ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বনের বিড়াল ঘরে, প্রিয়জনের কোলে

সোহেল সরওয়ার, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৩
বনের বিড়াল ঘরে, প্রিয়জনের কোলে পোষা বিড়াল নিয়ে বেড়াতে যান সৌখিন প্রাণীপ্রেমিরা। ওয়ার সিমেট্রি থেকে ছবি তুলেছেন সোহেল সরওয়ার।

চট্টগ্রাম: অনেকেই এখন শখ করে বিড়াল পোষেন। কেউ আবার একাকিত্ব ঘুচাতে ঘরের একজন সদস্য হিসেবে বিড়ালকেই স্থান দেন।

রাখেন হরেক রকম নাম। এই বিড়াল পুষতে কষ্টও আছে অনেক।
 

বিড়ালের আদি পুরুষের বসবাস ছিল জঙ্গলে। নানা ধরনের হিংস্র প্রাণী থেকে নিজেদের রক্ষা করতে বিড়ালের দল জঙ্গল ছেড়ে মনুষ্য সমাজে বসবাস শুরু করে। তবে এখনও মাঝেমধ্যে দেখা যায় বন বিড়াল। এই বন বিড়াল বিলুপ্তপ্রায়।

বিড়ালের মিউ ডাকটাই তাদের ডাকনাম হয়ে দাঁড়াতো একসময়। গ্রামের রান্না ঘরের আশপাশে কিংবা শহরের বাজারের পাশেই সাধারণত দেখা মেলে এদের। বেঁচে থাকতে করতে হয় অনেক সংগ্রাম। খাবারের জোগান দিয়ে নানামুখী অসুস্থতা পার করেই এদের টিকে থাকতে হয়।

জানা যায়, প্রায় ১০ হাজার বছর আগে থেকে মানুষ বিড়াল পুষছে। মানুষ দিনের বেলা যতোটা পরিষ্কার দেখে, বিড়ালেরা রাতে তার চেয়েও ভালো দেখতে পায়। বিড়ালের শোনার, দেখার এবং ঘ্রাণের ক্ষমতা মানুষের চেয়ে বহুগুণ বেশি।

শৌখিন ব্যক্তিরা ভিনদেশি জাতের কিংবা পার্সিয়ান জাতীয় বিড়াল পোষেন। দেশি বিড়াল পোষার চর্চাও আজকাল দেখা যায়। অনেকের ধারণা, বিড়ালের মাধ্যমে মানুষ আক্রান্ত হয় নানাবিধ অসুখে। কথা সত্যি হলেও পুরোপুরি নয়।  

প্রাণি চিকিৎসকদের মতে, একটি পোষা বিড়ালের নানাবিধ রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে বাইরের বিড়ালের চেয়ে অনেকাংশে কম। তবুও নিজের পোষ্য বিড়ালের নানা রোগের টিকা বা প্রতিষেধক, যা নিয়মিত ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ে থাকলে রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

সম্প্রতি বিড়ালের সামাজিকতা এবং সম্পৃক্ততার ওপর দুটি গবেষণা থেকে জানা যায়, বিড়াল খুবই সামাজিক এবং মানুষের সঙ্গে শক্তিশালী এবং দৃঢ় বন্ধনের প্রতি বেশ আগ্রহী। তাদের মধ্যে একঘেয়েমিতাও দেখা যায়।  

যদি কাজের সূত্রে বা ভ্রমণের জন্য বাহিরে থাকার প্রয়োজন হয়, তখন কাউকে দিনের কিছু সময় বিড়ালকে সঙ্গ দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। যার ফলে বিড়াল সঙ্গীর মনোযোগ, মানসিক উদ্দীপনা এবং ভালবাসা পাবে।  

তবে প্রতিদিন ক্যাট-সিটারের ব্যবস্থা না করতে পারলে বাড়ির পরিবেশকে ক্যাটিফাই বা বিড়াল উপযোগী করা যেতে পারে। অর্থাৎ, বাড়িতে ক্যাট ট্রি, অটোমেটিক ফিডারস, ফুড পাজলস, স্ক্যাটার টয় ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা যাতে বিড়াল আনন্দে তার একাকী সময় কাটাতে পারে।  

এ ছাড়া বিড়ালকে সঙ্গ দিতে আরেকটি বিড়ালও আনা যেতে পারে। এতে তারা নিজেদের মধ্যে খেলাধুলা, খুনসুটিতে ব্যস্ত থাকবে। তবে আগে থেকে তাদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে, কেননা তাদের একে অপরের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

তবে কাজে বাইরে যেতে হলে যতক্ষণ সম্ভব বাহিরে কম থাকা যায়, সে চেষ্টা করতে হবে। ভ্রমণের জন্য দীর্ঘদিন বাইরে থাকতে হলে অন্য কারও কাছে বিড়াল রেখে যাওয়াটাই বরং শ্রেয়। আর পারলে নিজের সঙ্গে করে প্রিয় বিড়ালকেও ঘুরিয়ে নিয়েও আসা যায় ভিন্ন পরিবেশে।

যারা বিড়াল ভালোবাসেন, তারা নিতান্তই নিজেদের ভালোলাগা ও প্রাণীদের প্রতি প্রেম থেকেই এদের পোষেন। একটি নিরাপদ বসবাসের জায়গা আর খাবারের নিশ্চয়তা ও রোগমুক্ত সুন্দর জীবন দিয়ে তারা খুঁজে পান প্রশান্তি।

বিড়াল পরিবেশের সম্পদ। রাস্তায় অবহেলায় থাকা এই অবলা প্রাণিকে অনেকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করছে। অনেক প্রাণীপ্রেমী এই প্রাণীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন, গড়ে উঠেছে রেসকিউ টিম। ফেসবুকেও  দেখা মেলে বিড়ালপ্রেমীদের।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৩
এসএস/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।