কানায় কানায় পূর্ণ পুরো মিলনায়তন একেবারে চুপচাপ। যেন এ মুহূর্তে বৃষ্টির ফোটা পরলেও তার স্পষ্ট শব্দ শোনা যাবে।
একটু পর সেই নীরবতার মধ্যে থেকে উপস্থাপক বললেন, আর দুইদিন পর আমরা বিজয়ের ৪৮ বছর উদযাপন করবো। কিন্তু, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর যে শোক, তা আগামী ৪৮ লাখ বছরেও শেষ হবার নয়।
১৪ ডিসেম্বর ইতিহাসের এক রক্তাক্ত অধ্যায়। জাতিকে মেধাহীন করতে রাতের অন্ধকারে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যকদের হানাদার বাহিনী নারকীয়ভাবে হত্যা করে এই দিনে।
সেই বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় থিয়েটার ইন্সটিটিউট চট্টগ্রাম মিলনায়তনে দৃষ্টি চট্টগ্রাম আয়োজন করে বিশেষ অনুষ্ঠান মুক্তির কথা শুনি।
স্মৃতিচারণ আর গল্পের ফাঁকে ফাঁকে অনুষ্ঠানে প্ল্যানচ্যাট বিতর্ক, আবৃত্তি, গান ও বুদ্ধিজীবীদের জীবনী থেকে পাঠ করেন নন্দিত শিল্পীরা। সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান তার বাবা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আতাউর রহমান খান কায়সারের লেখা একটি চিটি পাঠ করে শুনান। একটুপর নাট্যজন সাবিরা সুলতানা বিনা পাঠ করেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি থেকে।
উপ পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের চরিত্রায়ন করেন। কবি ও ছড়াকার জিন্নাহ চৌধুরী ‘নতুন চন্দ্র সিংহ’, সাইফুদ্দিন মুন্না ‘জহির রায়হান’, কাজী আরফাত ‘ডা. আবদুল আলীম চৌধুরী’, মিলি চৌধুরী ‘জাহানারা ইমাম’, মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম ‘মুনির চৌধুরী’, তানভির আহমেদ সিদ্দিকী ‘শহিদুল্লাহ কায়সারে’র চরিত্রায়ন করেন।
আবৃত্তি করেন ফারুক তাহের ও সায়ারা শানাফা শ্রুতি। পুরো আযোজনে দেশের গান পরিবেশন করেন বনকুসুম বড়ুয়া নুপুর, প্রিয়ম দাশ ও মাহফুজুল ইসলাম। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক নিতাই কুমাই ভট্টাচার্য ও দৈনিক পূর্বকোণের ফিচার সম্পাদক এজাজ ইউসুফী।
দৃষ্টি চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক সাবের শাহ’র কথামালায় শুরুতেই দৃষ্টি চট্টগ্রামের সভাপতি মাসুদ বকুলের বক্তব্য পুরো অনুষ্ঠানকে আবেগময় করে তুলে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দৃষ্টির সিনিয়র সহ সভাপতি সাইফ চৌধুরী ও অনুষ্ঠান সহ সমন্বয়কারী জিকু দাশ।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯
এমআর/টিসি