ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘আলী রজার মহাকাব্য বিশ্ব সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ’

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
‘আলী রজার মহাকাব্য বিশ্ব সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ’ সেমিনারে স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।

চট্টগ্রাম: প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন বলেছেন, আলী রজা ওরফে কানু শাহর কাব্যগ্রন্থ ‘জ্ঞানসাগর’ হলো আসলে প্রেমসাগর। তার সাহিত্যে অসাম্প্রদায়িক বাঙালিত্ব ও আধ্যাত্মিক চেতনা পরিস্ফুট। যদি আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ না জন্মাতেন, তাহলে হয়তো বাংলা সাহিত্যের অমর কবি আলী রজার খবরও আমরা পেতাম না।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ‘আঠার শতকের কবি আলী রজা ওরফে কানু শাহ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. সেন বলেন, কানু ফকিরের আধ্যাত্মিক চেতনাপুষ্ট কবিতা ও পারমার্থিক সংগীত আমাদের আকুল করে তোলে।

তার কবিতা আর সংগীতে অলৌকিক সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে। কানু ফকির ছিলেন আধ্যাত্মিক সাধক।
আধ্যাত্মিক সাধকরা ধর্মসাধনার মাধ্যমেই ধর্মেরও ঊর্ধ্বে উঠে যান, তারা প্রকৃতপক্ষে মানুষকে ‘মানুষ’ হওয়ার শিক্ষা দেন।  

আনজুমানে মোত্তাবিয়ানে কানু বাবা (র) এর আয়োজনে মাইজভাণ্ডারী মরমী গোষ্ঠীর সভাপতি মো. সিরাজুল মোস্তফার সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লোকসংগীত গবেষক ও দৈনিক সমকালের সিনিয়র সাব এডিটর নাসির উদ্দিন হায়দার।

বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদীর ফিচার সম্পাদক ও নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী, দৈনিক পূর্বকোণের সাহিত্য সম্পাদক ও কবি এজাজ ইউসুফী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও চ্যানেল আইয়ের ব্যুরো প্রধান চৌধুরী ফরিদ, বাংলা একাডেমির সহকারী পরিচালক ও গবেষক সাইমন জাকারিয়া, পুঁথি গবেষক মুহাম্মদ ইসহাক চৌধুরী, আওলাদে আলী রজা, পীরজাদা হাফেজ মৌলানা নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী। কানু শাহ রচিত সংগীত পরিবেশন করেন আহমেদ নুর আমিরী কাওয়াল।

মূল প্রবন্ধে নাসির উদ্দিন হায়দার বলেন, আলী রজা প্রকাশ কানু শাহ মধ্যযুগের কবি। আরো নির্দিষ্ট করে বললে তিনি ‘আঠার শতকের কবি’। আলী রজার সবচেয়ে আলোচিত কাব্যগ্রন্থ হলো ‘জ্ঞানসাগর’, যা পৃথিবীর অনেক দেশে অনেক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আজ থেকে ১০৩ বছর আগে ১৯১৭ সালে (বাংলা ১৩২৪) আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের সম্পাদনায় কলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে আলী রজার কাব্যগ্রন্থ ‘জ্ঞানসাগর’ প্রকাশিত হয়েছে। আলী রজা ‘পারমার্থিক সংগীতের রচয়িতা’। তিনি জীবনের ৩৬ বছর বন-জঙ্গলে ও নিজ গৃহে আধ্যাত্মিক সাধনায় রত ছিলেন। প্রায় ২০০ বছর ধরে আলী রজার কাব্য ও গান চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশ তথা বিশ্বব্যাপী জ্ঞানপিপাসুদের কাছে অমূল্য রত্ন হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।

নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী বলেন, চট্টগ্রামে পথে-ঘাটে লোকসংগীতের অশেষ রত্নভাণ্ডার ছড়িয়ে আছে। এসব রত্ন অনেকটাই গুপ্তধনস্বরূপ ছিল। এসব গুপ্তধনকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে।

কবি এজাজ ইউসুফী বলেন, আলী রজার যেসব পাণ্ডুলিপি অনাবিষ্কৃত আছে, তা সম্পাদনা করে প্রকাশ করা জরুরি। এতে কানু ফকিরের কাব্য ও সংগীতের সুষমা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যাবে।

সাইমন জাকারিয়া বলেন, সংগীত গবেষণার জন্য চট্টগ্রাম হলো অশেষ সম্ভাবনার ক্ষেত্র। কারণ আলী রজা সংগীত সম্পর্কে যে তত্ত্ব দিয়েছেন তা বিশ্বে বিরল। আলী রজার এই তত্ত্ব নিয়ে কাজ করার সময় এসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।