ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‌প্রত্যেক প্রার্থীকে আচরণবিধি মানতে হবে, অন্যথায় ব্যবস্থা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৪ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৪
‌প্রত্যেক প্রার্থীকে আচরণবিধি মানতে হবে, অন্যথায় ব্যবস্থা

চট্টগ্রাম: জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফুন নাহার বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদেরকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। জাল ভোট প্রদান, কেন্দ্র দখল বা অন্য কোন অজুহাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে কোন ধরনের গুজব ছড়ালে ছাড় নেই।

সোমবার (১৩ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় ও আইন-শৃঙ্খলা বিষয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

লুৎফুন নাহার বলেন, আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও রাঙ্গুনিয়া এবং ২৯ মে তৃতীয় ধাপে বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা ও চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আদলে গত ৮ মে প্রথম ধাপে সীতাকুন্ড, মিরসরাই ও সন্ধীপ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আগামী ২১ ও ২৯ মে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য চট্টগ্রামের উল্লেখিত ৭টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার অফিসার ইনচার্জরাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে।  

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কবির আহমদ বলেন, প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী যে কোন ধরনের সহিংসতা রোধে জেলা পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। নির্বাচনে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা দেখলে অঙ্কুরে বিনষ্ট করে দেব। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আদলে গত ৮ মে প্রথম ধাপে এখানকার ৩টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল, আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদের নির্বাচনগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা হবে।

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান বলেন, আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। পিভিসি ব্যানার ও পোস্টার করা যাবে না। কেউ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইলে আমরা এক চুল পরিমাণও পিছ পা হবো না। আশঙ্কার জায়গা থাকবে না। এ নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না। ভোট সুন্দর ও সুষ্ঠু করার জন্য যা যা দরকার সবই করা হবে। সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় আমাদের একটাই চাওয়া-নির্বাচনকে সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য করা।  

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুছ আলী বলেন, নির্বাচনে কেউ জয়ী হবে, কেউ পরাজিত হবে, এটা বাস্তবতা ও মেনে নিতে হবে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সবাই আপনাদের পাশে আছে। নির্বাচনী এলাকায় অনুমতি ব্যতীত কোনো যানবাহন চলবে না। ভোটারদেরকে কেন্দ্রে আনা-নেয়ার জন্য যানবাহন ভাড়া করাও অবৈধ। আগামী ২১ মে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ১৭ মে রাত ১২টায় বন্ধ হয়ে যাবে।  ভোট গ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা করা যাবে।

সভায় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান বা পরিপত্র মেনে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট কেন্দ্রে  বা বাইরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে  যা যা করা দরকার তা-ই করবো। কোনো অপশক্তির কাছে আমরা মাথা নত করবো না।

সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবে। একজন প্রার্থীর পোস্টারের উপর অন্য প্রার্থীর পোস্টার লাগানো যাবে না। নির্বাচনী আচরণবিধি মানতে হবে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সভায় অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, আমাদের দৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র বলতে কিছু নেই। প্রার্থীরা যদি মনে করেন আছে, তাহলে তালিকা দিলে যাচাই-বাছাই করে দেখবো, আশঙ্কার জায়গা থাকবে না। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আইনের স্বপক্ষে থেকে যে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। নির্বাচনের দিন সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হবে ও বিকাল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ হবে।  

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফুন নাহারের সভাপতিত্বে সভায় 
চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা ও চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার অফিসার ইনচার্জ, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫১ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৪ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।