ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

একজন ইংলিশ মাঠকর্মীর ভাবনায় বাংলাদেশের ক্রিকেট

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৯
একজন ইংলিশ মাঠকর্মীর ভাবনায় বাংলাদেশের ক্রিকেট জোনাথন স্মিথ: ছবি-বাংলানিউজ

কলকাতা থেকে: ২০০০ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের টেস্ট যাত্রা। তারপর দেখতে দেখতে প্রায় ১৯ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এত বছর পেরুলেও বাংলাদেশের টেস্টের অর্জনের খাতাটা একেবারেই শূন্য। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে হারালেও সেটা অঘটনের জন্ম দেওয়া ছাড়া আর কিছুই না।
 

ইডেন গার্ডেন্সে ভারতের বিপক্ষে গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচ খেলে ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়েছে মুমিনুল হকের দল। তবে ইতিহাসটা রাঙাতে পারেনি টাইগাররা।

বরং ব্যর্থতার চরম পরিচয় দিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সাদা পোশাকে দুই দশক পার করতে যাওয়ার পরও টেস্ট ক্রিকেট খেলার কোনো মানসকিতাই গড়ে ওঠেনি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের।

এ বিষয়ে ইডেন গার্ডেন্সে দর্শক গ্যালারিতে বসে কথা হলো ইংল্যান্ড থেকে আগত জোনাথন স্মিথের সঙ্গে। পেশায় তিনি একজন মাঠকর্মী। তবে ক্রিকেট সম্পর্কে স্মিথের ধারণা কোনো অংশেই কম নয়। প্রায় ৩৫ বছর ধরে তিনি এই পেশায় জড়িত। নিজ দেশের লর্ডসে কাজ করেছেন জোনাথন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার পার্থেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তার ঝুলিতে। জোনাথন ওয়েস্ট ইন্ডিজে কাজ করেছেন। ভারতের চেন্নাই, কাজ করেছেন ব্যাঙ্গালুরুতেও। ইডেন গার্ডেন্সে পুরো মাঠের কভারটি তিনিই ইংল্যান্ড থেকে ভারতকে এনে দিয়েছিলেন।

জোনাথন স্মিথ: ছবি-বাংলানিউজবাংলাদেশ সম্পর্কেও তার কিছুটা ধারণা রয়েছে। বাংলাদেশিদের মধ্যে তfমিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান তার প্রিয় ক্রিকেটার। গতমাসে বাংলাদশের ঘরোয়া ক্রিকেটে  ক্রিকেটারদের ধর্মঘট সম্পর্কেও তিনি সব জানেন।

আগ্রহ নিয়ে জোনাথনের কাছে জানতে চাওয়া, বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে তার ধারণা কতটুকু কিংবা উন্নতির জন্য কী করা প্রয়োজন। তার উত্তর ছিল এমন ‘সর্বপ্রথম স্কুল ক্রিকেটের ওপর গুরুত্ব্ব দিতে হবে। ক্রিকেটারদের স্কুল পর্যায় থেকেই আগ্রহ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের দেশে এটার ওপর খুব জোর দেওয়া হয়। আমি জানিনা, তোমাদের দেশে এটা করা হয় কিনা। গত মাসে ক্রিকেটারদের ডাকা ধর্মঘটে দাবির মধ্যে একটি ছিল অবকাঠামোগত উন্নয়ন। ভালো সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা। যেটা একটা দেশের ক্রিকেটকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। ’

জোনাথনের কথাতেই পুরোপুরি বোঝা যায় যে বাংলাদেশের খোঁজ খবর তিনি রাখেন। আইসিসি থেকে টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির জন্য অনুদান পায় সেই অনুদানের অর্থ ভালোভাবে কাজে লাগালে অবশ্যই বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নতি হবে বলে তার মত। স্মিথ বলেন, ‘আইসিসি কিন্তু সব দেশকেই টেস্টে উন্নয়নের জন্য আর্থিক অনুদান দেয়। সেগুলো যদি ঠিক মতো ব্যবহার করা না হয় টেস্টে উন্নতি হবে না। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটসহ ঘরোয়া ক্রিকেটের সব ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বাড়াতে হবে যাতে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি আরও বেশি আগ্রহ তৈরি হয়। ’

ভারতের উদাহরণ টেনে তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের ব্যাটসম্যানদের দেখলে মনে হয় তারা নেট বোলিং অনুশীলন করছে। এভাবে উন্নতি হবে না। টেস্টে ক্রিকেটে কিন্তু বাংলাদেশ অনেক বছর পার করে ফেলেছে। টেস্টের জন্য আলাদা উইকেটে অনুশীলন করা উচিৎ। ভারতের কথাই বলি, তারা যখন দেশের বাইরে খেলতে যায় তখন তারা ব্যাঙ্গালুরু গিয়ে অনুশীলন করে। কারণ ওখানে সেই রকম উইকেট আছে। তাই সব দিক দিয়েই আলাদা ভাবে ভাবতে হবে। ’
 
জোনাথন স্মিথের মতে, এই উপমহাদেশের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই বাইরের লিগ বেশি খেলে যার জন্য ক্রিকেটারদের উন্নতি হয়না।  

সবশেষে  বাংলাদেশে ক্রিকেটের জন্য শুভ কামনা জানান জোনাথন স্মিথ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৯
আরএআর/ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।