চট্টগ্রাম: বন্দরের অভ্যন্তরে স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখতে আমদানি করা এফসিএল কন্টেইনার দ্রুত সময়ের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ফ্রি টাইমের (বন্দরে আনার চারদিন) মধ্যে বন্দর ইয়ার্ড থেকে আমদানি পণ্যের কন্টেইনার না নিলে দ্বিগুণ ভাড়া আরোপ করা হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
তবে বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বন্দরের সক্ষমতা না বাড়িয়ে বন্দর সচল রাখার অজুহাতে এফসিএল কন্টেইনারে ভাড়া দ্বিগুণ করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। এজন্য বন্দরের কন্টেইনার ইয়ার্ড বাড়ানো জরুরি।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বন্দরের অভ্যন্তরে আমদানি করা এফসিএল কন্টেইনারের সংখ্যা ইয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতার বেশি হয়ে যাওয়ায় স্থান সংকটসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। এ অবস্থায় বন্দর ব্যবহারকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এফসিএল কন্টেইনার দ্রুত সরিয়ে নিতে অনুরোধ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে কন্টেইনার সরিয়ে নিতে গত ৬ ডিসেম্বর নির্দেশনা জারি করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) গোলাম সরওয়ার স্বাক্ষতির ওই নির্দেশনায় বলা হয়, ‘বন্দর ইয়ার্ড থেকে জরুরি ভিত্তিতে এফসিএল কন্টেইনার সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করা হলো। সহসা বন্দর অভ্যন্তরে এফসিএল কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ফ্রি টাইমের পর থেকে স্বাভাবিকের দ্বিগুণ হারে ভাড়া আরোপ করা হবে। ওই নির্দেশনায় ১৫ ডিসেম্বর থেকে দ্বিগুণ হারে ভাড়া আরোপ কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে পরে আাগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোলাম সরওয়ার।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বন্দরে এফসিএল কন্টেইনার বেশি হওয়ার কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে আমদানি করা কন্টেইনার সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্দেশ জারির পরও অনেকেই কন্টেইনার নিয়ে যায়নি। তাই দ্বিগুণ ভাড়া আরোপের সিদ্ধান্ত হয়। বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখতে আমাদের এ ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
তবে বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, চারদিনের মধ্যে কন্টেইনার ডেলিভারি দেওয়ার মতো সক্ষমতা বন্দরের না থাকলে জরিমানা আরোপ করে এ সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।
বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহসভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বন্দর সচল রাখতে দ্বিগুণ জরিমানা সমাধান নয়। জরিমানা আরোপের আগে বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এরপর যদি কেউ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কন্টেইনার না নেয় সেক্ষেত্রে জরিমানা করতে পারে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বাংলানিউজকে বলেন, বন্দর ও কাস্টমস চারদিনের মধ্যে কন্টেইনার ডেলিভারি অনেক সময় দিতে পারে না। কখনো কখনো কাস্টমস আমদানি পণ্যের কায়িক পরীক্ষা করে। ফলে চারদিনের মধ্যে ডেলিভারি নেওয়া সম্ভব হয় না।
আমদানি পণ্যের উপর অতিরিক্ত চার্জ আরোপ করা হলে তা ভোক্তাদের উপর গিয়ে পড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমদানি পণ্যের কন্টেইনারে দ্বিগুণ ভাড়া আরোপ করা হলে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। যা সাধারণ ভোক্তাদেরকেই দিতে হয়।
ভাড়া দ্বিগুণ করাই সমাধান নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। কন্টেইনার রাখার জন্য পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা করা জরুরি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
এমইউ/আইএসএ/টিসি