ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

শেষ বিকেলের স্বস্তি মোসাদ্দেক-তাইজুল জুটি

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৯
শেষ বিকেলের স্বস্তি মোসাদ্দেক-তাইজুল জুটি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত

১৪৬ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলকে খাঁদের কিনারা থেকে টেনে তোলার কাজটা আপাতত সেরে রাখলেন মোসাদ্দেক হোসেন ও তাইজুল ইসলাম জুটি। যদিও ১৪৮ রানে পিছিয়ে থাকা দলের জন্য ৪৮ রানের জুটি আহামরি কিছু নয়। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় এই অবিচ্ছিন্ন ছোট জুটিই বাংলাদেশের শেষ বিকেলের স্বস্তি। তৃতীয় দিনে এই জুটির দিকেই তাকিয়ে থাকবে স্বাগতিক সমর্থকরা।

শুক্রবার (০৬ সেপ্টেম্বর) জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনের খেলায় নিজেদের প্রথম ইনিংসে আফগানদের ৩৪২ রানের বিশাল সংগ্রহের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। ২ উইকেট হাতে রেখে এখনও সফরকারীদের চেয়ে ১৪৮ রানে পিছিয়ে আছে সাকিববাহিনী।

৪৪ রানে অপরাজিত আছেন মোসাদ্দেক। আর গুরুত্বপূর্ণ ১৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত তাইজুল। রান যাই হোক, ৫৫ বল মোকাবিলা করে দিনের শেষে পার্শ্ব-নায়কের ভূমিকায় ছিলেন এই লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান।

এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ও ব্যক্তিগত শূন্য রানে ইয়ামিন আহমেদজাইয়ের বলে বিদায় নেন ওপেনার শাদমান ইসলাম। উইকেটরক্ষক আফসার জাজাইকে ক্যাচ দেন এই বাঁহাতি। লিটন দাসের সঙ্গে হালকা জুটি গড়ে দলীয় ২০তম ওভারে আর টিকতে পারেননি সৌম্য সরকার। মোহাম্মদ নবীর বলে ব্যক্তিগত ১৭ রানে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি।

রশিদ খানের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন লিটন। ৬৬ বলে ৩টি চার ও এক ছক্কায় ৩৩ করেন এই ডানহাতি। এরপর আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন দলের দুই সিনিয়র ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। রশিদ খানের একই ওভারে দু’জনেই মাঠ ছাড়েন। সাকিবকে (১১) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে মুশফিককে ক্যাচে পরিণত করেন রশিদ। এরপর দলের বিপদ বাড়িয়ে রশিদের বলেই বোল্ড হয়ে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৭)।

১০৪ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশের ইনিংসে একমাত্র লড়াই উপহার দিয়েছিলেন মুমিনুল হক। ফিফটির দেখাও পেয়েছিলেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম ফিফটি তুলে নিতে ৬৯টি বল খেলেছেন মুমিনুল। বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ৮টি। কিন্তু মোহাম্মদ নবীর বলে আগ্রাসী শট খেলতে  গিয়ে আসগর আফগানের হাতে ক্যাচ তুলে দিলে শেষ হয় তার লড়াকু ইনিংস।

মুমিনুলের বিদায়ে ভয়াবহ চাপে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশের সামনে উঁকি দিচ্ছিল ফলো অন’র লজ্জা। তবে প্রথম ইনিংসে ১৪৩ রান তোলার পরই ফলো অন’র লজ্জা এড়াতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।  

রশিদ খানের করা ইনিংসের ৪৯তম ওভারে ২ রান নিয়ে দলকে ফলো অন’র লজ্জা থেকে রক্ষা করেন লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন। কিন্তু ৩ ওভার পরে তার সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজের (১১) বিদায় অন্য এক লজ্জার মুখোমুখি করে স্বাগতিকদের। তবে দিনটাকে আরও খারাপ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেছেন মোসাদ্দেক-তাইজুল জুটি।

বল হাতে বাংলাদেশের মূল সর্বনাশ করেছেন রশিদ খান।  আফগান অধিনায়ক একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। মোহাম্মদ নবীর দখলে গেছে ২ উইকেট। আর ১টি করে উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন ইয়ামিন আহমেদজাই ও কাইস আহমেদ।

এদিকে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে আরও ৭১ রান যোগ করে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৪২ রানে থামে আফগানিস্তান। দ্বিতীয় দিন আসগর আফগান সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেও, রশিদ খানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩০০ রান পেরিয়ে যায় সফরকারীরা।

দিনের শুরুতেই আসগর আফগানকে ফিরিয়ে দেন তাইজুল ইসলাম। সেঞ্চুরি বঞ্চিত সাবেক এই অধিনায়ক ১৭৪ বলে ৩টি চার ও দুটি ছক্কায় ৯২ করে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দেন। পরে ৪১ রানে থাকা আফসার জাজাইকে বোল্ড করেন এই বাঁহাতি।

কাইস আহমেদকে মুমিনুল হকের ক্যাচ বানিয়ে নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান। ইয়ামিন আহমেদজাইকেও ফেরান সাকিব। তবে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা আফগান অধিনায়ক রশিদ খানকে বিদায় করে প্রতিপক্ষের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটান মেহেদি হাসান মিরাজ। ৬১ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৫১ করে রশিদ।

বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে তাইজুল ৪টি, নাঈম হাসান ও সাকিব দুটি, আর মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজ একটি করে উইকেট পান।

এর আগে সিরিজের একমাত্র টেস্টের প্রথম দিনে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রান করেছিল আফগানরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।