চট্টগ্রাম: বছরের প্রথম দিন (১ জানুয়ারী) সারাদেশে একযোগে বই উৎসব পালন করার কথা থাকলেও চট্টগ্রামের ১০ শিক্ষা থানায় এখনো কোন বই না পৌঁছায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ৩৩ বিষয়ে এবছর ৫১ লাখ ৯৭ হাজার ২০টি পাঠ্যপুস্তক চাহিদা থাকলেও রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেল পর্যন্ত চট্টগ্রামের ২০ শিক্ষা থানায় পৌঁছেছে শুধুমাত্র ৩৬ ভাগ।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ১০ লাখ ৮৮ হাজার ১০৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য এ চাহিদাপত্র পাঠায় চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। শিক্ষা অধিদপ্তর চাহিদার প্রেক্ষিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) তা বাস্তবায়ন করেন এবং প্রত্যেক শিক্ষা থানায় পাঠ্যপুস্তকগুলো পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে।
চট্টগ্রাম সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হৃশীকেশ শীল বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিকে ৩৩ বিষয়ে এবছর ৫১ লাখ ৯৭ হাজার ২০টি পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা অনুসারে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রত্যেক শিক্ষা থানায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। চট্টগ্রামের ২০ শিক্ষা থানায় ইতোমধ্যে চাহিদার ৩৬ ভাগ পাঠ্যপুস্তক পাঠাতে সক্ষম হয়েছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাব তিনি আরও বলেন, কোথায়, কত পাঠ্যপুস্তক পৌঁছেছে, তা তদারকি করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রামে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাপাখানা চাহিদা অনুসারে থানায় থানায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। আশা করি ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে চাহিদার সকল পাঠ্যপুস্তক থানা ভিত্তিক পৌঁছে যাবে। আমরা (জেলা শিক্ষা অফিস) প্রতিদিনের পাঠ্যপুস্তকের প্রাপ্তির তথ্য থানা শিক্ষা অফিস থেকে নিয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরে জানানো হচ্ছে।
থানাভিত্তিক চাহিদা: বাঁশখালীতে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ১০৫টি পাঠ্যপুস্তক, সন্দ্বীপে ২ লাখ ১৬ হাজার ৯২৭টি, রাউজানে ২ লাখ ১০০টি, ফটিকছড়িতে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫২০টি, পটিয়ায় ৩ লাখ ৭৩ হাজার ২০০টি, আনোয়ারায় ২ লাখ ৮২ হাজারটি, বোয়ালখালীতে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯২৭টি, লোহাগাড়ায় ২ লাখ ৩২ হাজার ৫০০টি, ডবলমুরিং থানায় ৩ লাখ ৫২ হাজার ৭৩৭টি, চন্দনাইশে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৫০টি, হাটহাজারীতে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৪৭৫টি, রাঙ্গুনীয়ায় ২ লাখ ৪১ হাজার ৫২১টি, মীরসরাইয়ে ২ লাখ ২৮ হাজার ৪০৮টি, সীতাকুণ্ডে ২ লাখ ৪৯ হাজার, পাহাড়তলী থানায় ২ লাখ ৪৮ হাজার ৮৫৬টি, বন্দর থানায় ৩ লাখ ৩৩ হাজারটি, কোতোয়ালী থানায় ২ লাখ ২০ হাজার ৩২০টি, পাঁচলাইশ থানায় ২ লাখ ৯৮ হাজার ৮০০টি, চান্দগাঁ থানায় ৩ লাখ ২৪ হাজার ৬০০টি, সাতকানিয়া থানায় ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭৭৪টি পাঠ্যপুস্তক।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর ৫১ লাখ ৯৭ হাজার ২০টি পাঠ্যপুস্তকের চাহিদার মধ্যে রাউজান, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, চন্দনাইশ, হাটহাজারী, রাঙ্গুনীয়া ও চান্দগাঁও শিক্ষা থানায় চাহিদার শতভাগ পাঠ্যপুস্তক পৌঁছেছে।
ডবলমুরিং শিক্ষা থানায় চাহিদার ২৫ ভাগ, সীতাকুণ্ডে ৪৮ ভাগ, পাহাড়তলীতে ৪৮ ভাগ, বন্দরে ৪৯ ভাগ পাঠ্যপুস্তক পৌঁছেছে। তবে বাঁশখালী, স্বন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, পটিয়া, আনোয়ারা, বোয়ালখালী, মিরসরাই, কোতোয়ালী, পাঁচলাইশ, সাতকানিয়া-এ ১০ শিক্ষা থানায় এখনো কোন পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে নি।
জেলা প্রাথমিক মনিটরিং কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম জেলার ৪ হাজার ৭৯২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সম্ভাব্য শিক্ষার্থী ১০ লাখ ৮৮ হাজার ১০৫ জন। প্রথম থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩টি পাঠ্যপুস্তক (বাংলা, ইংরেজী ও গনিত)। ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণিতে ৬টি পাঠ্যপুস্তক (বাংলা, ইংরেজী, গণিত, সমাজ, বিজ্ঞান ও ধর্ম)। চট্টগ্রামে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির ৩৩টি বিষয়ে এবছর চাহিদা ৫১ লাখ ৯৭ হাজার ২০টি পাঠ্যপুস্তক। ২০১৬ সালে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ৫১ লাখ ৭৪ হাজার ৬১৩টি পাঠ্যপুস্তক। চাহিদার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে থানা শিক্ষা অফিসগুলোতে ৩৬ ভাগ পাঠ্যপুস্তক পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ সময় : ১৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
এসবি/টিসি