চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের মধ্যে অর্ন্তকোন্দল নিয়ে আলোচনায় বসে উপাচার্য ড.ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীকেও সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় তিনি উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ছাত্রলীগ কি আপনাকে ভিসি বানিয়েছে ? নাকি ছাত্রলীগ আপনাকে চেয়ারে রাখতে পারবে ?
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসায় গিয়ে সকালের নাস্তা করেন ওবায়দুল কাদের।
সেখানে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনকে ডেকেছিলেন কাদের। তবে টিপু উপস্থিত ছিলেন না।
নাস্তার টেবিলে যাবার আগে আলাপচারিতার শুরুতেই ওবায়দুল কাদের উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কয়েকদিন পর পর আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অবস্থা হয় কেন ? এটাকে কি সঠিক জায়গায় নিয়ে আসা যায়না ?
জবাবে উপাচার্য বলেন, স্যার, এখন তো সঠিক পথে আছে।
কাদের বলেন, কোথায় সঠিক পথে আছে ? এই যে টেন্ডার নিয়ে মারামারি হবে কেন ? আপনি ইলেকট্রনিক টেন্ডার চালু করছেন না কেন ?
জবাবে উপাচার্য বলেন, অলরেডি ই-টেন্ডার শুরু হয়েছে স্যার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে উপাচার্য ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, স্যার, এরা (টিপু-সুজন) আমার সামনে আসলে ঠিক থাকে। কিন্তু বাইরে গিয়ে সামান্য, ছোটখাট বিষয় নিয়ে মারামারি করে।
এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ভিসি সাহেব, আপনি কোন পক্ষ নেবেন না।
উপাচার্য বলেন, আমি কোন পক্ষ নিই না। আমি পার্টিজান নই।
কাদের বলেন, আপনার পার্টিজান হওয়ার দরকার নেই তো। ছাত্রলীগ কি আপনাকে ভিসি বানিয়েছে ? নাকি ছাত্রলীগ আপনাকে চেয়ারে রাখতে পারবে ? মেয়াদ শেষ হলে ছাত্রলীগ কি আন্দোলন করে আপনাকে রাখতে পারবে ?
‘রাজনৈতিক দল কিংবা আদর্শের প্রতি আপনার সমর্থন থাকতে পারে। সেটা অন্যায় কিছু নয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে তো আপনাকে নন পার্টিজান হতে হবে। ’ বলেন ওবায়দুল কাদের।
এসময় নিশ্চুপ থাকেন চবি উপাচার্য ড.ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।
উপাচার্যকে এসব কথা বলার সময় এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) নূর ই আলম চৌধুরী মিনা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন এবং নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রণি।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর চশমাহিলে মহিউদ্দিনের বাসায় যান কাদের। দেড় ঘণ্টা অবস্থানের পর সকাল ১০টার দিকে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে সড়কপথে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬
আরডিজি/টিসি