ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ মাঘ ১৪৩১, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ রজব ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রাঙ্গুনিয়া ও চন্দনাইশে নষ্ট হচ্ছে ফুলকপি-মুলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৫
রাঙ্গুনিয়া ও চন্দনাইশে নষ্ট হচ্ছে ফুলকপি-মুলা ...

চট্টগ্রাম: রাঙ্গুনিয়ার মুরাদনগর গ্রামের কৃষক রওশন আলী খান ১০ গন্ডা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছিলেন। শুরুতে কিছু ফুলকপি বিক্রি হয়।

এরপর বিক্রি না হওয়ায় প্রায় ফুলকপি জমিতেই নষ্ট হয়ে গেছে।

একই অবস্থা কৃষক মো. মহিউদ্দিনের।

১০ হাজার ফুলকপি আবাদ করেছেন তিনি। পাইকারিতে কেজি ৫ টাকা দিতে চায় বেপারিরা। তাই ক্ষোভে নিজের জমির ফুলকপি কুপিয়ে নষ্ট করে সেই ভিডিও শেয়ার করেছেন ফেসবুকে।  

পদুয়া ইউনিয়নের কৃষক হাকিম উদ্দিন জানান, সঞ্চয় ও এনজিও থেকে ঋণের টাকায় ফুলকপিসহ নানা সবজি উৎপাদন করে এখন বিপাকে পড়েছেন।  

শান্তিরহাট বাজারের বেপারিরা জানান, বাজারে ফুলকপির প্রচুর সরবরাহ আছে। পাশাপাশি মৌসুমী ব্যবসায়ী ও অনেক কৃষকরা বাজারে ফুলকপি বিক্রি করেন। তাই কিনে আনা ফুলকপির অর্ধেকই নষ্ট হয়ে যায়।

তবে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখনও ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, রাঙ্গুনিয়ায় সব ধরনের সবজির ভালো আবাদ হয়েছে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে ফুলকপির চাহিদা থাকে। দামও ভালো পাওয়া যায়। শেষের দিকে চাহিদা কমে। তবে প্রায় সব সবজিতেই ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।

অপরদিকে চন্দনাইশ উপজেলায় উৎপাদিত মুলার দাম না পেয়ে চাষিরা জমি থেকে তোলার পর ফেলে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। গত ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকা দরে।

চাষিরা জানান, জমি থেকে মুলা তুলে ধুয়ে বাজারে নিয়ে যাওয়ার পরিবহন খরচ, কুলি খরচ মিলে প্রতি কেজিতে ৭ থেকে ৮ টাকা খরচ পড়ে। অথজ প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকায়। তাই কেউ মুলা তুলে নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছেন অথবা জমির এক পাশে গর্ত করে মাটি চাপা দিচ্ছেন। আবার কেউ জমির পাশে মুলা স্তূপ করে রাখছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ ও জমি বর্গা নিয়ে চাষ করার কারণে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ফুলকপি ৪ থেকে ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শঙ্খচরের চাষি মোহাম্মদ মারুফ, মোহাম্মদ হাসান ও মাহামদ আলী জানান, প্রতি বছর শীতকালীন সবজির শুরুর দিকে তারা আগাম সবজি চাষাবাদ করতে পারলে লাভবান হন। জমিতে সেচ দিতে না পারা অথবা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবজি উৎপাদনে দেরি হলে লোকসান গুণতে হয় বেশি।  

শঙ্খচরে উৎপাদিত সবজিতে সেচ সুবিধা পাওয়ার জন্য চরের বিভিন্ন পয়েন্টে গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি সুবিধাজনক স্থানে সবজি সংরক্ষণের জন্য একটি হিমাগার স্থাপনেরও দাবি জানান।

দোহাজারী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈকত বড়ুয়া বলেন, এ অঞ্চলে উৎপাদিত সবজির সাথে উত্তরবঙ্গের সবজিও একইসাথে বাজারে আসায় বর্তমানে সবজির দাম কমে গেছে। যেসব চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। পরবর্তীতে প্রণোদনা এলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রদান করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৫
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।