চট্টগ্রাম: ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যার কলঙ্কজনক দিন। জেনারেল জিয়াউর রহমানসহ পাকিস্তানফেরত সৈনিকেরা সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফ বীরউত্তমসহ আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধা সেনাকে হত্যা করেছিল।
অথচ দেশপ্রেমিক খালেদ মোশাররফ বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। সেদিন জিয়াউর রহমান গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে যা করেছিল তা এদেশকে আবার নব্য পাকিস্তানে পরিণত করে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে নগরের নিউমার্কেট সংলগ্ন দোস্তবিল্ডিং চত্বরে কলঙ্কজনক ৭ নভেম্বরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস ঘোষণার দাবিতে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলোত্তর সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সংগঠনের মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলার সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার। বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া, ফোরকান উদ্দিন আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার এইচকে নাথ, আবদুল মালেক খান, অ্যাডভোকেট সাইফুন নাহার খুশী, মোহাম্মদ জসীম, নাজিম উদ্দিন, সেলিম রহমান, পলাশ বড়ুয়া, পংকজ রায়, কামাল উদ্দিন, কোহিনূর আকতার, নবী হোসেন সালাউদ্দিন, নুরুল হুদা, ডা. ফজলুল হক সিদ্দিকী, নয়ন মজুমদার, রাজীব চন্দ, দীপন দাশ, শিলা চৌধুরী, আশরাফ রহমান, খোরশেদ আলম, এসএম মাহি প্রমুখ।
প্রধান বক্তা বেদার বলেন, সেদিনকার কথিত সিপাহি বিদ্রোহে অংশ নেওয়া অধিকাংশ সৈনিক ছিল পাকিস্তান প্রত্যাগত এবং তারা কেউই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কোনো ব্যাটালিয়নে ছিল না। সুতরাং এটি পরিষ্কার যে, ষড়যন্ত্র এবং জঘন্য হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার জন্যই বিশেষ মহল ৭ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল। আর বিশেষ মহলের নেপথ্যে কারা ছিল তা জাতির সামনে স্পষ্ট।
সভাপতি ডা. সরফরাজ বলেন, ৭ নভেম্বর প্রথম প্রকাশ্যে হত্যার শিকার হন দুজন সেক্টর কমান্ডার ও একজন সাব-সেক্টর কমান্ডার। আর এই ৭ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই ফাঁসিতে মৃত্যুবরণ করেন আরেকজন সেক্টর কমান্ডার। এছাড়া সেনাবাহিনীর ভেতরে ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধা অফিসার হত্যার শিকার হন। স্বাধীনতাযুদ্ধেও কোনো সেক্টর কমান্ডারকে প্রাণ হারাতে হয়নি। অথচ তথাকথিত বিপ্লব ও সংহতি দিবসের মিথ্যা ইতিহাস শুনিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের কুশীলবরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২৩
এআর/টিসি