চট্টগ্রাম: সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার বিষয়ে বাবুলের শ্বশুড় মোশাররফ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১১টার দিকে সিএমপি কার্যালয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) মো.কামরুজ্জামান জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মো.কামরুজ্জামান জানান, মিতু হত্যা মামলার বিষয়ে কথা বলতে তার বাবা ও বাবুল আক্তারের শ্বশুড় মোশাররফ হোসেনকে আসতে বলেছিলাম। কিছু তথ্য জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জিজ্ঞাসাবাদের এক ফাঁকে মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে পুলিশের এই কর্মকর্তা আমাকে ডেকেছিলেন। মিতু হত্যার বিষয়ে তারা আমার সঙ্গে কথা বলতে চান।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর বাবুল আক্তারও সিএমপিতে আসেন। স্ত্রী খুনের মামলার বাদি হিসেবে ওইদিন বাবুল আক্তার সিএমপিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের কার্যালয়ে হাজির হয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন।
এই বিষয়ে কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেছিলেন, মামলার বিষয়ে কথা বলার জন্য আমি মৌখিকভাবে উনাকে (বাবুল আক্তার) আমার কার্যালয়ে আসার অনুরোধ করেছিলাম। অনেকবার অনুরোধের পর তিনি এসেছেন। বাদি হিসেবে মামলা তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। আমিও কিছু তথ্য জানতে চেয়েছিলাম। সেগুলো তিনি জানিয়েছেন।
গত ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর ও আর নিজাম রোডে দুর্বৃত্তদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন সদর দপ্তরে কর্মরত তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকান্ডের পর গত ২৪ জুন রাতে বাবুল আক্তারকে রাজধানীতে তার শ্বশুরের বাসা থেকে তুলে নিয়ে টানা ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। মামলার বাদিকে আসামির মতো তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় হত্যাকাণ্ডের কারণ নিয়ে দেশজুড়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের জন্য বাবুল আক্তারকে ইঙ্গিত করে খবর প্রকাশ হয়।
মিতু হত্যা মামলায় এই পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই মামলার দুজন আসামি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। দুজন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে জানিয়েছে, মুছার নির্দেশে এবং তদারকিতে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।
পুলিশের সোর্স মুছা বাবুল আক্তারের ঘনিষ্ঠজন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
সিএমপির গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত উপ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার হয়েছিলেন বাবুল আক্তার। হত্যাকান্ডের আগের দিন তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশ সুপার পদে যোগ দিতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। স্ত্রী হত্যার পর বাবুল আক্তার ঘটনা পরিক্রমায় চাকরিতে ইস্তফা দেন। বর্তমানে তিনি একটি হাসপাতালে যোগ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
আরডিজি/আইএসএ/টিসি