চট্টগ্রাম: নগরীর জিইসি মোড় থেকে ওয়াসা মোড় পর্যন্ত ফুটপাত থেকে ১৪টি অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণ করেছে সিটি করপোরেশন ও নগর পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এসব বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন নগর পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল।
করপোরেশন সূত্র জানায়, জিইসি মোড় থেকে রিলেশন অ্যাডের দুইটি, মৃত্তিকা অ্যাডের একটি, স্কাই আর্টের একটি অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণ করা হয়েছে।
নগর পুলিশের কোতয়ালি জোনের সহকারি কমিশনার শাহ মো.আব্দুর রউফ বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন ও নগর পুলিশের যৌথ অভিযানে ছোট বড় ১৪টি বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধ বিলবোর্ড স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে সিএমপি অধ্যাদেশে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম নগরীতে বিলবোর্ড স্থাপন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা আছে। মাসখানেক আগে চট্টগ্রাম সফরে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যত্রতত্র বিলবোর্ড নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মন্ত্রী এজন্য সিটি কর্পোরেশনকেও দায়ী করেন।
নগরীতে বিলবোর্ড ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু। নগর যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং যুবদলের অনেক নেতাও এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মূলত তাদের রাজনৈতিক দাপটের কাছে অসহায় সিটি কর্পোরেশন অতীতে বারবার উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েও পরে পিছিয়ে গেছে।
এ অবস্থায় কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর বিলবোর্ড উচ্ছেদে এগিয়ে আসেন আব্দুল জলিল মণ্ডল। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ৪২২টি অবৈধ বিলবোর্ডের একটি তালিকা নগর পুলিশকে দেয়া হয়।
ওই তালিকা ধরে গত ১৬ নভেম্বর থেকে বিলবোর্ড উচ্ছেদ অভিযানে নামে নগর পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশন। শুরুতেই নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিলবোর্ড বাধার মুখেও উপড়ে ফেলে নগর পুলিশ যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছে, আবার এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আরশাদুল আলম বাচ্চুর বিলবোর্ড উচ্ছেদ করতে না পেরে সমালোচনাও কুড়িয়েছে।
তবে মাত্র ৩১টি বিলবোর্ড উচ্ছেদের পর অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। ডিসেম্বরের শুরুতে নগরীর বাকলিয়া থানায় ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে বিলবোর্ড উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে অসহায়ত্বের কথাও শোনা গেছে পুলিশ কমিশনারের মুখে।
এরপর ১৩ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার আরও অসহায়ত্ব নিয়ে বলেন, বিলবোর্ড উচ্ছেদ তার কাজ নয়।
২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সিটি করপোরেশন ও নগর পুলিশ পুনরায় যৌথভাবে বিলবোর্ড উচ্ছেদ শুরু করে। অবৈধ বিলবোর্ড সরিয়ে নিতে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে গত রবিবার পর্যন্ত তিনদিনের সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
সময় সীমা পার হলেও অবৈধ বিলবোর্ড সরিয়ে নেয়নি ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়।
নগর পুলিশের কোতয়ালি জোনের সহকারি কমিশনার শাহ মো. আব্দুর রউফ বাংলানিউজকে বলেন,‘এখন থেকে প্রতিদিন অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ অভিযান চলবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারী ০৮, ২০১৫
