চট্টগ্রাম: এ যেন তালের পাহাড়। একেকটি স্তূপে ১৫-২০ হাজার তাল।
নগরের ফলমন্ডি থেকে কদমতলীর মূল সড়ক এখন জমজমাট তালের হাট। সাতক্ষীরা, খুলনা, কুমিল্লা, চাঁদপুর থেকে ট্রাকে, কাভার্ডভ্যানে প্রতিদিন তাল নামে এ হাটে। সীতাকুণ্ড থেকেও আসছে তাল, পরিমাণে কম। ভোর হতে জমে ওঠে কেনাবেচা। চলে সারাদিনই। নগর ও বিভিন্ন উপজেলার খুচরা বিক্রেতারা রিকশা, ভ্যান, মিএনজি অটোরিকশা, বাসে, মিনি ট্রাকে তাল নিয়ে যায়। প্রতি একশ তাল আকার ও শাঁসের মানের ওপর নির্ভর করে ২ থেকে ১১ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে। কয়েকদিন আগেও ৫-১৫ টাকা ছিল তালের দর।
তীব্র গরমে মৌসুমের শুরুতে তালের চাহিদা বাড়লেও কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পাইকারি বাজারে ভাটা পড়েছে। শুধু যে অলিগলির খুচরা বিক্রেতারা তাল কিনছে তা নয়, গৃহস্থরাও তাল কিনছেন। বিশেষ করে যৌথ পরিবার, নতুন বেয়াই বাড়ি হয়েছে এমন পরিবারও তাল কিনছে। শৌখিন ক্রেতারা মোটর সাইকেলে বেঁধে তাল নিয়ে ঘরে ফিরছেন এটা কমন দৃশ্য।
সড়কের ওপর হাতলওয়ালা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে শ্যালকের তালের ব্যবসা দেখাশুনা করছেন মোশাররফ হোসেন।
তিনি জানান, সাতক্ষীরা থেকে এক ট্রাক তাল এসেছে। মোবাইলে ব্যাংকিংয়ে টাকা পাঠালে তাল পাঠাই দেন আড়তদার। ৩২ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া। আজ যে তাল এসেছে তা ১০-১১ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
তিনি জানান, খুলনা, চাঁদপুর, কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে আসে তাল। এখান থেকে আবার তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার, টেকনাফও তাল যায়। টেকনাফে শক্ত শাঁসের তাল চলে বেশি।
বছরের ১১ মাস ডাবের ব্যবসা করেন আরিফুল ইসলাম। এক মাস তালের ব্যবসা। ফুটপাতে মুখ ভার করে হিসাব করছেন খরচের।
বললেন, বরগুনার পাথরঘাটার আড়ত থেকে ২৭ হাজার ৫০০ টাকা ভাড়াতে মাঝারি এক ট্রাক তাল এনেছি। ১৪-১৫ হাজার তাল হবে। ১৪ টাকার তাল ৭ টাকা আজ। কাঁচামাল রাখা যাবে না। তাই বিক্রি করে দিচ্ছি।
তিনি জানান, বৃষ্টির কারণে এবার লস হবে। তালের মৌসুম১৫ দিন থেকে একমাস থাকবে। তবে ঈদের আগে আর তাল বেচতে আসবো না।
বেপারীদের মন খারাপ হলেও খুশি খুচরা বিক্রেতারা। অলিগলিতে ১৫-২০ টাকা অনায়াসে বিক্রি হবে প্রতিটি তাল।
কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে তাল কিনতে এসেছিলেন আবু তাহের। তিনি জানান, এখানে বেছে কিনতে পারলে বেশি দামে বেচে দিতে পারবো। আশাকরি লাভ হবে।
এআর/পিডি/টিসি