চট্টগ্রাম: তরুণদের আন্তর্জাতিক সংগঠন জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশের জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। ২০২৫ সালের নবনির্বাচিত জাতীয় কমিটিতে এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছেন শান শাহেদ।
সম্প্রতি রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে জাতীয় সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। এতে ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজী ফাহাদ, ডেপুটি ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন আরেফিন রাফি আহমেদ। এছাড়াও এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন ফাহিম আহমেদ ও তানভীর সাদ আকাশ ।
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী উদ্যমী তরুণদের একটি সংগঠন। এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির সেন্ট লুইসে। জেসিআইর ১২০টির বেশি দেশে কার্যক্রম রয়েছে এবং সারাবিশ্বে সদস্য সংখ্যা ২ লাখের বেশি। বাংলাদেশে বর্তমানে জেসিআইর প্রায় ৪০টি লোকাল চ্যাপ্টার কাজ করছে। তরুণদের দক্ষতা, জ্ঞান ও বুদ্ধির বিকাশের মাধ্যমে ব্যক্তিগত উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে এ সংগঠন।
জেসিআই বাংলাদেশের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে শান শাহেদ জানান, তিনি চট্টগ্রামসহ পুরো বাংলাদেশের তরুণদের নিয়ে কাজ করতে চান। কর্মদক্ষতা, পরামর্শ এবং নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধিসহ নানা বিষয় নিয়ে তরুণদের এমন একটি সম্ভাবনাময় কমিউনিটি গড়ে তোলার কথা বলেন চট্টগ্রামের এই সন্তান।
তিনি বলেন, ‘জেসিআই বাংলাদেশের বর্তমান পরিষদ তরুণদের প্রতিভা কিংবা মেধা বিকাশে আরো বেশি কর্মদক্ষ হবে এবং অনেক বেশি অবদান রাখবে। ’
শান শাহেদ উদ্যোক্তা হওয়া ছাড়াও দেশজুড়ে তার আরেকটি পরিচিতি রয়েছে, তিনি একজন সঙ্গীতশিল্পী যিনি জনপ্রিয় বান্ড তীরন্দাজ’র লিডভোকালিস্ট। ২০১৪ সালে সদস্য হিসেবে জুনিয়র চেম্বার চট্টগ্রামে যুক্ত হন শান শাহেদ। এরপর ২০১৫ ও ২০১৬ সালেও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১৭ সালে হন ডিরেক্টর, ২০১৮ সালে ট্রেজারার, ২০১৯ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট।
এ ছাড়া তিনি ২০২০ সালে জেনারেল লিগ্যাল কাউন্সেল ও ২০২১ সালে জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০২২ সালে জেসিআই চট্টগ্রামের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন শান শাহেদ। পরে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে জেসিআই বাংলাদেশের ন্যাশনাল ও রিজিওনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
২০১৩ সালের ১৭ মে ইভেন্টস অ্যান্ড অ্যাডভার্টাইজিং এজেন্সি ‘রেড কার্পেট’ শুরু করার মধ্য দিয়ে তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে সামনে আসেন শান শাহেদ। যে রেড কার্পেটের যাত্রা শুরু হয়েছিলো দেশের স্বনামধন্য এবং বিখ্যাত গিটারিস্ট ও কণ্ঠশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর হাতে ফিতা কাটার মধ্য দিয়ে। এরপর ধীরে ধীরে গড়ে তুলেন লজিস্টিক ফার্ম টেকনো প্রো, কনস্ট্রাকশন সাপ্লাইয়ার্স প্রতিষ্ঠান শারার এন্টারপ্রাইজ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে শাটল-ট্রেনে গুনগুন করতে করতে ২০০৮ সালে জন্ম হয় ব্যান্ড তীরন্দাজ-এর। সমমনা-সমসুরে সাত বন্ধু মিলে সুর তোলেন তীরন্দাজের গিটারে। সেই সুর শাটল ছাড়িয়ে জায়গা করে নেয় পুরো দেশের মানুষের হৃদয়ে। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে রক সংগীতের অনবদ্য এক অংশ।
তীরন্দাজের ভোকালিস্ট শান শাহেদ। তখনো ছিলেন-এখনো আছেন। শান বলেন, তীরন্দাজ যখন শুরু করেছিলাম মাথার ওপর ছায়া হয়ে সব সময় পাশে ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু ভাই। আর এখন অভিভাবক হিসেবে পাশে আছেন সোলস ব্যান্ডের পার্থ বড়ুয়া দাদা।
শান শাহেদ শুধু শিল্পী কিংবা ব্যবসায়ী নন। তিনি অনেক সামাজিক সংগঠনের সাথেও সংযুক্ত । তিনি পোর্ট সিটি অ্যালায়েন্স ও চেঞ্জ মেকার্স ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। এরই সাথে রোটারি ক্লাব অব চিটাগং কর্ণফুলীর প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ হিউমান রাইটস চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের জয়েন্ট সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এই তরুণ উদ্যোক্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪
বিই/টিসি