ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সকালটা বাংলাদেশের, বিকেল দ. আফ্রিকার

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২২
সকালটা বাংলাদেশের, বিকেল দ. আফ্রিকার

প্রথম সেশনে দক্ষিণ আফ্রিকার ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু মাঝে লোয়ার অর্ডারের দৃঢ়তায় বড় সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা।

এরপর ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খুব একটা মন্দ হয়নি টাইগারদের। কিন্তু শেষ বিকেলে প্রোটিয়া স্পিনার হার্মারের ঘূর্ণিতে দ্রুত ৪ উইকেট খুইয়ে অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়লো মুমিনুলবাহিনী।  

ডারবান টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৬৭ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ৯৮ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের চেয়ে এখনও ২৬৯ রানে পিছিয়ে সফরকারীরা। দিন শেষে ৪৪ রানে অপরাজিত আছেন টাইগার ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। নাইটওয়াচম্যাচ হিসেবে নামা তাসকিন ৬ বল খেলে এখনও রানের খাতা খুলেননি।

স্বাগতিকদের বড় সংগ্রহের জবাব দিতে নেমে দলীয় ২৫ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।  তামিম ইকবালের হঠাৎ অসুস্থতায় সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম।  হার্মারের ভালো লেন্থের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ৩৩ বলের মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে এসেছে ৯ রান। তবে এরপর হাল ধরেন জয় ও শান্ত। দুজনেই খেলছিলেন সাবলীলভাবে।  

শান্ত ও জয় মিলে ৫৫ রানের জুটি গড়েছিলেন। শান্ত দেখেশুনে খেলে ফিফটির দিকেও ছুটছিলেন।  কিন্তু তাদের প্রতিরোধ ভেঙে যায় জোড়া আঘাতে।  প্রোটিয়া স্পিনার সাইমন হার্মারের বল অফ স্ট্যাম্প ভাঙলে বিদায় নিতে হয় শান্তকে। তার ব্যাট থেকে আসে ৮৭ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। ১ ওভার পরেই বিদায় নেন অধিনায়ক মুমিনুল হকও। সেই হার্মারের বলেই মিড-অফে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে ৮ বলের মোকাবিলা করলেও রানের খাতাই খুলতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটার।  

শেষ বিকেলে ফের হার্মারের আঘাত। এবার তার শিকার অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। আগের বলেই চার হাঁকিয়ে আত্মবিশ্বাস জুটিয়েছিলেন বাংলাদেশের ডানহাতি এই ব্যাটার। কিন্তু পরের বলে বিদায় নেন তিনি। বল তার গ্লাভসে লেগে উইকেটকিপার ভেরেইনের গ্লাভসে জমা হলে আবেদন করেন ফিল্ডাররা। যদিও আম্পায়ার শুরুতে আউট দেননি। কিন্তু বোলার এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে অধিনায়ককে রিভিও নিতে বাধ্য করেন। আর তাতে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সবগুলোই হার্মারের দখলে। মুশফিক ফেরেন ৭ রানে।

এর আগে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে আধিপত্য দেখান বাংলাদেশের বোলাররা। দিনের ষষ্ঠ ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন খালেদ। মাটি কামড়ে পড়ে থাকা কাইল ভেরেইনকে বিদায় করেন তিনি। ৮১ বলের মোকাবিলায় ২৮ রান করে লেগ বিফোর হয়ে ফেরেন ভেরেইন। পরের বলে সদ্যই ক্রিজে আসা উইয়ান মুল্ডারকে গালিতে থাকা মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিতে বাধ্য করেন খালেদ। হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেলেও অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। কারণ হ্যাটট্রিক বলটি অফসাইডের বাইরে থাকায় ছেড়ে দেন কেশভ মহারাজ।

প্রথম দিনের শেষ আর দ্বিতীয় দিনের শুরু; বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে ছিলেন টেম্বা বাভুমা। সকালের সেশনের শুরুতে খালেদের জোড়া আঘাতের পরও বাভুমা ছুটছিলেন সেঞ্চুরির পথে। তবে তাকে তিন অংক ছুঁতে দেননি মিরাজ। এই অফ-স্পিনারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন বাভুমা। মিরাজের দারুণ এক ঘূর্ণিজাদুতে বিদায় নেওয়ার আগে বাভুমা ১৯০ বলের মোকাবিলায় ৯৩ রান করেন। ইনিংসটি তিনি ১২টি চারে সাজিয়েছেন। পরের ওভারের প্রথম বলেই প্রোটিয়া শিবিরে আঘাত হানেন এবাদত। এবার ডানহাতি পেসারের বলে সরাসরি বোল্ড হন মহারাজ ((১৯)। বাভুমা ও মহারাজের জুটিতে আসে ৫৩ রান। প্রথম সেশনে মোট ৪ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এবাদতের ঝুলিতে অবশ্য আরও একটি উইকেট যোগ হতো। কিন্তু বল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি গড়বড় করায় উইকেট হাতছাড়া হয়। তার বল লিজাড উইলিয়ামসের পায়ে লাগলে লেগ বিফোরের আবেদন করে বাংলাদেশ দল। আবেদনে সাড়াও দেন আম্পায়ার এরাসমাস। কিন্তু রিভিও নেন উইলিয়ামস। বল ট্র্যাকিংয়ে বল অফসাইডের বাইরে দেখায়, আসলে বল পড়ে লেগ সাইডে। কম্পিউটার উইলিয়ামসকে প্রথমে ডানহাতি দেখালেও তিনি আসলে বাঁহাতি। এজন্যই এই গড়বড়। পরে আউটের সিদ্ধান্ত বদলে যায় এবং বাংলাদেশ রিভিও হারায়।  

১০৫ ওভার শেষে এবং লাঞ্চ বিরতির আগে ৮ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকরা প্রথম ইনিংসে ৩১৪ রান সংগ্রহ করে। লাঞ্চের পর বল হাতে নিয়ে ফের সাফল্যের দেখা পান খালেদ। এবার উইলিয়ামসকে (১২) গালিতে থাকা জয়ের ক্যাচ বানান তিনি। এটি ইনিংসে খালেদের চতুর্থ উইকেট। ৩৩২ রানে ৯ উইকেট হারায় দ. আফ্রিকা। কিন্তু ডুয়ানে অলিভিয়ের ও সাইমন হার্মারের শেষ উইকেট জুটি দাঁড়িয়ে যায়। অবশেষে অলিভিয়েরকে (১২) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ৩৫ রানের এই জুটি ভাঙেন মিরাজ। কিন্তু ততক্ষণে শেষ ৪ জুটিতে ১২২ রানের সৌজন্যে ৩৬৭ রানের সংগ্রহ পেয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

বল হাতে বাংলাদেশের খালেদ ৪টি, মিরাজ ৩টি এবং ২টি উইকেট নিয়েছেন এবাদত।

এর আগে প্রথম দিনে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ২৩৩ রান সংগ্রহ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫৩ রানে বাভুমা এবং ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন ভেরেইন।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২২
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।