৫২ টেস্ট খেলেই ২৯টি সেঞ্চুরির মালিক বনে যাওয়া ব্র্যাডম্যান ১৯২৮ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৪৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ব্যাগি গ্রিন পরে মাঠ মাতিয়েছেন। এই সময়ে মাত্র দুই সিরিজে হারের মুখ দেখেছিল অজিরা।
ব্র্যাডম্যানের যুগে দ্বিতীয় হার আসে ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে যখন ‘বডিলাইন’ পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হয়। কিন্তু এই পদ্ধতিও তাকে থামাতে পারেনি। কারণ, বোলারদের সেই আগ্রাসী ডেলিভারি সামলে ঠিকই এক সিরিজে ১ সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটি তুলে নেন তিনি, যা তাকে কিংবদন্তি হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে দেয়।
সারা বিশ্ব ব্র্যাডম্যানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার অবিশ্বাস্য রেকর্ডগুলোর কথা স্মরণ করছে। চলুন এক নজরে এই কিংবদন্তির এমনই ৫টি অনন্য কীর্তির দিকে চোখ বুলিয়ে আসা যাক:
৯৯.৯৪-ব্রাডম্যানের এই কীর্তির কথা জানে না, এমন ক্রিকেটভক্ত প্রায় নেই বললেই চলে। টেস্ট ক্রিকেটের এমন আকাশছোঁয়া ব্যাটিং গড়ের মালিক ‘ডন’। এই ব্যাটিং গড়কে বলা হয় টেস্ট ক্রিকেটের সেরা নির্ধারণের ‘আনঅফিসিয়াল বেঞ্চমার্ক’। ব্যাটিং গড় ৯৯.৯৪ মানে, প্রায় প্রতি ইনিংসেই তিনি প্রায় ১০০ রান করেছেন! ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে মাত্র ৪ রান করতে পারলেই তার ক্যারিয়ার গড় ১০০-তেই পৌঁছে যেত। তবে সে ইনিংসে ডাক মানে শূন্য রানে বিদায় নেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে থাকার সময় তার ব্যটিং গড় ছিল ১০১.৫১! এই রেকর্ডও সময়ের পরীক্ষায় টিকে আছে।
৫০২৮-ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৩৭ ম্যাচ খেলে এই অবিশ্বাস্য রানের মালিক হয়েছিলেন ডন। এখন পর্যন্ত কোনো একক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এটাই সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড হিসেবে টিকে আছে। সবমিলিয়ে তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছেন যথাক্রমে ইংল্যান্ডের জ্যাক হবস (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬৩৬ রান) এবং শচীন টেন্ডুলকার (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬৩০ রান)। এই দুজনই ব্র্যাডম্যানের চেয়ে অনেক বেশি ম্যাচ খেলেছেন।
১৯-একটি নির্দিষ্ট প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডও ব্র্যাডম্যানের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মোট ১৯টি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন ভারতীয় কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৩ সেঞ্চুরি)। বর্তমান খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন অজি ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথ (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১১ সেঞ্চুরি)।
৭৪.৫-ব্র্যাডম্যানের সময়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ বলতে ছিল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারত। ফলে আধুনিক টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোকে (যেমন পাকিস্তান, জিম্বাবুয়ে, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড) প্রতিপক্ষ হিসেবে পাননি তিনি। তবে যে কয়টা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলেছেন তাদের সবার বিপক্ষেই তার ব্যাটিং গড় কমপক্ষে ৭৪.৫ বা তার বেশি। এমনটা আধুনিক ক্রিকেটে প্রায় অসম্ভব।
সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে ১ হাজার থেকে ৬ হাজার রান-ক্যারিয়ারে অসংখ্য রেকর্ডের মালিক বনে যাওয়া ব্র্যাডম্যান তৃতীয় সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে ১ হাজার রানের রেকর্ড গড়েছিলেন। প্রথম হাজারের জন্য মাত্র ১৩ ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এরপর টানা ৫ হাজারে সবচেয়ে দ্রুততম ছিলেন তিনিই। ৬৯৯৬ রানে ক্যারিয়ার শেষ করা ৭ হাজার রানের রেকর্ডটি গড়া হয়নি তার।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
এমএইচএম/এমএমএস