কক্সবাজার: ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, বায়ান্নের ভাষা অন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা অন্দোলন আর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখায় ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি)।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকাল পাঁচটায় কসউবির ১৪২ বছর উপলক্ষে প্রাক্তন ছাত্রদের পুনর্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক সোমেশ্বর চক্রবর্তী এ কথা বলেছেন।
বিদ্যালয়ের শহীদ শাহ আলম-বশির মিলনায়তনে আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে এ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্র শহীদ হন। বায়ান্ন সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারে প্রথম ভাষা আন্দোলনের মিছিল বের করেন ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র খালেদ মোশাররফ।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের ইতিহাসের সাথে মিশে থাকা বিদ্যালয়টি অবদান রেখেছে উচ্চশিক্ষা ও নারী শিক্ষা প্রসারে। ১৯৬২ সালে কক্সবাজারে কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলেও নিজস্ব ভবন হওয়ার আগে কলেজের কার্যক্রম চলত এই বিদ্যালয়ে। এ ছাড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয় হওয়ার আগে এই বিদ্যালয়ে সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘শতবর্ষের কোলাহলে একসাথে সকলে’ স্লোগানে ২৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রাক্তন ছাত্রদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম। প্রধান বক্তা থাকবেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ড. আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
কসউবি পথচলা সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিতে গিয়ে অধ্যাপক সোমেশ্বর চক্রবর্তী বলেন, ১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রাচীনতম বিদ্যালয়গুলোর অন্যতম কসউবি। ওই বছর বিদ্যালয়টি প্রথমে মাদ্রাসা হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এরপর ১৯০৮ সালে ব্রিটিশ সরকারের প্রভাব ও স্থানীয় জনগনের ইচ্ছায় বিদ্যালয়টি (এমই) মিডল ইংলিশ বিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হয়। ১৯২৩ সালের ৪ জানুয়ারি এটি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে (এইচই) উন্নীত হয় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি পায়। ১৯৫২ সালে এই বিদ্যালয় থেকে প্রথমবারের মতো ৬ জন ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়। এর মধ্যে চারজন প্রথম বিভাগে উন্নীত হয়ে তাক লাগায়। ওই বছরই বিদ্যালয়টি মডেল হাইস্কুল ও ১৯৭০ সালে জাতীয়করণের মাধ্যমে কক্সবাজার উচ্চ বিদ্যালয় নামকরণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৬
টিটি/টিসি