দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. ফখরুল ইসলামের সই করা ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও বিধি বহির্ভূতভাবে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে ১৪২ জনকে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ৪৬ জন কর্মচারীর চাকরীতে যোগদানের তারিখ থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তাদের আহরিত বেতন ভাতা সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করা জরুরি।
অনিয়ম তদন্তের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, তদন্তের স্বার্থে দুদকের কিছু তথ্য প্রয়োজন।
গত ডিসেম্বরের ১৪ তারিখ ইস্যু করা এ চিঠিতে দুদক ডিসেম্বরের ১৮ তারিখের মধ্যে ৪৬ জন কর্মচারীর বেতন-ভাতা সংক্রান্ত তথ্য দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হলেও ২ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব তথ্য দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
দুদকের তথ্য চাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নূর আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চিঠি পেয়েছি। তথ্য গুলো গুছিয়ে আনতে সময় লাগছে। এ কারণে আমরা কয়েকদিন সময় নিয়েছি। খুব সহসা তথ্য দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২২ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, ডিন, সাবেক প্রক্টরসহ ৮ শিক্ষক, ৩ কর্মকর্তা এবং ৩৫ কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. ফখরুল ইসলামের সই করা এক অফিস আদেশে এসব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী গত আগস্টে নির্ধারিত সময়ে দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার কাছে নিজেদের বক্তব্য প্রদান করেন।
দুদকের তলব করা ৮ শিক্ষকের মধ্যে ছিলেন, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এএফএম আওরঙ্গজেব, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বিজ্ঞান ওয়ার্কশপের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. শফিউল আলম, সাবেক প্রক্টর প্রফেসর মো. আলী আজগর চৌধুরী।
তালিকায় ছিলেন, শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট প্রফেসর মো. গোলাম কবীর, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সভাপতি ড. মো. সুমন গাঙ্গুলী, ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস এর পরিচালক মো. জাহেদুর রহমান এবং পরিবহন দফতরের প্রশাসক প্রফেসর ড. মো. রাশেদ উন নবী।
৩ কর্মকর্তার মধ্যে ছিলেন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কেএম নুর আহমদ, হিসাব নিয়ামক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফরিদুল আলম এবং উপাচার্য দফতরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (কম্পিউটার) মো. জাহাঙ্গীর আলম।
ইউজিসির নির্দেশনা উপেক্ষা করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৯তম সিন্ডিকেট সভায় ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে ১৪২ জনকে নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়। নানা অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত, অস্ত্রধারী, এমনকি চাকরির জন্য আবেদন না করা ব্যক্তিকেও ওই সময়ে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২০
এমএ/টিসি