঁকিয়ে পুরো দল আর পুরো দেশকে নাগিন ড্যান্সে উদযাপন করানো এত সহজ কাজ নয়।

সেরা টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং পারফরম্যান্সে আরও স্থান পেয়েছে ত্রিদেশীয় সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অপরাজিত ১০৩ রান, একই সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডার্সি শর্টের ৭৬ রান, ভারতের বিপক্ষে হেনরি ক্লাসেনের ৬৯ রান, বাংলাদেশের বিপক্ষে দিনেশ কার্তিকের অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস।  

এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফখর জামানের ৯১ রান, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লোকেশ রাহুলের অপরাজিত ১০১ রান, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রোহিত শর্মার অপরাজিত ১০০ রান ও ভারতের বিপক্ষে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ৪৬ রানের ইনিংস।

ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি বোলিং পারফরম্যান্সের তালিকায় স্থান পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাকিব আল হাসানের ২০ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি। গত বছরের শেষ দিকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ম্যাচ জেতানো বোলিং উপহার দেন সাকিব। টি-টোয়েন্টিতে মাত্র তৃতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে সাকিবের ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়ার দিনে সিরিজে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ।
সাকিবের উইকেট পাওয়ার উল্লাসওই ম্যাচে সাকিব আঘাত হানার আগে পাওয়ার প্লেতে ৫৯ রান তুলে ফেলেছিল উইন্ডিজ। সাকিব আক্রমণে এসেই উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরানকে তুলে নেন। এরপর সাকিবের করা ১১তম ওভারে শিমরন হেটমায়ার ও ড্যারেন ব্রাভো তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। সাকিবের চতুর্থ শিকার কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। তিনি অবশ্য স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে বিদায় নেন। সাকিবের পরের ওভারেই ফ্যাবিয়েন অ্যালেন বিদায় নিলে ১৩৮ রানে ৭ উইকেট হারায় উইন্ডিজ।

বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি বোলিংয়ের তালিকায় আরও স্থান পেয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শাদাব খানের ১৯ রানে ২ উইকেট, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে অ্যাস্টন অ্যাগারের ২৭ রানে ৩ উইকেট, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভুবনেশ্বর কুমারের ২৪ রানে ৫ উইকেটের কীর্তি।

এছাড়া পাকিস্তানের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে বিলি স্ট্যানলেকের ৮ রানে ৪ উইকেট, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কুলদিপ যাদবের ২৪ রানে ৫ উইকেট, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জো ডেনলির ১৯ রানে ৪ উইকেট, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শাহিন আফ্রিদির ২০ রানে ৩ উইকেট, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইমাদ ওয়াসিমের ২০ রানে ৩ উইকেট ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্রুনাল পান্ডিয়ার ৩৬ রানে ৪ উইকেটের অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্সও আছে এই তালিকায়।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।