চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও মরমি গানের কিংবদন্তী আবদুল গফুর হালীর জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বাদে মাগরিব অনুষ্ঠিত জানাযার নামাজে ইমামতি করেন লেবানন থেকে আগত আল্লামা ড. সৈয়দ শেখ জামাল মুহাম্মদ সাক্বার আল হোসাইনী।
জানাযায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী ও শুভাকাঙ্খী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে একই দিন বাদ জোহর ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) নিজ গ্রাম পটিয়া উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের শোভনদণ্ডীতে বাদ জুমা তৃতীয় ও শেষ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নগরীর সার্সন রোডে মাউন্ট হাসপাতালে সঙ্গীতের এই দিকপালের জীবনাবসান ঘটে।
মৃত্যুকালে আবদুল গফুর হালীর বয়স হয়েছির ৮৮ বছর। ৬০ বছর ধরে একটানা গান লিখে চলা গফুর হালী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত দুই মাস ধরে হাসপাতালে শয্যাশায়ী ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও অসংখ্য ভক্ত-গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বড় ছেলে আব্দুল খালেক, ছোট ছেলে হালী নুর, বড় মেয়ে ফরিদা বেগম, ছোট মেয়ে চেমন আরা, এই কিংবদন্তীর বংশের একমাত্র শিল্পী তার নাতনী ফেরদৌস হালী, নাতি জুয়েল, সবুজ সকলেই গফুর হালীর মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আবদুল গফুর হালী চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও মাইজভাণ্ডারী গানের কিংবদন্তী গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী। শেফালী ঘোষ, সন্দীপন, শিরিনসহ অনেক শিল্পীর উত্থান গফুর হালীর গান গেয়ে। হালীর গান নিয়ে জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাগ্রন্থ।
শিল্পী শেফালী ঘোষের গাওয়া 'ও শ্যাম রেঙ্গুম নঅ যাইওরে', সন্দীপনের কণ্ঠে 'সোনাবন্ধু তুই আমারে করলিরে দিওয়ানা', শিরিনের কণ্ঠে 'পাঞ্জাবিওয়ালা' ও 'মনের বাগানে ফুটিল ফুলরে' এবং কল্যাণী ঘোষের গাওয়া 'দেখে যারে মাইজভাণ্ডারে হইতেছে নুরের খেলা'- এমন অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা আবদুল গফুর হালী। তিনি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাজ্ঞী হিসেবে পরিচিত শিল্পী শেফালী ঘোষের সঙ্গীতগুরু।
বাংলাদেশ সময়:১৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
এসবি/টিসি