ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খাল দখল করে চসিক কাউন্সিলরের কার্যালয়, উচ্ছেদ দাবিতে মানববন্ধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৩
খাল দখল করে চসিক কাউন্সিলরের কার্যালয়, উচ্ছেদ দাবিতে মানববন্ধন

চট্টগ্রাম: নগরের সিটি গেইট এবং কাট্টলী এলাকার পানি প্রবাহের একমাত্র মাধ্যম কালীর ছড়া খাল উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম ও আমরা আকবর শাহ বাসী।  
 
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, সিটি গেইটের উজানে আকবর শাহ এলাকায় কালীরছড়া খালের প্রবাহধারা বিলুপ্ত করে নিজের কার্যালয় ও খামার গড়ে তুলেছেন ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিম।

 

চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন এবং বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আলিউর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের রানি হিসেবে সুখ্যাতি পাওয়ার অন্যতম কারণ এই অঞ্চলের পাহাড়-টিলা-বন আর নদী, সাগর। প্রকৃতির অপার সৃষ্টি এই সম্পদগুলোর কল্যাণে চট্টগ্রামের প্রকৃতি-পরিবেশ অনিন্দ্যসৌন্দর্য রূপ ধারণ করেছে।

চট্টগ্রাম নগরে একখণ্ড পার্বত্যাঞ্চল হিসেবে পরিচিত আকবরশাহের বিশাল পাহাড় ও টিলাগুলো কেটে সাবাড় করা হয়েছে। এখনো যেসব পাহাড়-টিলা রয়েছে সেগুলো প্রতিদিন কাটা হচ্ছে। গত ৬-৭ বছরে এই অঞ্চলের অন্তত ৪২টি পাহাড় কেটে সাবাড় করা হয়েছে।  

বক্তারা বলেন, সরকারি দপ্তরগুলো কালেভদ্রে উদ্যোগ নিলেও প্রকৃত অপরাধী বিশেষ করে পরিবেশ ধ্বংসে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে অনীহা দেখা গেছে এ পর্যন্ত হওয়া কয়েকটি মামলায়। শুধু ২০২২ সালেই পাহাড় কাটায় অন্তত ৬টি মামলা হয়েছে। কিন্তু এসব মামলায় শুধু শ্রমিকদের আসামি করা হয়, ছাড় দেওয়া হয় রাজনীতির পদ-পদবি ব্যবহার করে পরিবেশ ধ্বংসে নেতৃত্ব দেওয়া পাহাড়খেকোদের। এভাবে বিচারহীনতার কারণে আজ পুরো চট্টগ্রামের পরিবেশ বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে।  

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলার প্রধানতম হাতিয়ার এই পাহাড়-ছড়া রক্ষা করে ভবিষ্যত প্রজন্মেও নিশ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থাটুকু রাখার দাবি জানান তারা।  
 
আলিউর রহমান বলেন, আমরা ১ মাসের সময় দিচ্ছি। কালীরছড়া উদ্ধারে যদি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, আকবরশাহ’র অসংখ্য পাহাড় কাটার হোতাদের যদি আইনের আওতায় এনে শাস্তির পথ সুগম করা না হয়, অবশিষ্ট পাহাড়গুলো রক্ষায় যদি কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আমরাই আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর উদ্যোগ নেবো।  

পরিবেশকর্মী ও উন্নয়ন সংগঠক মো. শফিকুল ইসলাম খানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গেরিলা কমান্ডার ফজল আহমেদ, গ্রীন ফিঙ্গার্স কো-ফাউন্ডার ঋতু ফারাবি ও আবু সুফিয়ান, পরিবেশ কর্মী আবসার উদ্দিন অলি, মো. জাফর ইকবাল, ন্যাপ নেতা  মিটুল দাশ গুপ্ত, কামাল পারভেজ, সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের চট্টগ্রাম নগর সমন্বয় মো. ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, মো. হুমায়ুন কবির, আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং পরিবেশ সুরক্ষা ও অধিকার ফোরামের নগর সভাপতি মো. লোকমান আলী, আকবরশাহ থানা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি দিলীপ দাশ, আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাবুদ্দিন আহমেদ জাহিদ, পরিবেশ সুরক্ষাকর্মী সবিতা বিশ্বাস, ইসমাইল ইমন, আব্দুস সাত্তার টিটু, তৌকির উদ্দিন আনিস, আরাফাত রনি প্রমুখ।

মানববন্ধনে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিম বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন কালীর ছড়ায় গাইডওয়াল দিয়ে খালের জায়গা ক্লিয়ার করেছে। একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করবো।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।