দেশের জন্য এই গৌরব এনে দিতে মাঠে লড়েছেন ১১ জন তরুণ ক্রিকেটার। এই ১১ জন ক্রিকেটারদর একজন ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী।
অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এই উদীয়মান অলরাউন্ডার কথা বলেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে। জানিয়েছেন বিশ্বকাপ জয়ের সাক্ষী না হতে পারায় তার আক্ষেপের কথা। প্রায় ৪০ দিনে বিশ্বকাপ ক্যাম্পের ৩০ দিন ছিলেন দলের সঙ্গে। মৃত্যুঞ্জয় অবশ্য এখানে থেকে থাকতে চান না। আক্ষেপটাকে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যেতে চান।
বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে থেকে বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। তবে মৃত্যুঞ্জয় বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। বিশ্বকাপ জিতবে বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে নতুন করে চেনাবেন এমন লক্ষ্য নিয়েই খেলতে গিয়েছিলেন তারা।
মৃত্যুঞ্জয় বলেন, ‘আসলে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে আমরা জানতাম যে এবার টিম কিছু একটা করবে। কারণ বিগত দুই বছর ধরে আমরা যে ধরনের ক্রিকেট খেলছি, আমাদের ইমপ্রুভমেন্ট এর ধারাটা ভালো ছিল। দেখা যাচ্ছে যে আমরা যে ভুলটা করেছি সেটা আমরা ওভারকাম করেছি। পরেরবার সবদিক থেকে আমাদের কনফিডেন্স খুব ভালো ছিল। পরিকল্পনা ছিল যে বিশ্বের বুকে আমরা সবাই কে পরিচিত করাবো এবং লাস্টে ওটাই কাজে দিয়েছে। আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলাম। ’
আত্মবিশ্বাসটা গড়ে উঠেছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটার পর যেটা বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছিল। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আত্মবিশ্বাসটা শুরু হয়েছে আমাদের পাকিস্তানের ম্যাচের পর থেকে। যদি দেখেন.... আমাদের স্যাররা বলতেছিলেন এবং ইভেন আমরা বলেছিলাম, একটা ভালো টিম যখন মাঠে নামে, দেখা যাবে খেলতে খেলতে হঠাৎ একটা ম্যাচ খারাপ করে বা খারাপ খেলে ফেলে। ওটা আমাদের এমন একটা সময়ে হয়েছে যে যেটা আমাদের তেমন একটা ইফেক্ট পড়েনি। খারাপটা তেমন একটা ইফেক্ট পরতে পারেনি সহজভাবে হয়ে গেছে। আমরা জানতাম যে সামনে যা কিছু হবে পজিটিভ হবে। খারাপ তো আমরা রেখেই আসছি পাকিস্তানের কাছে। ’
এরপরই মৃত্যুঞ্জয়ের কন্ঠে শোনা গেলে আক্ষেপের কথা। ইনজুরির কারণে ছিটকে যান, দল ফেলে ফিরে আসতে হয় দেশে। ফলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জয়টা দর্শক হয়েই দেখতে হয় তাকে।
আক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে বাংলানিউজকে মৃত্যুঞ্জয় বলেন, ‘ইনজুরি নিয়ে আমি নিউজিল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ভুগছিলাম। আমার মাথায় একটা ভয় ছিল যে ওয়ার্ল্ডকাপ খেলতে পারব কি পারব না। কিন্তু আমি আমার সেরাটুকু চেষ্টা করছি যতটুকু পারছি সেরাটা দেয়ার জন্য। ওয়ার্ল্ডকাপের থাকতে তো পারছি। ৪০ দিন তো ওয়ার্ল্ড কাপ ক্যাম্প ছিল তার মধ্যে ৩০ দিন ছিলাম। শেষের দশ দিন থাকতে পারেনি। আমার আক্ষেপ অবশ্যই আছে, বড় একটা আক্ষেপ আছে কারণ ওয়ার্ল্ড কাপে ছিলাম কিছু একটা করতে না পারি ওখানে থাকতে পারলে ভালো লাগতো। ’
তবে থেমে থাকতে চান না মৃত্যুঞ্জয়। আক্ষেপটাকেই শক্তিতে রূপান্তরিত করতে চান তিনি। বলেন, ‘এখন ওয়ার্ল্ডকাপ খেলতে পারিনি এটা খুব কাজে দেবে আমার জন্য। কারণ আমার ক্ষুধাটা রয়ে গেছে, আমি কিন্তু কিছুই পাইনি। আমি এই হাঙ্গারনেসটা ধরে রেখে কাজে লাগাতে পারি, প্রসেসগুলো মেইনটেইন করতে পারি। কারণ আমি চাইব না যে একটা জিনিস মিস করেছি, আবার মিস করি। চেষ্টা করছি যখনই কামব্যাক করবো। ’
জাতীয় দলে খেলার চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে মৃত্যুঞ্জয় বলেন, ‘এখন যারা খেলছে তারা খুব ট্যালেন্টেড, ভালো খেলছে। আমি ক্রিকেটে বিশ্বাস করি কেউ কারো জায়গা নিতে পারে না,ম আমার নিজের জায়গাটা নিজেকে তৈরি করতে হবে। যদি আমার জায়গায় ভালো থাকে তাহলে আমি খেলব আর যদি না থাকে তাহলে তো আমি খেলতে পারব না। আমি আমার কাজগুলো করছি দেখা যাক মাঠে কি হয়। ’
নিজের লক্ষ্যের কথা বলতে গিয়ে এই পেসার বলেন, ‘সবসময় টার্গেট ছিল যে জাতীয় দলে খেলবো যতটুকুই খেলব একদম ভালোভাবে খেলব কম দেবো না সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব। তবে বিশ্বকাপের পর টার্গেটটা পরিবর্তন করেছি। এখন টার্গেট আমি বড়দের বিশ্বকাপটা খেলতে চাই। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২০
আরএআর/এমএমএস