চট্টগ্রাম: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে বিস্ফোরণগুলো হচ্ছে সেগুলোকেও সরকার রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে। একটা সরকারের আমলে যখন এগুলো ঘটে তখন সে সরকার দেশ পরিচালনাতে ব্যর্থ।
শনিবার (১১ মার্চ) সকালে নগরের কাজীর দেউড়ি নূর আহমদ সড়কে সরকারের পদত্যাগ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে কেন্দ্রঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মী অংশ নেন। নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে নূর আহমদ সড়কের মূল অংশ থেকে শুরু হয়ে একদিকে কাজীর দেউড়ি মোড়, অন্যদিকে লাভলেইন হয়ে জুবলি রোড পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে মানুষ অংশ নেয়।
বাংলাদেশের মানুষ আজ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে জানিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রাস্তাঘাটে পথে, মাঠে, সমাবেশে প্রতিটি জায়গায় আজ একটা প্রশ্ন এই সরকারকে কবে বিদায় দেবেন? আমরা নিশ্বাস ফেলতে পারছি না। শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় প্রতিটি দিন অতিবাহিত করছি, আমাদের মুক্তি দিন । দেশকে মুক্ত করেন। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের ম্যাসেজ। পরিষ্কারভাবে জনগণের সিদ্ধান্ত এবং তারা অতিসত্বর সরকারের বিদায় দেখতে চায়।
নির্বাচনে যারা ভোট চুরিতে জড়িত তাদের তালিকা করা হচ্ছে জানিয়ে আমির খসরু বলেন, বিশ্বের দৃষ্টি বাংলাদেশের দিকে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দিকে। দৃষ্টি হচ্ছে মানবাধিকারের দিকে, দৃষ্টি হচ্ছে এদেশের লাখ লাখ কোটি টাকা পাচারের দিকে, দৃষ্টি হচ্ছে বাকস্বাধীনতার পক্ষে, মানুষের জীবনের নিরাপত্তার দিকে। বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে আছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচনের নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে। তারা আইন করেছে এ নির্বাচনে ভোট চুরির সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আসবে। এটা তো বাইরে থেকে আসবে ভেতর থেকে তাদের বিচার হবে। ওয়ান ইলেভেনের তাদের যেসব মামলা তারা খারিজ করে দিয়েছে, গত এগারো বছরের গুম, খুনের যে মামলা এগুলোকে একত্রিত করলে আওয়ামী লীগের ৩০০ আসনের মধ্যে একটি আসনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রার্থী পাওয়া যাবে না। সবাইকে জেলে যেতে হবে। বিচারের আওতায় আসতে হবে। কেউ ছাড় পাবে না। তাই তাদের বলবো, বুঝিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না। আর করিয়া ভাইবা নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। বাংলাদেশের মানুষকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে চলে যান। ৫০ বছর পর আবার দেখা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, চরম দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়েছে। দেশে চরম দুর্নীতি চলছে। গণতন্ত্রের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় গ্রেডে। ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ভোট ডাকাতি করেছে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বলে আর ভোট ডাকাতির চেষ্টা করবেন না। বিএনপি ভোট ও ভাতের অধিকার রক্ষার জন্য রাজপথে আছে। প্রয়োজনে নিজের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো। সরকারের হাজিদের বিমান ভাড়া প্রায় দুই লাখ টাকা, ওমরাতে এক লাখ টাকা, পর্যটক ভিসায় ৬০ হাজার টাকা নিচ্ছে। ধর্মীয় বিষয় নিয়ে হাজিদের সঙ্গে সরকার চরম বৈষম্য সৃষ্টি করছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্কর, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এমএ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, মন্জুর আলম চৌধুরী মনজু, মো.কামরুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সদস্যসচিব ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নসরুল কদির, জেলা ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম জানে আলম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, মহানগর শ্রমিকদলের সভাপতি তাহের আহম্মেদ, কৃষকদলের আহবায়ক মো. আলমগীর, সদস্যসচিব কামাল পাশা নিজামী, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্যসচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, তাঁতীদলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক নুরুল হক, জাসাসের সদস্যসচিব মামুনুর রশীদ শিপন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৩
এমআই/টিসি