মালখানায় জমা রয়েছে বিভিন্ন মামলায় আলামত হিসেবে জব্দ করা নথি, টাকা, অলংকার, যানবাহন। মালখানায় থাকা এসব আলামত হেফাজতের দায়িত্বে রয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশন শাখায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা।
অভিযোগ উঠেছে, মালখানায় জব্দ করা নানা আলামত ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য। অভিযোগ মহানগর সদর কোর্ট (মালখানা) ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম বাহারের বিরুদ্ধে।
বাংলানিউজের অনুসন্ধানে এসআই সেলিম বাহারের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে। একটি মামলায় জব্দ করা একটি প্রাইভেট কার দীর্ঘদিন ধরে তিনি ব্যবহার করে আসছেন। প্রাইভেট কারটির নম্বর চট্টমেট্রো-গ ১১-৪৯৯৩। গাড়িটির মালখানার রেজিস্ট্রার নম্বর ৪৫৯৭/১৯।
এসআই সেলিম বাহার প্রাইভেট কারটির সামনে একটি কাগজে ‘ডিবি সিএমপি’ লিখে ব্যবহার করেন। নিয়মিত গাড়িটি তিনি তার হালিশহরের বাসায় যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করেন। অভিযোগ রয়েছে সম্প্রতি আলামতের গাড়িটি দুর্ঘটনা কবলিতও হয় তার হেফাজতে। প্রাইভেট কারের বাম্পারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমনটি দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালেও প্রাইভেট কারটি ব্যবহার করে চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় অফিসে আসেন এসআই সেলিম বাহার। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত প্রাইভেট কারটি নতুন আদালত ভবনের পূর্বদিকে (জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পেছনে) পার্কিং করে রেখেছিলেন। বিকেল সাড়ে ৪টার পর ওই প্রাইভেট কারটি নিয়ে অফিস থেকে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন এসআই সেলিম বাহার।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে মহানগর সদর মালখানায় গিয়ে গাড়িটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে নানা অযুহাতে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এসআই সেলিম বাহার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহানগর সদর কোর্টের মালখানায় দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য নিশ্চিত করেছেন এসআই সেলিম বাহার দীর্ঘদিন ধরে প্রাইভেট কারটি (চট্টমেট্রো-গ ১১-৪৯৯৩) ব্যবহার করে আসছেন।
‘স্যার (এসআই সেলিম বাহার) প্রাইভেট কারটি করে বাসায় যাতায়াত করেন। সকালে আসেন, বিকেলে বাসায় যান। ’ যোগ করেন তিনি।
পরে মোবাইল ফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর সদর মালখানার ইনচার্জ এসআই সেলিম বাহার বাংলানিউজকে বলেন, গাড়িটি মামলার আলামত। শুধু এটি নয়, এরকম মোট চারটি গাড়ি ব্যবহার হয়। এসব গাড়ি আমার জিম্মায় থাকে।
মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা আলামত ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা যায় কী না এমন প্রশ্ন করা হলে এ প্রতিবেদককে এ বিষয়ে প্রতিবেদন না করার জন্য অনুরোধ করেন। বুধবার (৮ জানুয়ারি) তার অফিসে গিয়ে দেখা করারও অনুরোধ জানান এসআই সেলিম বাহার।
এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুজ্জামানের কার্যালয়ে যাওয়া হলে তার কার্যালয় তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। পরে তাকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২০
এসকে/টিসি