ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার-অপারেশন বন্ধের ঘোষণায় ক্যাবের উদ্বেগ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৩
চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার-অপারেশন বন্ধের ঘোষণায় ক্যাবের উদ্বেগ

চট্টগ্রাম: ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় দুই নারী চিকিৎসককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে চিকিৎসকদের সব ধরনের প্রাইভেট চেম্বার-অপারেশন বন্ধ রাখায় ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ক্যাব চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব দক্ষিন জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান প্রমুখ।

বিবৃতিতে রোগীদেরকে জিম্মি করে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খেলা বন্ধের দাবি জানিয়ে বলা হয়, দুইজন চিকিৎসককে গ্রেফতারের কারণে অবস্ট্রেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনেকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এ ধরনের অমানবিক ও অন্যায় সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।

চিকিৎসক হোক আর যাই হোক সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আইনীভাবে মোকাবেলা করা উচিত। কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে হীন ষডযন্ত্রে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া জনগণের চিকিৎসা সেবার মতো মৌলিক অধিকার খর্ব করার সামিল। যা শুধু মাত্র নিন্দনীয় নয় এটা চরম বর্বরতার সামিল এবং আদিমযুগে ‘জোর যার মল্লুক তার’ সে স্লোগানে প্রত্যাবর্তনের আহ্বান। এটা অনেকটা লাশের রাজনীতির মতো।  
 
নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে এ ধরনের অনৈতিক, অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অমানবিক কর্মকান্ড পরিহার করে আদালতের কাছে প্রতিকার চাওয়ার পরামর্শ দিয়ে অবৈধ ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি জানান।  

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, চিকিৎসা পেশা একটি মহান সেবাধর্মী পেশা হলেও বর্তমানে সনদবিহীন, ভুয়া, অসাধু চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকদের কারণে এ মহান পেশাকে কাজে লাগিয়ে দিনে দিনে কোটিপতি হবার বাসনায় লিপ্ত। রোগীর সেবা, মানবতার সেবার চেয়ে অর্থই তাদের কাছে মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও সুযোগ সুবিধা থাকলেও রোগীরা সেখানে নুন্যতম চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। রোগীদেরকে বেসরকারি ক্লিনিক ও চেম্বারে যেতে পারমর্শ প্রদান করা হয়। আর যে কোনো মানুষ রোগাক্রান্ত হলেই রোগী হলেই আগে পরামর্শ দেওয়া হয় প্যাথলজিকাল টেস্ট ও অপারেশন। কারণ এতে চিকিৎকদের লাভ বেশি। যার কারণে প্যাথলজিকাল ল্যাব গুলি ব্যাঙের ছাতার মতো শহর, গ্রাম সর্বত্র ছাড়িয়ে পড়েছে। আর ক্লিনিকগুলি নামমাত্র সেবা দিয়ে গলা কাটা বিল আদায় করছে। বিএমএসহ সরকার ও বিরোধীদলের সমর্থিত চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠনগুলির দৌরাত্ত্য, একচেটিয়া প্রভাবের কারণে এখানে রোগীদের মানম্মত সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো প্রকার নজরদারি করার সাহস পর্যন্ত নেই। ফলে মানুষ অসহায় হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে চিকিৎসার জন্য ভিড় জমায়।

নেতৃবন্দ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেক্টরে এ ধরণের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বেসরকারী ক্লিনিক, প্যাথলজিকাল ল্যাবসহ স্বাস্থ্য বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠানে কঠোর নজরদাবির দাবি জানান। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্য সেক্টরে কমিশন প্রথা, উপহার প্রথা বাতিলসহ ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় কঠোর আইনী প্রতিকার এবং সিবিএ সংগঠনের মতো বিএমএর অযাচিত হস্তক্ষেপ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৩
পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।