ইন্দোর টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়েও ভারতের এক ইনিংসের সমান রান করতে পারেনি বাংলাদেশ। উপরন্তু নিজেদের ইনিংসে বাংলাদেশের বোলারদের রীতিমত তুলোধুনা করেছেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা।
২০১৯-২০২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে আগামী বছর পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এছাড়া এই সূচির বাইরে জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি করে টেস্ট খেলার কথা রয়েছে। ঠিক এমনটাই চেয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটার, কোচ থেকে শুরু করে বোর্ড কর্তারাও।
টেস্ট ক্রিকেট কম খেলার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন মুমিনুল নিজেই। তাকে মূলত টেস্ট স্পেশালিষ্ট হিসেবেই দেখা হয়। কিন্তু টেস্ট ম্যাচগুলোর মধ্যে বিশাল সময়ের ব্যবধানের কারণে নিয়মিত খেলার সুযোগ পান না তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে ভারত আর বাংলাদেশের পার্থক্য হিসেবেও এই কম টেস্ট খেলাকেই দুষলেন মুমিনুল।
মুমিনুল বলেন, ‘আমরা খুশি। কারণ যারা কম টেস্ট খেলে তাদের জন্য টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ একটা বড় সুযোগ। এটা অনেক বড় প্রতিযোগিতা। আইসিসি যদি এটার আয়োজন না করতো তাহলে আমরা এত টেস্ট খেলার সুযোগ পেতাম না। এটা সবার জন্যই ভালো হবে। আমাদের অনেক টেস্ট ম্যাচ খেলতে হবে। গত সাত মাসে আমরা মাত্র ২টি টেস্ট খেলেছি। অন্যরা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি খেলেছে। আমি মনে করি এটাই মূল পার্থক্য। ’
ইন্দোরে যেভাবে ভারতীয় বোলারদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মুমিনুল বলেন, ‘ওদের (ভারতের) বোলিং আক্রমণ অনেক চ্যালেঞ্জিং। যদি ওপেনাররা ১৫-২০ ওভার খেলতে পারতো তাহলে বাকিদের সহজ হতো। ওদের বোলিং শক্তিশালী, কিন্তু আমরা ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে ব্যর্থ। তাদের বোলিং আক্রমণ বিশ্বসেরা। আমরা আমাদের সুযোগ নিতে পারিনি। ’
ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য ব্যাটসম্যানদের ধৈর্যের অভাবকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করে মুমিনুল বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের ধরন ঠিক আছে। হয়তো আমাদের এটা অনুধাবন করা উচিত ছিল যে ভারতের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে আরও ধৈর্য ধরে খেলতে হবে। কারণ তারা খুব কমই বাজে ডেলিভারি দিয়েছে। ’
পুরো ম্যাচে ব্যাট হাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ছিলেন মুশফিকুর রহিম। দুই ইনিংসে তার রান যথাক্রমে ৪৩ ও ৬৪। তার এই পারফরম্যান্সের পর তাকে ব্যাটিং অর্ডারে আরও উপরের দিকে আনার কথা ভাবছে দল, এমনটাই জানালেন মুমিনুল, ‘মুশফিককে ব্যাটিংয়ে উপরের দিকে নামানো ইতিবাচক দিক, তবে যদি টিম ম্যানেজমেন্টও এমনটা চায় তাহলে। আমার মনে হয় দলের ভাবনাটা এমনই। ’
ইন্দোরে যা হয়েছে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইডেনের দিবা-রাত্রির টেস্টের জন্য প্রস্তুতির দিকে নজর দিচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘আমার ধারণা, ইন্দোরে যে সুইংয়ের বিপক্ষে খেলেছি, এর চেয়ে বেশি সুইং হবে না। এখানে যে সুইং হয়েছে তাতে আমাদের প্রস্তুতি ভালোই হয়েছে। সামনে হয়তো চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। আমাদের এটাকে ইতিবাচকভাবেই দেখতে হবে। ’
আসন্ন দিবারাত্রির টেস্টে ভালো করার সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কারণ দুই দলের জন্যই গোলাপি বলের ক্রিকেট নতুন এক অভিজ্ঞতা, ‘আমরা দুই দলের কেউই গোলাপি বলে খেলিনি, ফলে আমি মনে করি এটা আমাদের জন্য নতুন সুযোগ। দলে এটা নিয়ে উত্তেজনা আছে কারণ আমরা জানি না আবার কবে গোলাপি বলে খেলার সুযোগ পাবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৯
এমএইচএম